'মাত্র ৩০ শতাংশ কাউন্সিলরের ভাল ব্যবহার! স্বভাব শুধরান', পুরভোট জিততে কড়া নির্দেশ
কলকাতায় দলের ১২২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশের ব্যবহার ভাল। কাউন্সিলরদের জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ গাইড লাইন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : গায়ের জোরে ভোট করা যাবে না। চলবে না রিগিং। নেত্রী এই সব পছন্দ করেন না। নেতাজি ইন্ডোরে মমতার নির্দেশ তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে পৌছে দেওয়া হল দলীয় কাউন্সিলরদের কাছে। বৈঠকে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, মানুষের সঙ্গে কোনও রকম খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। কোনও ভুল করে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
পুরভোটের প্রস্তুতি হিসেবে আজ তৃণমূল ভবনে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পুরভোটের প্রচার কৌশল ও কাজের মূল্যায়ণ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে কাউন্সিলরদের বলে দেওয়া হয়েছে, মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হবে। টিকিট নিয়ে কোনও কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না। কাজের নিরিখেই মিলবে টিকিট।
বৈঠকে উঠে আসে, কলকাতায় দলের ১২২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশের ব্যবহার ভাল। বাকিদের বিরুদ্ধে মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অন্তর্তদন্তে উঠে এসেছে, দলের নেতাদের ঔদ্ধত্য আর পঞ্চায়েত ভোটে কোনও কোনও জায়গায় জোর জবরদস্তি মানুষ ভালভাবে নেননি। তার প্রভাব অনেকটাই পড়েছে লোকসভা ভোটে। ছোট লালবাড়ির ভোটের আগে তা শুধরোতে চায় তৃণমূল। দলীয় কাউন্সিলরদের ডেকে মঙ্গলবার তা বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা।
পুরভোটের আগে কাউন্সিলরদের জন্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ গাইড লাইন। কী সেই গাইডলাইন?
রিগিং বা গায়ের জোরে ভোট করা যাবে না।
মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বরদাস্ত নয়।
খারাপ ব্যবহার করে থাকলে ক্ষমা চাইতে হবে।
পুরভোটের আগে জনসংযোগে আরও জোর দিতে হবে।
পুরভোটের টিকিট পেতে গেলে আর শুধু ভালো কাজ করলে হবে না। চাই ভালো ইমেজও। পারিবারিক সম্পর্কের জোরে আর দলের টিকিট মিলবে না। আজকের বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক বলেন, "ইমেজ ও কাজ দেখে প্রার্থী বাছাই করবে দল। কোন ওয়ার্ডে কে প্রার্থী হবেন, দলের সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত। সংরক্ষণের কারণে কোনও আসনে প্রার্থী বাদ পড়লে, তাঁর পরিবারের কেউ টিকিট পাবেন এমন আশা করবেন না। টিকিট না পেয়ে কেউ দল ছাড়তে চাইলে, যেতে পারেন।"
আরও পড়ুন, 'এক ইঞ্চি মাটি কাউকে দখল করতে দেব না', অমিতকে চ্যালেঞ্জ মমতার
আরও পড়ুন, কাটমানি রুখতে কর্মসাথী অ্যাপ, ১ লাখ বেকারকে ২ লাখ টাকা করে সাহায্য সরকারের
আসলে পুরভোট কঠিন পরীক্ষা। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করেন, শহুরে জনতার মন জয় করতে দলের পারফরম্যান্স যতটা জরুরি, তার চেয়ে ঢের গুরুত্বপূর্ণ কাউন্সিলরদের দৈনন্দিন ব্যবহার। আর ছোট লালবাড়ি দখলে রাখতে সেই জায়গাতেই জোর দিতে চাইছে ঘাসফুল শিবির।