ত্রিফলার মতো দুর্নীতির অস্বস্তি এড়াতেই কি অডিট প্রক্রিয়া বন্ধ কলকাতা পুরসভার?
বিধানসভা ভোটের আগে দুর্নীতি-অস্বস্তি এড়াতেই কি বন্ধ কলকাতা পুরসভার অডিট? গত আড়াই বছর ধরে অডিট বন্ধ থাকায় এই প্রশ্নটাই এখন উঠে আসছে রাজনীতির আঙিনায়। দুহাজার তেরো থেকেই পুরসভায় হিসেব পরীক্ষার বরাত দেওয়া হয়নি কোনও অডিট ফার্মকে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা আটকে গিয়েছে কোনও অজ্ঞাত কারণে।
ওয়েব ডেস্ক: বিধানসভা ভোটের আগে দুর্নীতি-অস্বস্তি এড়াতেই কি বন্ধ কলকাতা পুরসভার অডিট? গত আড়াই বছর ধরে অডিট বন্ধ থাকায় এই প্রশ্নটাই এখন উঠে আসছে রাজনীতির আঙিনায়। দুহাজার তেরো থেকেই পুরসভায় হিসেব পরীক্ষার বরাত দেওয়া হয়নি কোনও অডিট ফার্মকে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলেও তা আটকে গিয়েছে কোনও অজ্ঞাত কারণে।
স্বচ্ছতার সঙ্গেই কি খরচ হচ্ছে পুরসভার টাকা? মানা হচ্ছে সব রকম নিয়ম? গত দুবছর ধরে এই প্রশ্নেরই কোনও উত্তর নেই কলকাতা পুরসভায়। কারণ, বন্ধ অডিট।
পুরসভার নিজস্ব একটি ইন্টারনাল অডিট বিভাগ রয়েছে। তবে সেখানকার মাত্র বারো জন কর্মীর পক্ষে এই বিপুল কর্মকাণ্ডের হিসেব রাখা যে সম্ভব নয়, তা মানছেন পুরকর্তারাই।
উনিশশো বিরানব্বইয়ে অমিত কিরণদেব কমিশনার থাকার সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বাইরের অডিট ফার্মকে দিয়ে হিসেব পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা।
কিন্তু দুহাজার সালের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। আবার শুরু হয় দুহাজার ছয়ে। এডিবি-র ঋণের শর্ত পূরণের তাগিদেই দ্রুত টেন্ডারের ভিত্তিতে তিনটি অডিট ফার্মকে বরাত দেয় পুরসভা।
যে তিনটি ফার্ম পুরসভার হিসেব পরীক্ষার বরাত পায় তারা হল, এসবি অ্যাসোসিয়েটস, মুখার্জি বিশ্বাস পাঠক, কেকেএস অ্যান্ড কোম্পানি।
কিন্তু দীর্ঘদিন অডিটের কাজে নিযুক্ত থাকায় অস্বচ্ছতা বাড়তে পারে, এই যুক্তিতেই দুহাজার তেরোয় তিনটি ফার্মের বরাত বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। দরপত্র জমা দেয় ছত্রিশটি ফার্ম।
দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর দুটি ফার্মকে বেছেও নেওয়া হয়। তবে ওই পর্যন্তই। দুহাজার তেরোর পর থেকেই কোনও অজ্ঞাত কারণে থমকে কলকাতা পুরসভার অডিট ফার্মকে বরাত দেওয়ার প্রক্রিয়া।
পুরসভা সূত্রের খবর, যে তিনটি অডিট ফার্ম আগে হিসেব পরীক্ষায় যুক্ত ছিল, তাদেরই দুটি ফার্মের নাম উঠে এসেছে দুহাজার তেরোর টেন্ডার প্রক্রিয়ায়।
আগের তিনটি ফার্মের অডিট রিপোর্ট থেকেই তেল কেলেঙ্কারি, ট্রিপ টোকেন কেলেঙ্কারি, মেডিক্লেম কেলেঙ্কারি, মিড-ডে মিল কেলেঙ্কারির মতো বহু দুর্নীতির ঘটনা সামনে উঠে এসেছিল। এমনকী তাদের জমানায় উঠে আসা ত্রিফলা দুর্নীতির হিসেবে ক্যাগ পর্যন্ত সিলমোহর দিয়েছিল।
অডিটর নিয়োগ থমকে যাওয়ায় তাই স্বাভাবিকভাবে পুরসভার উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
কর্পোরেশন ভোটের আগে ও পড়ে কলকাতা জুড়ে বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ চলছে। যাতে ব্যয় হচ্ছে করদাতাদের কোটি কোটি টাকা। অথচ সেই যাবতীয় খরচের হিসেবই থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। তাই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ত্রিফলার মতো বড়মাপের দুর্নীতির অস্বস্তি এড়াতেই কী অডিট প্রক্রিয়া ঠান্ডাঘরে?