থানার সামনে আত্মহত্যা কেন? উত্তরের খোঁজে আমরা
ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই শাহাজাদা-পুলিসের যোগসাজশের বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছিল পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা মীর আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডু। কিশোরীকে ধর্ষণ এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে গুড্ডুর আত্মহত্যায় প্রকাশ্যে চলে এসেছে শাহাজাদা-পুলিসের যোগসাজশের বিষয়টি। কে এই শাহাজাদা?
ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকেই শাহাজাদা-পুলিসের যোগসাজশের বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছিল পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা মীর আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডু। কিশোরীকে ধর্ষণ এবং তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে গুড্ডুর আত্মহত্যায় প্রকাশ্যে চলে এসেছে শাহাজাদা-পুলিসের যোগসাজশের বিষয়টি। কে এই শাহাজাদা?
আড়াই বছর আগের কথা। ডাকাতির ঘটনায় নাম জড়ায় তোপসিয়ার বাসিন্দা শাহাজাদা বক্সের। গ্রেফতার হয়ে জেলেও যেতে হয় শাহাজাদাকে। জেল থেকে ফিরে তোলাবাজি, বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম সরবরাহ এবং প্রোমোটিং ব্যবসায় মন দেয় শাহাজাদা বক্স। একের পর এক অবৈধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে যায় সে। পুলিসের `সোর্স` হিসেবে কাজ করত বলে বেআইনি কাজকর্মে পুলিসের থেকেও সহযোগিতা মিলছিল।
এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর শেষরক্ষা আর হল না। প্রতিপক্ষ মীর আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডু নেমে পড়েন শাহাজাদার বিরুদ্ধে। এই মীর আমিনুল ইসলাম ওরফে গুড্ডু পাম অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা। শিক্ষিত যুবক। সাহাবুদ্দিন, রাজেশ, দিলীপ সহ কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত আমিনুল।
দীর্ঘদিন ধরেই শাহাজাদার সঙ্গে রেষারেষি তাঁর। শাহাজাদার বিরুদ্ধে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরই বিষয়টি কাজে লাগাতে চেষ্টা করে আমিনুল। প্রকাশ্যে চলে আসে শাহাজাদা এবং পুলিসের যোগসাজশ। গত ৩১ অক্টোবর ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর শাহাজাদা গ্রেফতার হয়। জামিনে ছাড়াও পায় সে। তবে এর বিরুদ্ধে সরব ছিলেন আমিনুল। শাহাজাদাকে বাঁচাতে আমিনুলের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা দেয় পুলিস। তবে ডাকাতির মামলা দিলেও আমিনুল কিন্তু গ্রেফতার হয়নি। কারণ, পুলিসের একাংশ মনে করেছিলেন, এই মামলা দেওয়া ঠিক হচ্ছে না।
প্রতিবাদ জানাতে এবং কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় শাহাজাদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে তাঁকে ভাঙচুর এবং লুঠপাটের ঘটনায় জড়ানোয়, সুইসাইড নোট লিখে কড়েয়া থানার সামনে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে, আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে আমিনুল ইসলাম। যদিও আমিনুল গায়ে আগুন দেওয়ার পরেই ধর্ষণে অভিযুক্ত শাহজাদাকে গ্রেফতার করে পুলিস। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে সে। গত মঙ্গলবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় আমিনুলের।
মাত্র ৩০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েও তার মৃত্যু হওয়াটা ছিল কিছুটা অস্বাভাবিক। ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, কিডনি এবং লিভারের সমস্যার জন্য মৃত্যু হয়েছে আমিনুলের।