Mamata Banerjee: গর্ভবতী মহিলাদেরও ক্রিটিক্যাল কেস বলে রেফার কেন! এসব যেন না হয়, হুঁশিয়ারি মমতার
এদিনের বৈঠকে প্রিন্সেপ ঘাটের ভাঙাচোরা অবস্থা থেকে শুরু করে হাওড়ার রাস্তায় আলো না জ্বলা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ববি তুমি রয়েছো, প্রিন্সেপ ঘাটের অবস্থা বেশ খারাপ। ওখানে কিন্তু আমার পৌষ মেলা হয়। দ্রুত ওই জায়গাটা সাফ করো
সুতপা সেন: জেলা থেকে রোগীদের কলকাতায় রেফার করা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সোমবার নবান্নে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্য়াণ দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলায় যারা রয়েছেন তাদের বলছি, দয়া করে আপনারা কি আপনারা রেফারেল কেস কমাবেন? গর্ভবতী মাকেও আপনারা ক্রিটিক্যাল কেস বলে রেফার করে দিচ্ছেন। ৫-৬ ঘণ্টা পথ পেরিয়ে এসে তিনি যখন কলকাতায় এসে পৌঁচ্ছাছেন তখন ওটিতে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হচ্ছে। কেন আমি এভাবে একজন প্রেগন্য়ান্ট মাদারকে পাঠাব? এসব জিনিস যেন না হয়। যিনি রেফার করছেন তাঁকে এর দায়িত্ব নিতে হবে। নারায়ণ তুমি ভালো মানুষ। তুমি যাদের দ্বারা পরিবেষ্টিত তারা তোমাকে সব ব্যাপারেই আটকে দেয়। তুমি একটু সক্রিয় হও। কখনও সারপ্রাইজ ভিজিট করেছেন? আমাদের তরফে যেন নেগলিজেন্স না হয়। এই পৃথিবীতেই আমাদের সবকিছুর কৈফিয়ত দিতে হবে।
আরও পড়ুন-ঝুলছে বাবা, পাশেই নিথর মা! বন্ধ ঘরে দম্পতির দেহের পাশে বসে কান্না ২ বছরের অবুঝ মেয়ের
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, আমরা অনেক সময় নিজেদের সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি করার জন্য সাবসেন্টার লেভেলে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০২৩ সালের মধ্যে ২১৭৩টি এবং ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১৬৬১৬টি সুস্বাস্ত্য কেন্দ্র গড়ে উঠবে। আর্থত্ পরিষেবা মানুষের দরজায় পৌঁছে যাবে। এখানে ওষুধ,ডায়বেটিস টেস্ট, ক্য়ান্সার টেস্ট ইত্যাদি পরিষেবা দেওয়া হবে। ২ হাজারের বেশি সাবসেন্টার ইতিমধ্যে চালু হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী, শিশুসাথী ও চোখের আলো প্রকল্প রয়েছে। স্বাস্থসাথী প্রকল্পে এখনওপর্যন্ত ২ কোটি ৪০ লাখ পরিবারের ৮ কোটি ৪৩ লক্ষ মানুষ নথিভুক্ত হয়েছেন। শুরু থেকে এখনওপর্যন্ত ৪৩ লক্ষ মানুষকে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের চিকিত্সা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরেও আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে। স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেখা গিয়েছে একজন চিকিত্সক একদিন ২০টিরও বেশি অপারেশন করেছেন। এটা হতে পারে? আমি এটা নিয়ে ব্যবস্থা নেব না কেন?
এদিনের বৈঠকে প্রিন্সেপ ঘাটের ভাঙাচোরা অবস্থা থেকে শুরু করে হাওড়ার রাস্তায় আলো না জ্বলা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ববি তুমি রয়েছো, প্রিন্সেপ ঘাটের অবস্থা বেশ খারাপ। ওখানে কিন্তু আমার পৌষ মেলা হয়। দ্রুত ওই জায়গাটা সাফ করো। কেন আমাকে বারবার বলতে হবে? খুব খারাপ লাগে। এ যেন বাচ্চা ছেলে। রোজরোজ ললিপপ ধরিয়ে দেবে হাতে। কখনও সরকার বদল হয়, কখনও অফিসার বদল হয়। পলিসি তো চেঞ্জ হয় না। তাহলে কেন এসব রেগুলারলি মনিটার করা হবে না? যে পার্ক বা রাস্তা দেখছে তার কি এটা ডিউটি নয়?
পরিবহণ দফতরকেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সংবাদিক বৈঠকে বলেন, হাওড়ার দিক থেকে নবান্নের দিকে এসো। দেখো রাস্তার কী খারাপ অবস্থা। একটা দিন জল দিয়ে ধোয়া হয় না? কেন আমাকে চোখ দিয়ে দেখতে হবে? ওখান দিয়ে যারা রোজ যায় তারা কেন দেখতে পায় না? আগে ধোয়া হতো। সেই পাটটাই চুকিয়ে দিয়েছে? আমি বলব এটা ফের শুরু হবে। ফরসোর রোডে আলো জ্বলে না। এটা বলা আমার ডিউটি? ডিএম রয়েছে, এসপি রয়েছে। এটা আমাকে বলতে হবে? আমার ভালো লাগে না? এটা যাদের দায়িত্ব তাকে এটা করতেই হবে। কতবার এসব বলতে হবে? পজিটিভ হয়ে কাজ করতে হবে আমাদের।