Panchayat Election 2023: তুঙ্গে সংঘাত! রাজীবা সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত রাজ্যপালের, কী হবে এবার?
সবথেকে বড় যে প্রশ্ন তৈরি হয়ে রয়েছে যে জয়েনিং লেটার যখন অ্যাকসেপ্ট হচ্ছে না সেক্ষেত্রে পদে তিনি আছেন কিনা সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন। অর্থাৎ এইক্ষেত্রে রাজ্যপাল যে একটা অর্ডার দিয়েছিলেন যে রাজীবা সিনহা কে রাজ্যর ইলেকশন কমিশনার করা হচ্ছে। তিনি নিয়োগকর্তা। এখন তিনি তাঁর জয়েনিং লেটার অ্যাকসেপ্ট করছেন না।
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: তুঙ্গে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। এরই মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে এলেন নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহা। আর এখানেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তিনি কী তাহলে ইস্তফা দিচ্ছেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্য, তাঁর কাছে এমন কোনও খবর নেই।
ইস্তফা নিয়ে মন্তব্য এড়িয়ে রাজীবা সিনহা বলেছেন, ‘আমার কাছে কোনও খবর নেই’। এখানেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই যে একটি সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি হয়েছে এরপরে কী হবে?
সাধারণভাবে যে বিষয়টি এই মুহূর্তে দাঁড়াচ্ছে তা হল একজন মানুষ কাজে যোগ দিচ্ছেন, এবং তারপরে তিনি ছেড়ে দিতে চাইছেন সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ইস্তফার প্রশ্ন তৈরি হয়। কিন্তু রাজীবা সিনহা যেটা বলছেন তাতে সম্পূর্ণ বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলছেন যে তাঁর কাছে এমন কোনও খবর নেই।
সবথেকে বড় যে প্রশ্ন তৈরি হয়ে রয়েছে যে জয়েনিং লেটার যখন অ্যাকসেপ্ট হচ্ছে না সেক্ষেত্রে পদে তিনি আছেন কিনা সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন। অর্থাৎ এইক্ষেত্রে রাজ্যপাল যে একটা অর্ডার দিয়েছিলেন যে রাজীবা সিনহাকে রাজ্যর ইলেকশন কমিশনার করা হচ্ছে। তিনি নিয়োগকর্তা। এখন তিনি তাঁর জয়েনিং লেটার অ্যাকসেপ্ট করছেন না।
সেইক্ষেত্রে দুটি প্রশ্ন সবথেকে বড়। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে নিয়োগকর্তা রাজ্যপাল একটি অর্ডার দিচ্ছেন একজনকে নিয়োগ করার জন্য। আবার তিনি কিছুদিন পরে তাঁর জয়েনিং লেটার তিনি নিজেই অ্যাকসেপ্ট করছেন না। সেটা তিনি করতে পারেন কিনা এটা একটা প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: School Student Death: কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ! প্রার্থনা চলাকালীন হঠাৎ সংজ্ঞাহীন, মৃত্যু ছাত্রীর
দ্বিতীয় যে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে তা হল যে এই ক্ষেত্রে জয়েনিং লেটার অ্যাকসেপ্ট না করা মানে ওই ব্যক্তি যার নামে অর্ডার বেরিয়েছিল সেই ব্যক্তি যে ওই পদে রয়েছেন তাঁর নিয়োগকর্তা সেটা মানছেন না। তাহলে তিনি কী সেই পদে আদৌ রয়েছেন?
এই দুটো প্রশ্ন এই মুহূর্তে সবথেকে বড়। যিনি নিয়োগ করলেন তিনি জয়েনিং লেটার ফেরত পাঠিয়ে দিলেন। আবার প্রশ্ন হল জয়েনিং লেটার ফেরত পাঠিয়ে দিলে ওই নিযুক্ত ব্যক্তি কি ওই পদে থাকছেন?
যদি জয়েনিং লেটার অ্যাকসেপ্ট না করেন তাহলে তিনি বার নতুন কাউকে নিয়োগ করতে পারেন। তাঁর সেই ক্ষমতা রয়েছে এবং নতুন কোনও ব্যক্তি দায়িত্ব নেবেন। রাজ্যের তরফে আইনের পথে যাওয়া হলে পুরটাই আদালতের পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করবে।
অন্যদিকে জয়েনিং লেটার অ্যাকসেপ্ট না হওয়ায় তাঁর নিয়গের যদি বৈধতা না থাকে তাহলে তাঁর নেওয়া সব সিদ্ধান্ত কিন্তু কোনও আইনি বৈধতা থাকবে না। ফলত সার্বিকভাবে একটি জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: Underwater Metro In Kolkata: অচিরেই কল্লোলিনী কলকাতায় চালু হচ্ছে ভারতের প্রথম আন্ডারওয়াটার মেট্রো...
এই প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, ‘১৯৫৪-এর ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন কমিশন অ্যাক্টের তিনের ধারায় বলা আছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। নিয়োগ হবে সংবিধানের ২৪৩-এর ক ধারায়। এটা সাংবিধানিক নিয়োগ। বলা আছে রাজ্যপাল কিছু রুল করতে পারেন। রাজ্যপাল গ্রহন না করে ফেরত পাঠালেন মানে তার নিয়োগ প্রক্রিয়াই সম্পূর্ণ হল না। যখন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নয় তখন অপসারণ কীভাবে? এর অর্থ অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছেন কিন্তু জয়েনিং গ্রহন করেননি। একবার নিয়োগ সম্পূর্ণ হলে অপসারণ এত সহজে হয়না, ইমপিচমেন্ট করতে হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াই এখন প্রশ্নচিহ্নের মুখে। ঠিকভাবে নিয়োগ হলে তারপর সরানোর প্রশ্ন’।
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়োগের ক্ষমতা রাজ্যপালেরই। সরকার কতগুলো নাম সাজেস্ট করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে এটা একটা সংকট তৈরি হল। রাজ্যপাল, রাজ্য বা কমিশনার আইনি পরামর্শ নিতে পারেন। ওনারা এখন কী করবেন ওনারা ঠিক করবেন’।
বিচারপতি গাঙ্গুলি আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় সংকট বা অনিশ্চয়তা তৈরি হল। সংকট নিরসনে কী করবেন রাজ্য-রাজ্যপাল ঠিক করবেন। এই ধরণের ঘটনা আগে ঘটেনি। আমি ঠিক জানিনা কী হবে, হয়ত নির্বাচন পিছিয়ে যেতে পারে’।