ঋতব্রত সাসপেন্ড হতেই শতরূপকে পার্টির 'মুখ' করতে ফেসবুকে তোরজোড়

'সিপিএম-এ লবিটাই সব', যারা কিঞ্চিৎ বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকেছেন বা ভীষণভাবে জড়িয়ে আছেন তাদের কাছে একথা দিনের আলোর থেকেও বড় সত্য। কমিউনিস্ট পার্টির ধ্রুপদী ভাবনায় 'ইনার পার্টি স্ট্রাগলে'র বিশেষ উল্লেখও রয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি ভাগের ক্ষেত্রেও তো ছিল 'ইনার পার্টি স্ট্রাগল'। সংশোধনবাদের পথ নাকি বন্দুকের নলে রাষ্ট্র শাসন? তবে সেই 'ইনার পার্টি স্ট্রাগল' আজ কতটা প্রাসঙ্গিক রয়েছে 'ক্ষয়িষ্ণু রাজ্য সিপিএমে' তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, 'লবির লড়াই' প্রশ্নাতীত। আর এই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে...। বড় থেকে ছোট, পলিটব্যুরো থেকে একেবারে ব্রাঞ্চ কমিটি, সিপিএমে 'সবার ওপরে লবি সত্য, তাহার ওপরে নাই'। অনেক 'পার্টি অন্ত প্রাণে'র মতে এই ট্র্যাডিশনেই রাজ্যে অস্ত গেছে লাল সূর্য। এমনকি এই 'লবির লড়াই' থেকে বাদ যায়নি ভারতের ছাত্র ফেডারেশন, যুব ফেডারেশনের মত বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো। এবার সেই 'লবির লড়াই' সাইবার ওয়ার্ল্ডে। একদিকে তরুণ সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি, অন্যদিকে তরুণ তুর্কি শতরূপ ঘোষ। লবিতে একজন স্বয়ং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের 'প্রিয়পাত্র' তথা যার ব্যাকবোন রাজ্যসম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব। আর অন্য জন, দলে পরিচিত সিপিএম রাজ্যসম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের ঘরের ছেলে হিসেবেই। প্রথম জন সাসপেন্ডেড সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি। অন্যজন ছাত্র-যুব নেতা শতরূপ ঘোষ। এই দুই 'প্রাক্তন' এসএফআই নেতাই এখন সাইবার লবির হট কেক। ঋতব্রত সাসপেন্ড হতেই ফেসবুকে শতরূপের অনুরাগীরা দাবি তুলেছেন, "শতরূপ কে অবিলম্বে পার্টির একমাত্র মুখ হিসাবে প্রজেক্ট করা দরকার।" আরও পড়ুন- ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একাধিক অভিযোগ, সাসপেন্ড ঋত

Updated By: Jun 6, 2017, 07:57 PM IST
 ঋতব্রত সাসপেন্ড হতেই শতরূপকে পার্টির 'মুখ' করতে ফেসবুকে তোরজোড়

