মেট্রোয় আগুন-এ ‘ভাইরাল’ আতঙ্ক, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিশ্রুতি ভুলল কর্তৃপক্ষ
যদিও বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবার থেকে বিকালের পর মেট্রোতে পুলিস থাকবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বেকার হেল্পলাইন নম্বর, ফাঁকা ফার্স্ট এড বক্স। খোলেনি দরজা, বন্ধ এসি, কামরায় দমবন্ধ অবস্থা-বৃহস্পতিবার মেট্রোয় অগ্নিকাণ্ডের পর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠে আসছে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ। যাত্রীদের অভিযোগ, প্রায় ২০ মিনিট দমবন্ধ অবস্থায় টানেলের মধ্যে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। কোনওমতে মেট্রোর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করছিলেন। উদ্দেশ্য একটাই, কোনওভাবে যেন তাঁদের অবস্থার কথা জানাতে পারেন বাইরের কাউকে। কিন্তু কেউ ধরেননি ফোন। কোনওবার ফোন কেটে দেওয়া হয়েছে। শেষমেশ জানলার কাচ ভেঙে কোনওভাবে কয়েকজন যাত্রী ৭-৮ ফুট নীচে লাফ দিয়ে টানেল ধরে হেঁটে আসেন। কিন্তু বেশিরভাগই পারেননি।
দমবন্ধ কালো ধোঁয়া আর আতঙ্কে যেন তখন নরকদর্শন হচ্ছে অভিশপ্ত দমদমগামী সেই মেট্রোর যাত্রীদের। যাত্রীদের দাবি, প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মত সময়ে তাঁরা সেই বিভীষিকার মধ্যে কাটিয়েছেন। যদিও যাত্রীদের অভিযোগ অস্বীকার করছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেলের জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ২০ মিনিটেই উদ্ধারকারী দল পৌঁছেছে। যদিও যাত্রীদের পাল্টা দাবি, ২০ মিনিট ধরে জানলা কাচ ভাঙেন তাঁরা। তারপর নিজেরাই বেশ কয়েকজন টানেল ধরে এগিয়ে আসতে থাকেন।
আরও পড়ুন: কাজ করেনি হেল্পলাইন নম্বর, মেট্রোর আগুনে প্রশ্নে যাত্রী নিরাপত্তা
যদিও বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবার থেকে বিকালের পর মেট্রোতে পুলিস থাকবে। যদিও শুক্রবার সকালে মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে আরপিএফ থাকলেও মেট্রোয় কোনও পুলিস মোতায়েন ছিল না। মেট্রোর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজ্য-কেন্দ্র চাপানউতোর। দমকলমন্ত্রীর অভিযোগ, মেট্রোর গাফিলতির জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। মেট্রোর আরও বেশি তত্পরতা হওয়া উচিত ছিল বলে মত তাঁর। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করছে মেট্রো।
সুড়ঙ্গের মধ্যেই মেট্রো রেকে আগুন, ধোঁয়ায় অসুস্থ বহু যাত্রী
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে কমপক্ষে ৩৭ জন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনার আকস্মিকতায় বাকরুদ্ধ বছর সাতাশের সহেলি বেরা। গতকাল সিঁথির বাসিন্দা সহেলি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। ওই মেট্রোতেই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। ঘটনার পর সংজ্ঞা হারান সহেলি। তারপর থেকেই ট্রমার মধ্যে রয়েছেন তিনি। কথা বলছেন না। তাঁকে শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।