ভাইফোঁটার পর চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফ্রেমবন্দি শোভন-বৈশাখী
ভাইফোঁটার দিন তৃণমূল নেত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে ফোঁটা নিতে যান প্রাক্তন মেয়র। দিদির বাড়ি থেকে ফোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসছেন শোভন। এই একটা ফ্রেমের ধাক্কাতেই হই হই পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত শোভন চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আজ থেকে শুরু হল ২৫ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে চলচ্চিত্র উৎসবের শুভ সূচনা করেন অভিনেত্রী রাখি গুলজার। মঞ্চে তখন একঝাঁক তারকা। উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম, শাহরুখ খান, মহেশ ভাট, মার্কিন অভিনেত্রী অ্যান্ডি ম্যাকডোয়েল সহ টলিউডের একঝাঁক তারকা। ঠিক সেই সময়ই দর্শকাসনের দিকে ক্যামেরা ঘুরতেই ফ্রেমবন্দি হলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়। দর্শকাসনে বসে নিবিড় মনে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দেখা যায় তাঁদের।
ভাইফোঁটার দিন তৃণমূল নেত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে ফোঁটা নিতে যান প্রাক্তন মেয়র। দিদির বাড়ি থেকে ফোঁটা নিয়ে বেরিয়ে আসছেন শোভন। এই একটা ফ্রেমের ধাক্কাতেই হই হই পড়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। তবে, কী ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছেন? সম্ভাবনা আরও উস্কে দিয়ে, ঠিক তার পরপরই নিরাপত্তা বাড়ে শোভনের। প্রাক্তন মেয়রকে ওয়াই ক্যাটেগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। সবমিলিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে।
প্রসঙ্গত, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৪ অগাস্ট বিজেপিতে নাম লেখান। কিন্তু, বিজেপির সঙ্গে 'মধুচন্দ্রিমা পর্ব' কাটতে বেশিদিন লাগেনি। কিছুদিনের মধ্যেই নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধকে কেন্দ্র করে দিল্লি গিয়ে বিজেপি থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনা যায় ইস্তফার সিদ্ধান্তের পিছনে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'গোঁসা'ও একটি কারণ! এরপর থেকে বিজেপির কোনও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি শোভনবাবুকে।
শোভনবাবুকে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দলের অন্দরে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে। ঠিক তার পরপরই রাহুল সিনহার জন্মদিনের পার্টিতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার কদিন পরই ভাইফোঁটায় সোজা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে উপস্থিত হন শোভনবাবু। গতবছর তিনি ফোটা নেননি। কিন্তু এবার তৃণমূল নেত্রীর কাছ থেকে ফোটা নেওয়াকে কেন্দ্র করে উসকে ওঠে জল্পনা। তৃণমূলের অন্দরের কানাঘুষোয় শোনা যায়, বৃহস্পতিবারের বিধায়কদের বৈঠকে নাকি ডাক পেতে পারেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগদানের পরও শোভনকে দল থেকে সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করা হয়নি। এখনও তিনি তৃণমূলের বিধায়ক।
আরও পড়ুন, বুলবুল-এর তাণ্ডবে শনিবার কলকাতায় তুমুল দুর্যোগের আশঙ্কা, পুরসভায় খুলল কন্ট্রোলরুম
যদিও শেষমেশ কালকের বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। ঘাসফুল শিবিরের অন্দরমহলের খবর, শোভন নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে তৃণমূল। অন্যদিকে, ধীরে চলো অবস্থান নিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। ভাইফোঁটা পরবর্তী তৃণমূলের প্রথম রৈজনৈতিক কর্মসূচি ছিল কাল। সেখানে কাল তাঁকে দেখা যায়নি। কিন্তু আজ রাজ্য সরকার আয়োজিত চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত হয়ে নজর টানলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।