কার্টুনকাণ্ডে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী, বক্তব্যের বিরোধিতা আইনজীবীদের

কার্টুনকাণ্ডে মৌনতা ভাঙলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। শুক্রবার তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনে মহারাষ্ট্র নিবাস হলে দীর্ঘ বক্তব্য পেশ করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, কার্টুন বানিয়ে তাঁর চরিত্রহননের চেষ্টা করেছেন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র।

Updated By: May 11, 2012, 10:57 PM IST

কার্টুনকাণ্ডে মৌনতা ভাঙলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। শুক্রবার তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনে মহারাষ্ট্র নিবাস হলে দীর্ঘ বক্তব্য পেশ করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, কার্টুন বানিয়ে তাঁর চরিত্রহননের চেষ্টা করেছেন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। বক্তব্যের সমর্থনে একাধিক যুক্তিও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, সব জেনে বলছেন তিনি।

এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে একহাত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধ্যাপকের গ্রেফতারিকে কার্যত সমর্থন করে তিনি বলেন, "ইমেল পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আছে। যে কেউ যে কোনও ইমেল থেকে মেল পাঠাতে পারে না। ওই সোসাইটির লোকরাই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ইটস এ সাইবার ক্রাইম।" যদিও আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, অন্যের ইমেল আইডি ব্যবহার করে মেল পাঠানো সাইবার ক্রাইমের আওতায় পড়ে না। আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "অম্বিকেশ বাবুর বিরুদ্ধে এসংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করেনি পুলিস। সেক্ষেত্রে যার ইমেল আইডি ব্যবহার করে অম্বিকেশ বাবু মেল পাঠিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি বা সংস্থা পুলিসে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?" এছাড়া প্রশ্ন উঠছে, পাসওয়ার্ড না জানলে কী করে ইমেল পাঠালেন অধ্যাপক সেক্ষেত্রে যদি তিনি কারও ইমেল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে থাকেন তাহলে সরাসরি সেই ধারায় তাঁকে কেন অভিযুক্ত করল না পুলিস? এই ধরণের মারাত্মক অপরাধ করে কী ভাবে এত সহজে জামিন পেলেন অম্বিকেশবাবু?

মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, "ওটা কার্টুন নয়। ভ্যানিস করে দাও। মানে খুন করে দাও। কিছু মিডিয়া কার্টুন বলে প্রচারের চেষ্টা করছে। পুরো ছবিটা দেখবেন। মুকুল আর আমাকে দেখিয়ে বলছে ভ্যানিস। সত্যজিত্‍ রায়ের সোনার কেল্লায় আছে। অর্থাত্‍ ক্যারেকটার অ্যাসাসিনেশন করে মার্ডার করে দাও।" যে কার্টুন ঘিরে এত বিতর্ক, সেখানে দেখা যাচ্ছে সম্পুর্ণ উলটো ছবি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীনেশ ত্রিবেদীকে লক্ষ্য করে ভ্যানিস বলছেন। তাছাড়া কার্টুনটি অম্বিকেশবাবুর বানানোও নয়। তিনি কার্টুনটি কয়েকজনকে পাঠিয়েছিলেন মাত্র। কার্টুনটি কার তৈরি তাকে চিহ্নিত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সূত্রে ফেসবুককে চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা। কিন্তু আজও অধরা সেই ব্যক্তি। আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রাণের আশঙ্কা থাকলে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হল না কেন? লিখিত অভিযোগে সেই তথ্য পুলিসকে কেন জানান হল না?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, কার্টুনটিতে তাঁকে `ক্যারেকটার অ্যাসাসিনেশনের` চেষ্টা হয়েছে। "ওটা ডিকম্পোজড কপি নয়, সুপারইম্পোজড।" এর কেনও ব্যাখ্যা দেননি মুখ্যমন্ত্রী। যদিও তিনি বলেন, "সব জেনেই বলছি।" মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা।

.