আত্মবিশ্বাসের অভাবেই কি রাজ্যে 'সাইনবোর্ড' কংগ্রেসকে ১৩টি আসন ছাড়ছে সিপিএম?
লোকসভা ভোটের আগে প্রাথমিকভাবে আসন বণ্টন সিপিএমের।
মৌমিতা চক্রবর্তী
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই রাজ্যে লড়াই করতে চলেছে বামেরা। তা নিয়ে আর সংশয়ের কোনও অবকাশ রইল না। শরিকদের না চটিয়েই কংগ্রেসের হাত ধরে উত্সাহী আলিমুদ্দিন। আর সে কারণে নিজেদের ভাগের আসনই রাহুল গান্ধীকে দিচ্ছেন সূ্র্যকান্ত মিশ্ররা। বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিনে শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সিপিএম নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০টি আসনে লড়াই করবে বড় শরিক। ১৩টি আসন ছাড়া হচ্ছে কংগ্রেসকে।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে উত্সাহী নয় শরিকরা। সেটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করেছেন নেতারা। বৃহস্পতিবার সমাধানসূত্রের খোঁজে বৈঠক চলে আলিমুদ্দিনে। তবে গোঁ ধরে রয়েছে আরএসপি। বহরমপুর আসনটি তারা ছাড়তে নারাজ। অন্যদিকে মালদহ ও মুর্শিদাবাদে নিজেদের আসন ধরে রাখতে মরিয়া কংগ্রেসও। সিপিএম নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই সেই বার্তা দিয়েছেন সোমেন মিত্র। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান না। শরিকি দ্বন্দ্ব সিপিএমকেই মেটাতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন সোমেন মিত্ররা।
আরএসপি ও কংগ্রেস অনড় অবস্থান নেওয়ায় এখনও ঝুলে রয়েছে বহরমপুর আসন। ২৫ ফেব্রুয়ারি ফের শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে আলিমুদ্দিন। ওই বৈঠকে সূর্যকান্ত মিশ্ররা শরিক আরএসপির মান ভাঙাতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার। সূত্রের খবর, ২০টি আসন নিজেদের হাতে রাখছে সিপিএম। তিনটি করে আসন পেতে চলেছে ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই ও আরএসপি। বাকি ১৩টি আসন ছাড়া হবে কংগ্রেস।
আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে, গত লোকসভা আসনে কে কোন আসনে জয়ী হয়েছিল? এবং কোন আসনে দ্বিতীয় স্থানে কে ছিল? বলে রাখি, গতবার ৪টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। ২টিতে সিপিএম। ফরওয়ার্ড ব্লক আবার শর্ত দিয়েছে, বাম-কংগ্রেস জোটের কথা কোথাও লেখা যাবে না।
সিঙ্গুর থেকে কলকাতা কৃষকজাঠা বা ৩ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ- লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যে নিজেদের শক্তি জানান দিচ্ছিল সিপিএম। এমতাবস্থায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে ১৩টি আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিশেষ করে এরাজ্যে কংগ্রেস ক্ষয়িঞ্চু শক্তি। উত্তরবঙ্গে তাদের প্রভাব খর্ব করে উঠে আসছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটে মালদহে কংগ্রেসকে চাপে ফেলে দিয়েছিল বিজেপি। আর মুর্শিদাবাদে অধীর দুর্গ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে কংগ্রেস কার্যত সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে। সুতরাং কংগ্রেসকে ১৩টি আসন ছাড়া কি রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয়, জল্পনা ওয়াকিবহাল মহলে। প্রশ্ন উঠছে, কর্মীরা যখন মাঠে নামছেন, তখন কি আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা? এটা সেই ২০১৬ সালের মতো হয়ে যাবে না তো! জাতীয় প্রেক্ষাপটে আবার প্রশ্নটা বেশ জটিল, কেন্দ্রে কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে ভোটের পর কি হবে?
আরও পড়ুন- কাশ্মীরে জঙ্গি নির্মূলে ব্লু প্রিন্ট বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর