আদালতে তাপস পালের পাশেই দাঁড়াল সরকার, উঠছে প্রশ্ন, ক্ষমা চাইলেই মাফ!
কলকাতা: অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার তাপস পাল।
কলকাতা: অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার তাপস পাল। খুন, ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পরও শাসক দলের এই সাংসদের পাশেই দাঁড়াল রাজ্য সরকার। এজলাসেই আজ তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের ওই হুমকি -বক্তব্যের সিডি চালিয়ে দেখলেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। আর সরকারি আইনজীবী সওয়ালে আগাগোড়াই বলে গেলেন, ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সাংসদ। তাঁর ওই বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।
তথ্য বলছে , তাপস পাল নদীয়ার চৌমাহায় যান গত ১৪ই জুন। সেখানেই ওই বিতর্কিত ভাষণ দেন তিনি
তাপস পাল বলেছিলেন, `আমি প্রচুর মস্তানি করেছি। আমি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরি, ...আমি নিজে রিভলবার দিয়ে গুলি করে চলে যাব। সিপিআইএমকে গুলি করে মারব। আমার মা, বোন, বাবা, বাচ্চা কারোর গায়ে যদি হাত পরে আমি ছেড়ে কথা বলব না। বাড়ি, বাড়ি ঢুকে ছেলে পাঠিয়ে রেপ করে দেব। তৃণমূলের কারোর গায়ে যদি কোনও সিপিএম হাত দেয় তাদের গুষ্টি শেষ করে দেব। বাড়ি, ঘর জ্বালিয়ে দেব।``
বাস্তবে ওই এলাকায় ভোট হয় ১২ মে। প্রচার শেষ ১০ মে। এদিন আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেন, ভোটের আগে ওই মন্তব্য করেছিলেন তাপস পাল। আসলে তাপস পাল মন্তব্যটি করেন ১৪ জুন।
ওই ভাষণ সম্প্রচারিত হয় গত ৩০ জুন। স্বভাবতই ভুল তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ উঠেছে সরকারি আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এদিন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে মামলায় বিচারপতির সঙ্গে সরকারি আইনজীবীর সওয়াল-জবাব চলে দীর্ঘক্ষণ।
বিচারপতি বলেন-আগেও জানতে চেয়েছি উনি(তাপস পাল) কি আদৌ ওই মন্তব্য করেছেন? এবিষয়ে সরকারের অবস্থানই বা কী?
সরকারি আইনজীবী বলেন- ভোটের আগে ওই মন্তব্য করা হয়েছিল। তখন কেউ অভিযোগ করেননি। এখন মিডিয়ায় তা দেখে অভিযোগকরলে কী করে গ্রাহ্য হবে? সাংসদ ওই কথা বলেছেন কিনা, তা তাঁর আইনজীবীই বলতে পারবেন। তবে সাংসদ ক্ষমা চেয়েছেন। তাই উসকানি বা বিভেদমূলক বক্তব্যের ধারায় অভিযোগ অযৌক্তিক।
বিচারপতি- আমি খুন করব বললে কি তবে উসকানির অভিযোগ প্রযোজ্য হবে না। জীবনের অধিকার আইনে বাঁধা নয়। রেপ করার পর ক্ষমা চাইলে কি ক্ষমা করা যাবে? উনি কার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন, দলের কাছে? কার মাধ্যমে ক্ষমা চাইলেন?
তাপসের আইনজীবী- উনি মিডিয়ার মাধ্যমে জনতার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়।
বিচারপতি- ক্ষমা চাওয়াটাই কি শেষ কথা?
এরপরই বিচারপতি এজলাসে তাপস পালের ভাষণের সিডি চালিয়ে শোনেন। অন্তর্বর্তী রায় দান এদিন অবশ্য স্থগিত রেখেছেন তিনি।
তাপস পালের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার সাফাই চালিয়ে যান।
এর আগে অনুব্রত মণ্ডলের হুমকি-ভাষণের সিডিও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এজলাসেই শুনেছিলেন। প্রশাসনকে বিঁধেছিলেন একাধিক প্রশ্নবাণে। তাপস-কাণ্ডে এবার তাঁর অন্তর্বর্তী রায়ের অপেক্ষা।