একটি প্রাণ দিয়ে প্রাণ শক্তি ফিরে পেল চার জন!
কে বলে, মৃত্যুতে সব শেষ! অন্তত শোভনা সরকারের জন্য তো নয়ই। তাঁর জীবন, নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিল আরও চার জনকে। বেনজির অঙ্গদানের সাক্ষী হল কলকাতা। আজও অমর। ঠিক যে অমরত্বের পথের পথিক শোভনা সরকার। মৃত্যুর পরও যে ধন তিনি দিয়ে গেলেন, তার তুলনা করতে বসে, কার সাধ্যি!
ওয়েব ডেস্ক: কে বলে, মৃত্যুতে সব শেষ! অন্তত শোভনা সরকারের জন্য তো নয়ই। তাঁর জীবন, নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিল আরও চার জনকে। বেনজির অঙ্গদানের সাক্ষী হল কলকাতা। আজও অমর। ঠিক যে অমরত্বের পথের পথিক শোভনা সরকার। মৃত্যুর পরও যে ধন তিনি দিয়ে গেলেন, তার তুলনা করতে বসে, কার সাধ্যি!
একজনের জীবন দিয়েই, নতুন জীবন পাচ্ছেন চারজন। ভর্তির পর থেকেই ধীরে ধীরে অবনতি হচ্ছিল অবস্থার। তেইশে জুন। ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, ব্রেন ডেড-এর পথেই যাচ্ছেন শোভনাদেবী। কিন্তু তখনও সচল তাঁর সব অঙ্গ।
হার্টের ধক ধক.. চলছিল। কিডনি, লিভার.. সবই সচল। ভেন্টিলেশনে শুয়ে যেন এক অনন্ত প্রতীক্ষা। ওদিকে তখন অন্য লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে সরকার পরিবার। মরণোত্তর অঙ্গদানের ইচ্ছা ছিল শোভনা দেবীর। তাঁর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়েই শোভনা সরকারের দুটি কিডনি এবং দুটি চোখ দানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।
২৩ থেকে ২৭। অঙ্গদানের ইচ্ছে নিয়ে এ'দরজা থেকে ও'দরজায় ঘোরেন শোভনাদেবীর ছেলে প্রসেনজিত্। মন্ত্রী-সান্ত্রী কেউ বাদ যাননি। ২৭ মে-র রাত। কলকাতা নিজেকে চিনল নতুন করে। দেখল, কীভাবে একটি প্রাণ দিয়ে, প্রাণ শক্তি ফিরে পায় চার জন। বছর ৩০র কেয়া রায় পেলেন শোভনাদেবীর একটি কিডনি।
মধ্য কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে হয় প্রতিস্থাপন। দ্বিতীয় কিডনি প্রতিস্থাপন হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। গ্রহীতা বছর তিরিশেরই যুবক ফিরোজ। শোভনা সরকারের কর্নিয়াও সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা দিয়ে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরবেন আরও দু জন।
এমন কাজেও অবশ্য বাধা কম আসেনি। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য কলকাতা পুলিসের কাছে গ্রিন করিডর চেয়েছিল শোভনা দেবীর পরিবার। যানজট মুক্ত রাস্তায় যাতে দেহ নিয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌছনো যায়। যদিও ব্রেন ডেড শোভনাকে নিয়ে আসার পথে বার বার ট্র্যাফিক জ্যামে আটকায় অ্যাম্বুলেন্স।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য সব বাধা পেরিয়ে, জয়ী জীবন। জয়ী শোভনা দেবী। মরেও যিনি, অমর হয়ে রইলেন।