পাঁচটি কেন্দ্রে পুনরায় পরীক্ষা হবে, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

এসএসসি পরীক্ষায় গণ্ডগোলোর জেরে বিক্ষোভ অব্যাহত রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। দুপুর আড়াইটে বেজে গেলেও পরীক্ষা শুরু হল না রসুলপুর ভিএম স্কুলে। এদিকে অন্যান্য স্কুলে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছ ততক্ষণে। ফলে ওই একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন পরীক্ষার্থীরা।

Updated By: Jul 29, 2012, 03:28 PM IST

এসএসসি পরীক্ষায় দিনভর চরম বিভ্রাটের পর ৫টি কেন্দ্রে পূনর্বার পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছনোর কারণে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারেনি, শুধুমাত্র সেই কেন্দ্রগুলিতেই পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। রমজান মাসের পরই পরীক্ষার দিন ফেলা হবে। ২ দিন মধ্যেই পরীক্ষার দিন ঘোষণা করা হবে বলেও এদিন জানান শিক্ষামন্ত্রী। এর কিছুক্ষণ আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল জানান, নর্দান রিজিয়নের বাংলা পাস ও উর্দু পাসের পরীক্ষা ফের নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। পরীক্ষার দিন ঠিক করে পরীক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। ইস্টার্ন জোনের কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে সমস্যা দেখা দিয়েছিল, সেক্ষেত্রে রিপোর্ট পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান। তাঁর বক্তব্য ছিল, কোথাও স্থানীয় ভিত্তিতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। সেই প্ররোচনায় পা দিয়ে যারা পরীক্ষা দেননি তাঁদের দায়িত্ব নেবে না কর্তৃপক্ষ। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসএসসি-র চেয়ারম্যানের সাংবাদিক বৈঠকের পর তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। যেই পাঁচটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে পারেননি পরীক্ষার্থীরা, সেই পাঁচটি কেন্দ্রে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য এসএসসি চেয়ারম্যানের কাছে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন বলেও জানান তিনি।

এসএসসি পরীক্ষায় গণ্ডগোলোর জেরে রাজ্যজুড়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থির সৃষ্টি হয়। দুপুর আড়াইটৈ বেজে গেলেও পরীক্ষা শুরু হয়নি রসুলপুর ভিএম স্কুলে। এদিকে অন্যান্য স্কুলে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছ ততক্ষণে। ফলে ওই একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদেরকে পরীক্ষায় বসের জন্য চাপ দিতে থাকে এসএসসি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র না পৌঁছনোয় পরীক্ষায় বসতে পারলেন না মালদহ মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ৪৫০ জন পরীক্ষার্থী। বর্ধমানের রায়পুর কাশিয়ারা হাইস্কুলে প্রশ্নপত্র না পৌঁছনোয় পৌঁছনোর প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান পরীক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র‌্যাফ নামাতে হয় কেন্দ্রে। পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায় হাওড়া জেলার একটি পরাক্ষা কেন্দ্রেও। এসএসসি পরীক্ষা ঘিরে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে সকাল থেকেই। সকালে লেকটাউন কলেজ সহ বেশ কিছু সেন্টারে পরীক্ষা শুরুর আগে বিভ্রান্তি ছড়ায়। অভিযোগ, অ্যাডমিট কার্ড থাকা সত্ত্বেও কয়েকজন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এদিকে পরীক্ষাকেন্দ্রের দাবি, ওইসব পরীক্ষার্থীদের নাম তাদের কাছে পাঠানো হয়নি। শেষে ২৪ ঘণ্টার খবরের জেরে নড়েচড়ে বসে এসএসসি কর্তৃপক্ষ। কমিশনের তরফে ফোন করে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে বলে দেওয়া হয় বৈধ অ্যাডমিট কার্ড থাকলেই যেন পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়।
নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে পরীক্ষা শুরু হয় বাগনানের আদর্শ বিদ্যালয়ে। ফলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। ডাউনলোড করা ফর্ম নিয়ে আসায় আলিপুরদুয়ার কলেজে প্রায় ১০০ জন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় আলিপুরদুয়ার থানার আইসি-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিসবাহিনী কলেজে আসে। পরে এসএসসি কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১০ মিনিট পর পরীক্ষা শুরু হয়। রাজ্যের বিভিন্ন কেন্দ্রে বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা শুরু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে। অন্যদিকে কলকাতার শ্যামবাজার এ ভি স্কুল পরীক্ষা নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হলেও স্কুলের সামনেই মঞ্চ বেঁধে চলল অনুষ্ঠান। পরীক্ষা চলাকালীন তারস্বরে মাইকের আওয়াজে ভেসে আসায় স্বাভাবিকভাবেই অসুবিধায় পড়েন পরীক্ষার্থীরা। শেষপর্যন্ত শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগ জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সবথেকে আশর্যের বিষয়ে যে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বাজানো হল মাইক, সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা তারক ব্যানার্জি।

.