পুরভোটের দায়িত্ব ছাড়লেন রত্না, তৃণমূলে তাহলে ফিরছেন শোভন? জোর জল্পনা
"এখন শোভন চান, রত্না থাকলে তিনি দল করবেন না।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : দায়িত্ব ছাড়লেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। আর তার সঙ্গেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা আরও জোরালো হল। পুরভোটে বেহালা পূর্বের কো-অর্ডিনেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। সেই দায়িত্বে ছেড়ে দিলেন তিনি। দায়িত্ব ছাড়ার কারণ হিসেবে কাউন্সিলরদের অসহযোগিতাকে উল্লেখ করেছেন রত্না।
রত্না চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন, বেহালা পূর্বের কাউন্সিলরদের থেকে তিনি সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েই দায়িত্ব ছেড়েছেন তিনি। যদিও কানাঘুষো বলছে, শোভনের 'মান' রাখতেই রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে রত্নার কথায়, "আমি তৃণমূলের কর্মী। আমি ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মানুষের পাশে থাকব। আমার বেহালা পূর্বের দায়িত্ব ছাড়ার সাথে বৈশাখী ও মুখ্যমন্ত্রীর মিটিংয়ের কোনও সম্পর্ক নেই।" উল্লেখ্য, এদিন 'বাংলা গর্ব মমতা' কর্মসূচিতে বেহালা পূর্বে 'জলযোগ যোগাযোগ' অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু সকালে সেই অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়। তারপরই সামনে আসে পুরভোটের দায়িত্ব থেকে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সরে দাঁড়ানোর কথা। আর এরসঙ্গেই জোরালো হয়েছে তৃণমূলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ফেরার জল্পনা।
প্রসঙ্গত, গত বছর অগাস্ট মাসে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যদিও পদ্ম শিবিরে তাঁর মধুচন্দ্রিমা পর্ব শেষ হতে সময় লাগেনি। গেরুয়া শিবিরে সঙ্গে 'সুসম্পর্ক' অচিরেই মিটে যায়। বিজেপি থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত পর্যন্ত নেন শোভন। তবে মুকুল রায়ের হস্তক্ষেপে শেষপর্যন্ত সেইসময় ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেন শোভনবাবু। তাঁর তৃণমূলে ফেরার সম্ভাবনা নতুন করে উসকে ওঠে গত বছর ভাইফোঁটার দিন। ভাইফোঁটা নিতে সোজা কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। তৃণমূল নেত্রীর হাত থেকে ফোঁটা নেন তিনি। অন্যদিকে বিজেপির বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে বারংবার তাঁর অনুপস্থিতি সামনে আসে। তাতে আরও উসকে ওঠে জল্পনা।
আরও পড়ুন, রাজারহাটে তৈরি হচ্ছে ২টি সেন্টার, জেলায় জেলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড : মুখ্যমন্ত্রী
কিন্তু পুরভোটে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে তৃণমূল বেহালার মুখ করতেই শোভন চট্টোপাধ্যায় ক্ষুব্ধ হন। সূত্রের খবর, তারপরই নাকি বিজেপিতে নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠেন শোভন। কথা বলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গিয়ে সাক্ষাৎ করতে দেখা যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরপরই তৃণমূল মহাসচিবকে বলতে শোনা যায়, "শোভনকে নিয়ে তো বার বারই বলেছি, ওর তৃণমূলে থাকা উচিত। এখন শোভন চান, রত্না থাকলে তিনি দল করবেন না। কিন্তু এটা তো তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। রাজনীতিটা রাজনীতির মতো করুক। ব্যক্তিগত বিষয়টা অন্য জায়গায় থাকুক। ও আসুক না কথা বলুক। কথা-ই তো বলে না। গত ২ আড়াই বছর ধরে চুপচাপ বসে রয়েছে। এভাবে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় শোভনকে দেখতে ভালো লাগে না। দল তো বলতে পারে ও নিজের কথা নিজে কেন বলছে না? অন্যকে দিয়ে বলাচ্ছে। ও মমতার সঙ্গে বসুক।"