কেন্দ্র চাইলে CAB-তে বাধা দিতে পারেন না মমতা,তোষণের রাজনীতি করছেন: কৈলাস
পশ্চিমবঙ্গে কোনওভাবেই এনআরসি ও সিএবি চালু হতে দেবেন না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মমতা।
অঞ্জন রায়: বাংলায় নাগরিকপঞ্জী ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিধি চালু করতে দেবেন না বলে হুঙ্কার দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভায় বিলটি পাসের পর ডেরেক ও'ব্রায়েনও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে বাংলায় NRC ও CAB লাগু হবে না। তৃণমূলের এমন হুঁশিয়ারিকে পাত্তা দিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বলেন, ''কেন্দ্রীয় সরকার কাউকে নাগরিকত্ব দিতে চাইলে বাধা দিতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী। এটা ওনার অহঙ্কার। ''
রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন বাঙালি উদ্বাস্তুরা। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর কথায়,''স্বাধীনতার পর গুরুত্বপূর্ণ দিন। পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত হয়ে বহু মানুষ এদেশে এসেছেন। তাঁরা থাকছিলেন, কিন্তু নাগরিকত্ব পাননি। আত্মগ্লানিতে ভুগছিলেন। অনেক রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করেছে তাঁদের। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, যেখানেই গিয়েছেন নাগরিকত্ব সংশোধনীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সবচেয়ে নাগরিকত্ব পাবেন বাংলার উদ্বাস্তুরা। প্রধানমন্ত্রী ও অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী উপহার একটা বড় উপহার দিয়েছেন।''
পশ্চিমবঙ্গে কোনওভাবেই এনআরসি ও সিএবি চালু হতে দেবেন না বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন মমতা। ডাক দিয়েছেন, দরকার পড়লে শুরু হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পাল্টা জবাব,''সংবিধান মেনে চলে দেশ ও রাজ্য। ব্যক্তি প্রশাসন চালায় না। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ। কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব দিতে চাইলে মুখ্যমন্ত্রী বাধা দিতে পারেন না। উনি বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। এটা ওনার অহঙ্কার।''
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আরও একবার তোষণের রাজনীতির অভিযোগ করেছেন কৈলাস। বলেন,''অনুপ্রবেশকারীদের পাশেই থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওনার মুসলিম তোষণকারী রাজনীতির মুখোশ খুলে গিয়েছে। বাংলার রাজনীতিতে এটা বৈপ্লবিক পদক্ষেপ।''
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মুসলিম বিরোধী নয় বলেও জানান কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নাগরিকত্ব পেয়েছেন বহু মুসলিম।
এদিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন,''অসমে বাঙালির নাগরিকত্ব পাওয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে উদ্বাস্তু বাঙালিদের বিরোধিতা করছে তৃণমূল। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল বাঙালি বিরোধী। এদের আসল রূপ চিনে নিন। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না।''
লোকসভা ভোটের পর থেকে NRC নিয়ে বিজেপিকে চেপে ধরেছিল তৃণমূল। তার ফল মিলেছে উপনির্বাচনে। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর বিজেপির হাতেও চলে এসেছে পাল্টা অস্ত্র। আর সেটা তারা ব্যবহার করতেও শুরু করে দিয়েছে। বাংলার একটা বিশাল অংশের মানুষ ওপারের। তার প্রভাব ইভিএমে পড়তে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন- বাংলায় বিজেপির হাতিয়ার CAB, মোকাবিলায় দলকে পার্টিলাইন বাতলে দেবেন নেত্রী