বলিভিয়ায় মার্কিন আগ্রাসনের প্রতিবাদে কলকাতায় বিক্ষোভ সিপিএমের ছাত্র-যুবদের
এসএফআই-র দাবি, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শিকার ভারতও।
মৌমিতা চক্রবর্তী: বলিভিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের চাপে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন ইভো মোরালেস। তিনি আপাতত রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছেন মেক্সিকোয়। ইভোর বিরুদ্ধে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে সে দেশের নাগরিকদের একাংশ। আর ইভোপন্থীদের দাবি, গোটাটাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র। সেই ইভো মোরালেসের সমর্থনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ধুয়ো তুলে কলকাতা সে দেশের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই।
বুধবার দুপুরে ময়দানে মার্কিন দূতাবাসের প্ল্যাকার্ড, পতাকা হাতে জড়ো হন বাম যুব-ছাত্ররা। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল,'লং লিভ ইভো।' কোথাও আবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ধিক্কার। নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের কুশপুতুল পোড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু তা থেকে বিরত থেকেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন। তবে স্লোগান দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এসএফআই-র দাবি, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শিকার ভারতও। সে দেশে ভারতীয়দের চাকরি কাটছাঁট করা হয়েছে। ভিসা নীতি কঠোর করেছে ট্রাম্প। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের কোলাকুলির সম্পর্ক। ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বাংলায় বামপন্থী রাজনীতির অবস্থা বর্তমানে সঙ্গিন। নয়ের দশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নামে ধুয়ো তুলে বহু আন্দোলন দেখেছে রাজ্য। ফোর জি-র যুগে মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই কতখানি যুক্তিযুক্ত? তাতে কি জনসমর্থন পাওয়া যাবে? বিশেষ করে মূল্যবৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সঙ্কটের মতো সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি ইস্যু যখন হাতের কাছেই রয়েছে।
বলিভিয়ায় অভ্যুত্থান
১৩ বছর ধরে বলিভিয়ার শাসন ক্ষমতায় ছিলেন বামপন্থী ইভো মোরালেস। ২০ অক্টোবর সে দেশের নির্বাচনে ফের জেতেন। ১০ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছেন ইভো। কিন্তু নির্বাচনে ওঠে কারচুপির অভিযোগ। বিরোধীদের দাবি, ভোটগণনা ২৪ ঘণ্টার জন্য স্থগিত রেখেছিলেন মোরালেস। ওই সময়ে রিগিং করেছিলেন। এরপরই গোটা দেশে শুরু হয় বিক্ষোভ। উইনতো শহরের মেয়রের চুল কেটে, মুখে রং মাখিয়ে ঘোরানো হয় শহর। প্রশাসনিক কর্তারাও ইস্তফা দিতে শুরু করেন। পুলিস হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধ। এহেন পরিস্থিতিতে ইভো মোরালেস ঘোষণা করেন, আন্তর্জাতিক সংগঠন নির্বাচনের ফল নিয়ে বিরূপ মত দেওয়ায় সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বলে রাখি, দক্ষিণ আমেরিকায় নির্বাচনে নজরদারি সংস্থা দ্য অর্গানাইজেশন অফ আমেরিকান স্টেটস স্পষ্ট জানিয়েছে, ভোটে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। বিক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে মেক্সিকোয় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন মোরালেস। মেক্সিকোর শাসনে এখন বামেরাই। মোরালেস জানিয়েছেন, দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নেবেন। কিন্তু সেটা অনেকটা কঠিন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তারা গোটা বিষয়টির উপরে নজর রাখছে। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, মোরালেসের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের নেপথ্যে রয়েছে হোয়াইট হাউসের হাত।
আরও পড়ুন- ছাত্র বিক্ষোভের জেরে পিছু হটল কর্তৃপক্ষ, হোটেল ফি কমানো-সহ একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা JNU-র