চায়নাটাউনে স্ত্রী-বাবাকে খুনে ধৃত ছেলেই, জোড়া হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে লুকিয়ে পরকীয়া

বালতি দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন। ছেলের এই কীর্তি দেখে ফেলেন বাবা লি কা সাং।  

Updated By: Aug 24, 2019, 10:15 AM IST
চায়নাটাউনে স্ত্রী-বাবাকে খুনে ধৃত ছেলেই, জোড়া হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে লুকিয়ে পরকীয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন : ট্যাংরায় জোড়া হত্যাকাণ্ডের কিনারা। চায়না টাউনে শ্বশুর ও পুত্রবধূ খুনে আটক করা হল স্বামী লি ওয়ান সাংকে। অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে রোজই বাড়িতে অশান্তি হত। দাম্পত্য কলহের সময়ই মারধরের পর বালতির আঘাতে স্ত্রীকে খুন করে লি। আর ছেলের কীর্তি দেখে ফেলাতেই খুন হন বাবাও। প্রাথমিক তদন্তের পর নিশ্চিত হয় পুলিস। জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে ধৃতও।

ট্যাংরার চায়না টাউনে রহস্যজনকভাবে খুন হন এক মহিলা। মৃতার নাম হাউ মি হা। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মৃতার শ্বশুর লি কা সাংকেও। পরে হাসপাতালে শ্বশুরের মৃত্যু হয়। বালতির গায়ে রক্তের দাগ লেগে থাকায়, প্রাথমিক তদন্তে পর পুলিস নিশ্চিত হয় যে বালতি দিয়েই দুজনকে আঘাত করা হয়েছে। সেই আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে দুজনের। পুলিস সূত্রে খবর, দুজনই রক্তাক্ত অবস্থায় উঠানে পড়ে ছিলেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান পুলিসের শীর্ষ কর্তারা। ঘটনাস্থলে যান গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মাও। শুরু হয় তদন্ত।

তদন্তে জানা যায়, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন লি। এই নিয়ে রোজ বাড়িতে স্ত্রী হাউ মি হায়ের সঙ্গে অশান্তি লেগেই থাকত। কালও অশান্তি বাঁধে। বচসা চলাকালীনই স্ত্রী হাউ মি হা-কে আঘাত করেন লি। বালতি দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন হাউ মি। ছেলের এই কীর্তি দেখে ফেলেন বাবা লি কা সাং। আর তারপর বাবার উপরও চড়াও হন লি। তাঁকেও একইভাবে আঘাত করেন। পুলিস জানিয়েছে, জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে ধৃত।

জেরায় পুলিস জানতে পারে, খুন করে সদর দরজা ভেতর থেকে আটকে পাঁচিল টপকে পালিয়ে গিয়েছিলেন লি। সন্দেহের তির অন্যদিকে ঘোরাতে ঘন্টাখানেক পর ফের বাড়িতেও ফিরে আসেন। ভাবভঙ্গি এমন ছিল, যেন কিছুই জানেন না। দরজা বাইরে থেকে ধাক্কা মেরে না খোলায় প্রতিবেশীদের ডেকে ফের পাঁচিল টপকে সবার সামনে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন। বাড়ির ভিতর স্ত্রী ও বাবার রক্তাক্ত দেহ দেখে স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ার নাটকও করেন। এই পর্যন্ত সবটাই সাজানো চিত্রনাট্য মেনেই এগোয়।

আরও পড়ুন, রেহাই নেই আর, পুরনো গাড়ি ধরে দেবে স্বয়ংক্রিয় নাম্বার প্লেট পরীক্ষার ক্যামেরা

কিন্তু, পাঁচিল ও খুনে ব্যবহৃত বালতির গায়ে রক্ত ও আঙুলের ছাপ, মোবাইল টাওয়ার লোকেশন এবং এলাকার সিসিটিভি দেখে শেষপর্যন্ত খুনের কিনারা করে পুলিস। অভিযুক্তকে শনাক্ত করে। ধৃতের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০২ (খুন), ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) ও ৩২৬ (অস্ত্র দিয়ে মারাত্মক আঘাত) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আজই ধৃতকে শিয়ালদহ কোর্টে তোলা হবে। অন্যদিকে দেহ দুটির ময়নাতদন্তও আজই করা হবে।

.