মানুষের আস্থা রাখতে মমতার সামনে আসল চ্যালেঞ্জ কী
অনেক আশা নিয়ে মানুষ তাঁকে ফের ভোটে জিতিয়েছেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যবাসীকে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্ব এখন মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে। সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে তিনি কতটা সফল হন তার ওপরই এখন নির্ভর করছে বাংলার ভবিষ্যত।
ওয়েব ডেস্ক: অনেক আশা নিয়ে মানুষ তাঁকে ফের ভোটে জিতিয়েছেন। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যবাসীকে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার দায়িত্ব এখন মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে। সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে তিনি কতটা সফল হন তার ওপরই এখন নির্ভর করছে বাংলার ভবিষ্যত।
আরও পড়ুন- শহরের সব খবর
বিধানসভা ভোটের আগে তাঁকে শিল্পতাড়ুয়া তকমা দিতে চেয়েছিল সিপিএম। ভোটের ফল দেখিয়ে দিয়েছে মানুষ তাতে কান দেননি। আর সুপ্রিম কোর্টের রায় বলে দিয়েছে সিঙ্গুরে ভুল করেননি মমতা। এ বার তাঁর সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। লগ্নির খোঁজে মুম্বই, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, ঘুরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার তিনি মিউনিখে। নভেম্বরে যাবেন ব্যাঙ্কক। প্রতি বছর উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলন। বিনিয়োগ টানতে এক জানলা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে নানারকম শিল্প-বান্ধব পদক্ষেপ করছে রাজ্য সরকার। সরকারের দাবি, শিল্প আসছে। বিরোধীরা বলছেন, গত পাঁচ বছরে রাজ্যে বলার মতো অ্যাঙ্কর ইনভেস্টমেন্ট কোথায়! এই পরিস্থিতিতে জোর গলায় শিল্পায়নে সাফল্যের কথা বলতে পারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
শিল্পমহল মনে করছে, সিঙ্গুরে জয়ের পর এ বার কোনওরকম পিছুটান ছাড়াই শিল্পায়নের লক্ষ্যে এগোতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, একইসঙ্গে সিঙ্গুরের রায় খুলে দিয়েছে প্যান্ডোরার বাক্স। কাওয়াখালি, রঘুনাথপুরের মত নানা জায়গায় বাম আমলে অধিগৃহীত জমি ফেরতের দাবি উঠেছে। জমি মালিকরা আপত্তি করায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বর্ধমানের আলিশায় বাতিল হয়ে গেছে মিষ্টি হাব। জোর করে জমি নেওয়া হবে না। এটা মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত অবস্থান। তবে সিঙ্গুরের রায়ের পর এ বার তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, জমি মালিকরা আপত্তি করলে আগে অধিগৃহীত জমিতেও আর কাজ হবে না।
ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে জমি নিয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান কী তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইছে শিল্পমহল। বিনিয়োগকারীরা জমি ব্যাঙ্কের জমিতে সন্তুষ্ট না হলে তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে তাও সরকারকে ভেবে রাখতে হবে।
এ রাজ্যে শিল্পায়নের পথে সিন্ডিকেট-তোলাবাজি বড় বাধা, এমন অভিযোগ উঠেছে বারবার। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর এ সব বন্ধে কড়া পদক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে অসুখ এখনও পুরোটা সারেনি। বুধবারই জঙ্গিপুরে সিমেন্ট কারখানার লরিতে তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির খবর মিলেছে। শিল্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পরিকাঠামো উন্নয়ন। রাজ্যে এখন বিদ্যুতের সমস্যা নেই। রাস্তাঘাট আগের চেয়ে অনেক ভালো। সাগরে তৈরি হচ্ছে নতুন বন্দর। সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে কোনও সংশয় নেই। ফলে, লগ্নির যে প্রাথমিক শর্ত তার অনেকগুলিই রয়েছে এ রাজ্যে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবার মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়ে তৃণমূলকে বড় জয় উপহার দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সেই ভোটারদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করার দায়বদ্ধতা মুখ্যমন্ত্রীর কাঁধে। আর কর্মসংস্থানের জন্য শিল্প ছাড়া গতি নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চ্যালেঞ্জ কী ভাবে সামলান সেদিকেই তাকিয়েই রাজ্যবাসী।