কলকাতা: 'সিপিএম-এ লবিটাই সব', যারা কিঞ্চিৎ বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকেছেন বা ভীষণভাবে জড়িয়ে আছেন তাদের কাছে একথা দিনের আলোর থেকেও বড় সত্য। কমিউনিস্ট পার্টির ধ্রুপদী ভাবনায় 'ইনার পার্টি স্ট্রাগলে'র বিশেষ উল্লেখও রয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি ভাগের ক্ষেত্রেও তো ছিল 'ইনার পার্টি স্ট্রাগল'। সংশোধনবাদের পথ নাকি বন্দুকের নলে রাষ্ট্র শাসন? তবে সেই 'ইনার পার্টি স্ট্রাগল' আজ কতটা প্রাসঙ্গিক রয়েছে 'ক্ষয়িষ্ণু রাজ্য সিপিএমে' তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, 'লবির লড়াই' প্রশ্নাতীত। আর এই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে...। বড় থেকে ছোট, পলিটব্যুরো থেকে একেবারে ব্রাঞ্চ কমিটি, সিপিএমে 'সবার ওপরে লবি সত্য, তাহার ওপরে নাই'। অনেক 'পার্টি অন্ত প্রাণে'র মতে এই ট্র্যাডিশনেই রাজ্যে অস্ত গেছে লাল সূর্য। এমনকি এই 'লবির লড়াই' থেকে বাদ যায়নি ভারতের ছাত্র ফেডারেশন, যুব ফেডারেশনের মত বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলো। এবার সেই 'লবির লড়াই' সাইবার ওয়ার্ল্ডে। একদিকে তরুণ সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি, অন্যদিকে তরুণ তুর্কি শতরূপ ঘোষ। লবিতে একজন স্বয়ং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের 'প্রিয়পাত্র' তথা যার ব্যাকবোন রাজ্যসম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব। আর অন্য জন, দলে পরিচিত সিপিএম রাজ্যসম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের ঘরের ছেলে হিসেবেই। প্রথম জন সাসপেন্ডেড সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জি। অন্যজন ছাত্র-যুব নেতা শতরূপ ঘোষ। এই দুই 'প্রাক্তন' এসএফআই নেতাই এখন সাইবার লবির হট কেক। ঋতব্রত সাসপেন্ড হতেই ফেসবুকে শতরূপের অনুরাগীরা দাবি তুলেছেন, "শতরূপ কে অবিলম্বে পার্টির একমাত্র মুখ হিসাবে প্রজেক্ট করা দরকার।" আরও পড়ুন- ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে একাধিক অভিযোগ, সাসপেন্ড ঋত

 

ঘটনার সূত্রপাত হয় এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সম্মেলনে। ঋতব্রত-শতরূপ দুজনের মধ্যে 'মুখ দেখাদেখি বন্ধ' তখন থেকেই। এসএফআই থেকে 'ঋত যুগ' শেষ হওয়ার পর অনেকেই মনে করেছিলেন এরপর এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় নেতা হতে চলেছেন এসএফআই-এর যুগ্ম-সম্পাদক পদে থাকা ছাত্র নেতা শতরূপই। কিন্তু সেটা হয়নি। এরপরই নাকি দূরত্ব বাড়ে দুই নেতার মধ্যে, এমনই মত এসএফআইয়ের অন্দরের। এবার পার্টিতে ঋতব্রত কিছুটা কোণঠাসা হতেই নাকি শতরূপ ঘোষকে প্রোজেক্ট করতে চাইছে রাজ্য নেতৃত্বেরই একাংশ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেছে ঋতব্রত ইস্যুতে যেভাবে তাঁকে 'প্রটেক্ট করতে' মাঠে নেমেছে গৌতম দেব, সুজন চক্রবর্তী লবি, সেখানে শতরূপকে সামনে রেখেই পাল্টা ঘুঁটি সাজাচ্ছে পার্টিরই অন্য লবি।        

সাংসদ ঋতব্রত ব্যানার্জির সাসপেনশন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে প্রথমে কিছু বলতে চাননি শতরূপ ঘোষ। পরে অবশ্য ২৪ ঘন্টা ডটকমকে বলেন, "প্রথমত আমি রাজ্য কমিটির সদস্য নই, রাজ্য কমিটি কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে বিষয়ে আমার কোনও কিছু বলার নেই।" আরও একধাপ এগিয়ে শতরূপ এও বলেন, "রাজ্য সম্পাদক (সূর্যকান্ত মিশ্র) কি সাসপেনশনের বিষয়ে কিছু বলেছেন, আমার জানা নেই"। এরপর যখন তাঁকে নিয়ে প্রচার হওয়া ফেসবুক পোস্টের (স্পর্ধার নাম শতরূপ) বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তিনি বলেন, "এসমস্ত আষাঢ়ে গল্প। কেউ যদি ফেসবুকে এগুলো প্রচার করে তাহলে সেটা একান্তই সেই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মত। পার্টি এমন কোনও কথা কোনও দিনই বলেনি।" অর্থাত্, শতরূপের কথায় ধরা পড়েছে পোর খাওয়া ছাত্রনেতার প্রত্যাশিত কণ্ঠস্বর। তবু, ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমে ক্রমশ 'ভাইরাল' হতে থাকা পোস্ট কিন্তু বলছে অন্যকথা।       

.