নিজেই নিজের কথার ফাঁদে জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী
বিধানসভায় বিল পাস হয়ে গেছে। বামেরাও সমর্থন করেছে। অনেকটাই রিল্যাক্সড মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে নিজেই নিজের কথার ফাঁদে জড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভায় বিল পাস হয়ে গেছে। বামেরাও সমর্থন করেছে। অনেকটাই রিল্যাক্সড মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে নিজেই নিজের কথার ফাঁদে জড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিল পাসের পরে দৃশ্যতই রিল্যাক্সড মুখ্যমন্ত্রী ওঠেন ধন্যবাদ জানাতে। তখনই হঠাত্ তুললেন বাম আমলে ফাইল নিখোঁজের অভিযোগ। প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে বামেরা। রাজ্যের বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারীর সঙ্গে দলের নাম জড়িয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর দুটি মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড়। গ্রামবাংলার ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে তুমুল দুশ্চিন্তা। এমনকী নিজের সততার প্রতীক ইমেজও প্রশ্নের মুখে। এরকম পরিস্থিতির মুখে সম্ভবত এই প্রথম পড়তে হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সুদীপ্ত সেনকে গ্রেফতার, পাঁচশো কোটি টাকার রিলিফ ফান্ডের ঘোষণাও ক্ষোভের আগুনে জল ঢালতে পারেনি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শুক্রবার সাতসকালে নিজের বাড়িতে অতি বিশ্বস্ত ছয় নেতাকে নিয়ে গোপন বৈঠকে স্ট্রাটেজি ঠিক করেন মুখ্যমন্ত্রী। ড্যামেজ কন্ট্রোলে তৃণমূল নেত্রী সবচেয়ে বেশি জোর দেন, বাম আমলের বিল প্রত্যাহার করে নতুন বিল পাশের উপর। মঙ্গলবার সেই বিল পেশের সময় বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর তত্পরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আলোচনার বেশির ভাগ সময়ই ছিলেন অধিবেশনে। মাঝেমধ্যেই পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী বা আইনমন্ত্রীকে।
ধন্যবাদ জানানোর সময় বিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যও বিতর্ক তৈরি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতিকে বলেছিলাম বিলটাকে ফেরত পাঠানোর জন্য। রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ। প্রতারিত মানুষদের স্বার্থরক্ষার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। কেন্দ্রীয় সরকার যে তিয়াত্তরটি প্রতারক সংস্থার তালিকা পাঠিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে আরও কয়েকটি সংস্থা গজিয়ে উঠেছে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনকে বলেছি ওই সংস্থাগুলি বন্ধ করতে।
বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, প্রতারক সংস্থা বন্ধে আইনি অধিকার নেই বলেই তো নতুন আইনের কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে প্রতারক সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কী ভাবে ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার? তবে কি চালু আইনেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যায়?
বিলের ভবিষ্যত নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু অধিবেশন থেকে নিজের চেম্বারে যাওয়ার সময়ও মুখ্যমন্ত্রীকে রীতিমতো আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে। তাহলে কি, স্রেফ বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করাটাই মুখ্যমন্ত্রীর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল? প্রতারিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সদিচ্ছা না রাজনৈতিক জমি অটুট রাখার গেমপ্ল্যান-কোনটা তাঁর আসল উদ্দেশ্য?