শিল্পের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই নিলেন মুখ্যমন্ত্রী
রাজ্যের শিল্পসংক্রান্ত কোর কমিটির ভার নিজের হাতে নিয়েই আগামিকাল শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বৈঠকে সরকারের তরফে কী বলা হবে, তা ঠিক করতে হিমসিম খাচ্ছেন আমলারা। এরমধ্যেই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, তিনি কোর কমিটির প্রধান থাকার সময় অনেক মন্ত্রীই বৈঠকে আসতেন না।
রাজ্যের শিল্পসংক্রান্ত কোর কমিটির ভার নিজের হাতে নিয়েই আগামিকাল শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বৈঠকে সরকারের তরফে কী বলা হবে, তা ঠিক করতে হিমসিম খাচ্ছেন আমলারা। এরমধ্যেই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, তিনি কোর কমিটির প্রধান থাকার সময় অনেক মন্ত্রীই বৈঠকে আসতেন না।
শিল্পে খরা কাটাতে রাজ্যের শিল্প সংক্রান্ত কোর কমিটির মাথায় বসেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আগে কোর কমিটির শীর্ষে ছিলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোর কমিটি তেমন পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি বলেই হাল ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিল্পমন্ত্রী অবশ্য বলছেন,কোর কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর পারফরম্যান্স মোটেই খারাপ নয়। তাঁর নেতৃত্বেই, টেক্সটাইল ও তথ্যপ্রযুক্তি নীতি, জমি বণ্টন নীতি ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চোদ্দ ওয়াই ধারায় বারোটি প্রকল্পের জমি ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জিন্দল এবং এয়ারোট্রপলিস প্রকল্পের জমি সমস্যার সমাধান প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন শিল্পনীতির খসড়া তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। শিল্পমন্ত্রীর মতে, ওই সব সিদ্ধান্ত কার্যকর করার সময় এসেছে। তাঁর নেতৃত্বে কোর কমিটির কাজে সমস্যার কথা বলতে গিয়েও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শিল্পমন্ত্রী। তাঁর কথায়, কোর কমিটির বৈঠকে অনেক মন্ত্রীই আসতেন না। ফলে ইচ্ছে থাকলেও জমি, বিদ্যুত্ সহ নানা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হত না।
শিল্পমন্ত্রীর তির্যক মন্তব্য, এবার স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী কোর কমিটির হাল ধরায় নিশ্চয়ই মন্ত্রীরা বৈঠকে আসবেন। চেয়ারপার্সন হওয়ার পরে কোর কমিটি ঢেলে সাজিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবারই শিল্পপতিদের সঙ্গে বসছে কোর কমিটি। বৈঠকে ওয়াই এস দেবেশ্বর, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া-সহ অন্তত ৫০ জন শিল্পপতি হাজির থাকবেন বলে মহাকরণ সূত্রে জানা যাচ্ছে। বৈঠকে শিল্পপতিদের সামনে কী বার্তা দেওয়া হবে, তা ঠিক করতে হিমসিম খাচ্ছেন শিল্প দফতরের আধিকারিকরা। কারণ, শিল্পনীতি, জমিনীতি ঘোষিত হয়নি। জমির উর্দ্ধসীমা কিংবা এস ই জেড সংক্রান্ত অবস্থানও বদলায়নি সরকার। শিল্পে উত্সাহ দিতে বাড়তি ইনসেনটিভ দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়নি। অতীতে বেঙ্গল লিডস-সহ বিভিন্ন জায়গায় শিল্পপতিরা সাফ জানিয়েছেন, এইসব সমস্যা না মেটালে বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়।
শিল্প দফতর সূত্রে জানা গেছে, মুখ বাঁচাতে সরকারের তরফে বলা হবে, বিনিয়োগ প্রস্তাব এলে দ্রুত জমি দেওয়া, জমির চরিত্র বদলে জেলাস্তরে কমিটি গড়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যুত্, সড়ক, পরিবহণের মতো পরিকাঠামো গড়ায় গুরুত্ব দেওয়ার কথাও বলবে সরকার। শিল্পমন্ত্রীর মতে, মুখ্যমন্ত্রী কোর কমিটির ভার নেওয়ায় শিল্পপতিরা সরাসরি তাঁর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাবেন। ফলে শিল্পায়নে গতি আসবে। কিন্তু নীতি বদল না করে স্রেফ প্রতিশ্রুতিতে শিল্পপতিদের মন ভিজবে কি না, তা নিয়ে সংশয় বিভিন্ন মহলেই। নতুন সরকারের প্রায় দুবছরে শিল্পে বিনিয়োগের হাল তারই প্রমাণ বলে মনে করেন বিভিন্ন শিল্পপতিও।