'আর বাঁচতে চাই না, লকডাউনে ৪ মাস দেখা হয়নি স্বামীর সঙ্গে', হস্টেলে আত্মঘাতী জুনিয়র ডাক্তার
সকালে সোয়া ৯টা নাগাদ বন্ধুদের ফোন করেন। বছর ছাব্বিশের জুনিয়র ডাক্তার বন্ধুদের তখন জানান যে কয়েকটা ওষুধ খেয়ে তারপর কলেজে যাবেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হল এক জুনিয়র চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ। আত্মঘাতী ওই চিকিৎসকের নাম মানসী মণ্ডল। হস্টেলের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। দরজা বন্ধ করে ঘরের ভিতর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পিজিটি ছাত্রী। জানা গিয়েছে, মানসী মণ্ডল নামে ওই ছাত্রী মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১টা নাগাদ বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে আত্মঘাতী জুনিয়র চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে এন্টালি থানার পুলিস। ঘরের ভিতর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে এন্টালি থানার পুলিস। পুলিস সূত্রে খবর, সেই সুইসাইড নোটে মানসিক অবসাদের কথা লেখা রয়েছে। সুইসাইড নোটে লেখা, জীবনের প্রতি আসক্তি হারিয়ে গিয়েছিল। স্বামী বেঙালুরুতে থাকেন। মার্চ থেকে দেখা হয়নি। একথা বন্ধু বা রুমমেটদের একাধিকবার মানসী জানিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, এদিন সকালে সোয়া ৯টা নাগাদ বন্ধুদের ফোন করেন মানসী। বছর ছাব্বিশের জুনিয়র ডাক্তার বন্ধুদের তখন জানান যে তিনি এখনই কলেজে যাচ্ছেন না। কয়েকটা ওষুধ খেয়ে তারপর যাবেন। কিন্তু তারপর আর তাঁকে কলেজে আসতে না দেখে, শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। হস্টেলের ঘরে খোঁজ করতে এসে ঘরের দরজা খুলতে পারেন না লেডিস হস্টেলের সুপার। বিষয়টি তিনি তখনই কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানান। সেইসময় এই ডেন্টাল কলেজকে করোনা হাসপাতাল হিসেবে তৈরির জন্য বৈঠক চলছিল।
সুপারের কাছ থেকে খবর পেয়েই বৈঠক ছেড়ে সকলে ছোটেন লেডিস হস্টেলে। খবর দেওয়া হয় এন্টালি থানায়। খবর পেয়ে হস্টেল চলে আসে পুলিসও। শেষে ডাকাডাকিতেও সাড়া না মেলায়, পুলিস দরজা ভাঙতেই মানসী মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গিয়েছে পুলিস। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে,
পুরুলিয়ার বাসিন্দা মানসী মণ্ডল নর্থ বেঙ্গল ডেন্টাল কলেজের ছাত্রী ছিলেন। পরে তিনি ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারির জন্য স্নাতকোত্তর কোর্স করতে আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজে সুযোগ পান । এখানেই পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি অর্থাৎ পিজিটি হিসেবে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন।
আরও পড়ুন, লকডাউনে ভিনরাজ্য ফেরত যাত্রীদের সরকারি বাসের ব্যবস্থা, পরিষেবা দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