Kolkata High Court: সৎ ছেলেকে টাকা না দিলেই চাকরি থেকে বরখাস্ত! সৎ মা-কে কড়া নির্দেশ আদালতের
কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে চাকরি পান সমীরের সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া। তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়, ছেলেকে মাসে ৭,০০০ টাকা করে দিতে হবে সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)-কে। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে আচমকাই সংসারে টাকা বন্ধ করে দেন সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)।
অর্ণবাংশু নিয়োগী: সৎ ছেলেকে টাকা না দিলে, চাকরি চলে যাবে সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)-র। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, বেতন ও পারিবারিক পেনশন চালু হবে। কিন্তু সৎ ছেলে সমীর টিঙ্গুয়াকে টাকা না দিলে সেই বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। এই নির্দেশ-ই দেন তিনি। পাশাপাশি, শিশু সুরক্ষা দফতরকে আদালতের সুপারিশ, সৎ ছেলেকে যাতে কংক্রিটের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া যায়, তা দেখার জন্য। প্রসঙ্গত, মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে সমীর টিঙ্গুয়া।
মঙ্গলববার সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)-কে আদালতে হাজির করে পাঁশকুড়া থানার পুলিস। উল্লেখ্য, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সৎ মাকে আদালতে হাজির করানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। আদালতে হাজির হয়ে পিঙ্কি রানি টিংগুয়া জানান, স্বামীর ঋণ শোধ করতে গিয়ে ছেলের টাকা দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি বকেয়া সব টাকা তিনি দিয়ে দিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতির প্রশ্ন, কোথা থেকে কত টাকা ঋণ করেছেন? কারা আপনাকে ঋণ দিয়েছেন? যাঁদের এত টাকা আছে! উত্তরে সৎ মা জানান, স্থানীয় ৩ ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নেন তিনি। তাঁরা ব্যবসাদার।
উল্লেখ্য, পাঁশকুড়ার ব্র্যাডলি ব্র্যাট স্কুলের কর্মচারী ছিলেন সমীর টিঙ্গুয়ার মা। মায়ের মৃত্যুর পর সেই চাকরি পান সমীরের বাবা। এরপর সমীরের বাবা ফের বিয়ে করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে সমীরের বাবারও মৃত্যু হয়। তখন কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে চাকরি পান সমীরের সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া। তাঁকে শর্ত দেওয়া হয়, ছেলেকে মাসে ৭,০০০ টাকা করে দিতে হবে সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)-কে। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে আচমকাই সংসারে টাকা বন্ধ করে দেন সৎ মা পিঙ্কি রানি টিংগুয়া (মাণ্ডি)।
আরও পড়ুন, Justice Abhijit Ganguly: 'আপনি ভালো করছেন', বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়কে বলেন মুখ্যমন্ত্রী!
সমীর নাবালক হওয়ায়, তার দাদু তখন আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই মামলাতেই জেলা শিশু সুরক্ষা ও কল্যাণ অফিসার সারদা বিবি এদিন হাইকোর্টে হাজির হয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেন। প্রসঙ্গত, কদিন আগে আরও একটি মামলায় স্বামীর চাকরি পেলেও শাশুড়িকে দেখভাল করতে অস্বীকার করেছিল পুত্রবধূ! সেই মামলাতেও বধূকে ডেকে পাঠায় হাইকোর্ট। ২০১৪ সালে সবংয়ের বাসিন্দা ও পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক ব্রজদুলাল মণ্ডলের মৃত্যু হয়। পরিবারে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে। পরে স্বামীর চাকরি পান ব্রজদুলালের স্ত্রী কৃষ্ণা মণ্ডল।
চাকরি নেওয়ার পর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শককে হলফনামা দিয়ে কৃষ্ণা জানিয়েছিলেন, ব্রজদুলালের পরিবারের দায়িত্ব তিনি নেবেন। অর্থাত্ ব্রজদুলালের বৃদ্ধা মায়েরও দেখভাল করবেন। কিন্তু শিক্ষিকার চাকরি পেতেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন কৃষ্ণা। শাশুড়ির দায়িত্ব নিতেও অস্বীকার করেন তিনি। উপায় না দেখে ২০১৭ সালে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ব্রজদুলালের বৃদ্ধা মা দুর্গাবালা মণ্ডল। উচ্চ আদালত বেতনের একটি নির্দিষ্ট অংশ শাশুড়িকে দেওয়ার জন্য় বৌমাকে নির্দেশ দেয়।