রাহুলের পর মমতার 'ঐক্যবদ্ধ ভারত' গঠনের পাশে সনিয়া, নেত্রীর বার্তা পড়লেন খাড়গে
ব্রিগেডের সভায় সনিয়া গান্ধীর বার্তা পাঠ করলেন লোকসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব বলছেন, তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়। কিন্তু কংগ্রেসের হাইকম্যান্ড কি তা মানছেন? শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পত্রবার্তা পাঠিয়ে সোমেনবাবুদের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। শনিবার ব্রিগেডে সমাবেশে সনিয়া গান্ধীর প্রতিনিধি হয়ে তাঁর বার্তা পড়ে শোনালেন লোকসভার দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। বললেন,''দেশকে বাঁচাতে বিরোধীদের একজোট হতে হবে বলে মনে করে সনিয়া গান্ধী''।
#UnitedIndiaAtBrigade pic.twitter.com/2qIPhL1GVz
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) January 19, 2019
তৃণমূলের মেগা ব্রিগেড সভায় আসার জন্য সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মাঝে সোমেন মিত্ররা দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে জানিয়ে আসেন, সনিয়া বা কংগ্রেস সভাপতি ব্রিগেডে হাজির হলে রাজ্যে দলীয় কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। প্রদেশ নেতৃত্বের মতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সভা থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন সনিয়া-রাহুল। তবে বিরোধীদের এত বড় জমায়েত মঞ্চ থেকে একেবারেই দূরে থাকা সম্ভব হয়নি কংগ্রেস সভাপতির। শুক্রবার চিঠিতে মমতাকে বার্তা দেন রাহুল গান্ধী।লেখেন,''নরেন্দ্র মোদীর মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে মানুষ বিভ্রান্ত। প্রতিবাদে মানুষ আজ পথে নেমেছে। দিকভ্রষ্ট মোদী সরকারের উপর দেশবাসী আর ভরসা রাখতে পারছে না। মানুষ নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখছে। এমন ভারত যেখানে সবাই এক। মোদী সরকারের মিথ্যার বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিজেপিকে হঠিয়ে সব বিরোধী দলই ঐক্যবদ্ধভাবে ভারত গড়তে চায়''। রাহুল আরও লেখেন, "ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ার ডাক দিয়েছেন মমতাদি। তাঁর প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।"
রাহুলের এমন পত্রের পর মুখ বাঁচাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র সাফাই দেন, ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও জোট হবে না। আমার নামে লিখে দিন। হ্যাইকমান্ড যা করছেন, সেটা জাতীয় পরিপ্রেক্ষিতে''। তার পাল্টা আবার তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খোঁচা দেন, এর চেয়ে হাসির খোরাক আর কিছু হতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশ দেয়, জেলা পরিষদের সভাপতি থেকে বুথ সভাপতি তা মেনে চলেন। নিজেদের নেতৃত্বকেই মানছে না ওরা।
শনিবার ব্রিগেড সমাবেশে প্রদেশ নেতৃত্বের অস্বস্তি বাড়িয়েই মল্লিকার্জুন খাড়গে বক্তব্যের শুরুতেই বলেন,''আমি সনিয়াজির বার্তা পড়ে শোনাতে চাই''। সনিয়ার বার্তা পাঠ করে খাড়গে বলেন, ''দেশের যুবসমাজ বেকার। চাল-পাঠ কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। দেশের বহুত্ববাদ ধ্বংসের মুখে। গণতন্ত্রের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সংবিধান ধ্বংসকারীদের একজোট হয়ে প্রতিহত করা দরকার''। খাড়গে আরও বলেন,''দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে বাবাসাহেব আম্বেদকর যে কাজ করেছিলেন তা ভেঙেচুরে দিচ্ছে মোদী সরকার। সমাজ ভাঙছে, ধর্মের সঙ্গে ধর্মের লড়াই লাগানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা। নিজে খাচ্ছেন না, কর্পোরেটদের সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন। রাফাল চুক্তিতে অনিল অম্বানিকে ৩০ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করিয়ে দিতে চাইছেন মোদী। এদিকে, বেকারত্ব বাড়ছে, কৃষক মরছে''।
Mallikarjun Kharge, Congress at Opposition rally in Kolkata: I appeal that we all unite to save the Constitution & the democracy. They (BJP) are helping their corporate friends. They promised to provide 2 crore jobs every year, where are the jobs? pic.twitter.com/3DbRwxkf7n
— ANI (@ANI) January 19, 2019
রাজনৈতিক মহলের মতে, মল্লিকার্জুন খাড়গের এদিনের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, লোকসভা ভোটে মোদীকে সরাতে ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোটই যে সম্বল, তা বুঝতে পারছে কংগ্রেস। আর সে কারণে প্রদেশ নেতৃত্বের মান রেখেই শ্যাম ও কূল-দুই-ই রাখলেন সনিয়া ও রাহুল।