'গোলাপি টেস্ট' দৌত্যের মধ্যেই কাল হাসিনা-মমতা বৈঠক, তিস্তা নিয়ে আশায় বুক বাঁধছে বাংলাদেশ
মমতার সঙ্গে হাসিনার এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক দিক থেকে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
নিজস্ব প্রতিবেদন : তিলোত্তমা এখন গোলাপি শহর। কাল থেকে ইডেনে শুরু হচ্ছে দিন রাতের 'পিঙ্ক টেস্ট।' ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে ইডেনে কাল চাঁদের হাট বসবে। উপস্থিত থাকবেন বিশ্বনাথন আনন্দ, লিয়েন্ডার পেজ, সানিয়া মির্জা সহ ২০০০ সালে ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ম্যাচ টিমের প্লেয়াররা এবং আরও অনেকে। একইসঙ্গে ইডেনে গোলাপি টেস্ট দেখতে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কাল ইডেনে একসঙ্গে বসে পিঙ্ক টেস্ট দেখবেন হাসিনা-মমতা। একথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নিয়ে শেখ হাসিনা তাঁকে ফোন করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "কাল ইডেনে খেলা। আমি থাকব। হাসিনা থাকবেন। আমাকে আজকে হাসিনা ফোন করেছিলেন।" মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, শুধু ইডেনে বসে একসঙ্গে খেলা দেখা নয়, আগামিকাল মোট ৩ বার হাসিনার সঙ্গে দেখা হবে তাঁর। ইডেনে খেলা দেখা ছাড়াও কাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একটি কূটনৈতিক বৈঠকও করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল সন্ধ্যা ৬ টায় তাজ বেঙ্গলে বৈঠক রয়েছে। মমতার সঙ্গে হাসিনার এই বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক দিক থেকে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহল মহল।
প্রসঙ্গত, এর আগে শেখ হাসিনা যখন দিল্লিতে এসেছিলেন তখন ফোনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। সেইসময় তিস্তার জলবণ্টনের বিষয়টি নিয়ে কথা হয় দুজনে। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ তিস্তার জল পাওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই বিষয়টি অমীমাংসিত হয়ে রয়েছে। আর তা নিয়ে দেশে বেশ চাপের মধ্যেই আছেন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বাংলাদেশে গিয়েছিলেন, তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তিস্তার জল দেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটা বাস্তবায়িত হয়নি।
এক্ষেত্রে প্রধান কারণ মমতার আপত্তি। তিস্তার জল বাংলাদেশকে দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বারই আপত্তি জানিয়ে এসেছেন। এরফলে উত্তরবঙ্গে জলের সমস্যা হয়ে যাবে বলে বার বার সরব হয়েছেন তিনি। ফলে বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে। আগামিকালের বৈঠকে তিস্তার জলবণ্টনের বিষয়টি উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, আরও যে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তার একটি হল এনআরসি ইস্যু ও অন্যটি সীমান্ত সমস্যা। দিল্লিতে বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী হাসিনাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে বাংলাদেশে কাউকে পাঠানো হবে না। ইতিমধ্যে গতকালই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সারা দেশে এনআরসি লাগু হবে বলে ঘোষণা করেছেন। তাই এনআরসি ইস্যুতে কথা হতে পারে মমতার সঙ্গে।
আরও পড়ুন, তৃণমূলের হাল নিয়ে প্রথম রিপোর্ট প্রশান্ত কিশোরের, স্বস্তির খবর মমতার জন্য
পাশাপাশি, সীমান্ত সমস্যা। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ভারতীয় মৎস্যজীবীদের আটক করে নিয়ে যায় বিজিবি। তাঁদের উদ্ধারে গিয়ে বিজিবি-র সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় এক বিএসএফ জওয়ানের। একজন মৎস্যজীবী এখনও বিজিবি-র হাতে আটক। বৈঠকে উঠতে পারে সেই প্রসঙ্গও। এছাড়া রাজ্যের জেলে বেশ কিছু বাংলাদেশি রয়ে গিয়েছে। তাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়েও কথা হতে পারে।