লোকসানের চাপে গায়েব হচ্ছে বাস, আতান্তরে পরিবহণ ব্যবস্থা

রাস্তা আছে, যাত্রী আছে, গন্তব্যে পৌঁছনোর তাড়া আছে, বাস নেই! কলকাতা ও দুই চব্বিশ পরগনার হালফিলের করুণ পরিবহণচিত্র ক্রমশ বেআব্রু হচ্ছে। সরকারি, বেসরকারি, কোনও বাসই মিলছে না। বিলুপ্ত হয়ে গেছে বেশ কিছু রুট।

Updated By: Dec 20, 2011, 06:34 PM IST

রাস্তা আছে, যাত্রী আছে, গন্তব্যে পৌঁছনোর তাড়া আছে, বাস নেই! কলকাতা ও দুই চব্বিশ পরগনার হালফিলের করুণ পরিবহণচিত্র ক্রমশ বেআব্রু হচ্ছে। সরকারি, বেসরকারি, কোনও বাসই মিলছে না। বিলুপ্ত হয়ে গেছে বেশ কিছু রুট।
শহর ও শহরতলী মিলিয়ে এই মুহূর্তে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ৮৫০০। জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের নতুন বাস ৬০০। ২০১০-এর ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১১-র ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিজেলের দাম বেড়েছে ৬ বার। দূষণমুক্ত সুপার ডিজেলের দাম ৪৯ টাকা। একটি বাস চালাতে প্রতিদিন ডিজেল লাগে ৬৫ লিটার। অর্থাত্‍ দৈনিক তেলের খরচ ৩১৮৫ টাকা। ৩০ টাকা হিসেবে ৬টি চাকার ভাড়া ১৫০ টাকা। খুচরো পয়সা নিতে হয় ২০০ টাকা বাট্টা দিয়ে। পুলিসের জরিমানা বাবদ খরচ দৈনিক গড়ে ১০০ টাকা। মবিল খরচ দৈনিক ৬০ টাকা। সবমিলিয়ে একটি বাস রাস্তায় নামালে মালিকের মোট ব্যায় ৩৬৯৫ টাকা। আর টিকিট বেচে তার গড় আয় দৈনিক ৪২৫০ টাকা।

কাগজে কলমে মুনাফার পরিমাণ ৫৫৫ টাকা হলেও কার্যক্ষেত্রে মালিকদের পকেটে কিছুই আসে না। কারণ, মোট টিকিট বিক্রির টাকা অর্থাত্‍ ৪২৫০ টাকার ১২ শতাংশ কমিশন দিতে হয় চালককে। দুই কন্ডাক্টরকে দিতে হয় ৬ শতাংশ করে আরও ১২ শতাংশ। এর উপর রয়েছে, বাসের রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির খরচ। মালিকদের দাবি, এই হিসাবে প্রতি ১০০ পয়সা আয় করতে তাদের খরচ করতে হয় ১৯৩ পয়সা। তাই লোকসানের বোঝা বইতে না পেরে বিভিন্ন রুট থেকে মালিকরা বাস তুলে নিচ্ছেন বলে দাবি করেছেন বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই শহরের রাস্তায় ৩০ শতাংশ কম বেসরকারি বাস চলছে। বিলুপ্ত রুটগুলির মধ্যে রয়েছে হাসনাবাদ-শ্যামবাজার ৭৯, ইটিন্ডাঘাট-শ্যামবাজার ৭৯সি, বসিরহাট-হাবরা ৮২, সরসুনা-ভবানীপুর-ধর্মতলা ১৮ এবং ধর্মতলা-কাকদ্বীপ ৮৯ নম্বর রুট। ভাড়া না বাড়লে বাস শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও মালিকদের দাবি।

.