রাজ্যে মদ নিষিদ্ধের দাবিতে সুচারু কৌশল বিরোধীদের
বিধানসভায় মদ বন্ধের দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই দাবির পিছনে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়েব ডেস্ক : বিধানসভায় মদ বন্ধের দাবিতে সরব বিরোধীরা। এই দাবির পিছনে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নীতীশ কুমারের হাত ধরে শুষ্ক রাজ্যের তালিকায় নাম তুলেছে বিহার। এ রাজ্যে বিরোধীদের দাবি, সেই পথে চলুন মমতাও। নাগাল্যান্ড, মণিপুরের কয়েকটি জেলা, বিহার, গুজরাত ও লাক্ষাদ্বীপে এখন মদ বিক্রি নিষিদ্ধ। কেরলেও শুরু হয়েছে মদ বন্ধের প্রক্রিয়া। মিজোরাম, অবিভক্ত অন্ধপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ু অতীতে মদ বিক্রি বন্ধ করলেও পরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়।
মদ বিক্রির পক্ষে-বিপক্ষে, দু-দিকেই রয়েছে জোরালো যুক্তি। একপক্ষের মত, মদ্যপান গরিব পরিবারে অশান্তি ডেকে আনে। নেশা বাড়িয়ে দেয় অপরাধের প্রবণতা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্যের ভিত্তিতে সংগঠিত সমীক্ষা বলছে, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সত্তর থেকে পঁচাত্তর শতাংশের জন্যই দায়ী মদ্যপান। মদ্যপানের জন্য দেশে প্রতি ছিয়ানব্বই মিনিটে একজনের মৃত্যু হয়। অন্যপক্ষের আবার দাবি, মদ নিষিদ্ধ করলে আবগারি শুল্ক হারিয়ে রাজ্যের আয় কমবে। ব্যাহত হবে উন্নয়ন। মদ বিক্রি বেআইনি হলে বাড়বে চোলাই মদের রমরমা। তাতে একদিকে সরকারের কর আদায় কমবে অন্যদিকে বাড়বে মানুষের জীবনের ঝুঁকি।
বিধানসভার বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রামজ মুখ্যমন্ত্রীকে বিহার মডেল ফলো করার কথা বলেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসও।মদ বিক্রি বন্ধের দাবিতে সরস মন্তব্যে বিধানসভায় সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। বিরোধী দলনেতার এই মন্তব্যেই পরিষ্কার, দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে মদের সরকারের মতো শব্দবন্ধে শাসকদলকে আক্রমণের রাস্তা খোলা রাখছে তারা।
মদ কেনা-বেচা, মদের ওপর নিয়ন্ত্রণ, উত্পাদন, মদ্যপানের ন্যূনতম বয়স - সব রাজ্যে এক নয়। মদ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সংবিধানের রাজ্য তালিকায় রেখে রাজ্যগুলিকেই তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। তাই, বিহারকে অন্ধভাবে অনুসরণ করতে হবে, এমন যুক্তি নেই। বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মদ্যপানের বিরুদ্ধে রয়েছেন ভোটারদের একটা অংশ।রাজনৈতিক মহল বলছে, মদ বন্ধের দাবির পিছনে রয়েছে বিরোধীদের দ্বিমুখী কৌশল। এক, রাজ্য সরকার মদ নিষিদ্ধ না করলে শাসকদলকে আক্রমণের রাস্তা খোলা থাকবে। দুই, সরকার মদের ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করলে তার কৃতিত্ব দাবি করতে পারবেন বিরোধীরা।