প্রস্তাবিত জমি বিলের বিরোধিতা বণিকসভার
কেন্দ্রের আনা বর্তমান জমি বিল আদৌ শিল্পবান্ধব নয়। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকার পক্ষে সওয়াল করে এমনই অভিযোগ করল বণিকসভা সিআইআই। জমি বিলে সংশোধনীর সুপারিশ করে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট জমা দেয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
কেন্দ্রের আনা বর্তমান জমি বিল আদৌ শিল্পবান্ধব নয়। শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকার পক্ষে সওয়াল করে এমনই অভিযোগ করল বণিকসভা সিআইআই। জমি বিলে সংশোধনীর সুপারিশ করে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট জমা দেয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বলা হয়, বেসরকারি বা সরকারি-বেসরকারি লাভজনক প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না সরকার। সিআইআই-এর অভিযোগ, এর ফলে ব্যাহত হবে শিল্পায়ন।
গত সেপ্টেম্বরে লোকসভায় পেশ হয় জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পুনর্স্থাপন বিল। বেসরকারি সংস্থার জন্য সরকার কোনওভাবেই জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না বলে দাবি জানায় তৃণমূল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সহমতে পৌঁছতে বিলটিকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠায় কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার, সংসদে রিপোর্ট জমা দেয় কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিকাঠামো ও সামাজিক ক্ষেত্র ছাড়া বেসরকারি সংস্থার লাভজনক প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে না সরকার। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সরাসরি জমি মালিকের কাছ থেকে জমি কিনতে হবে। সামগ্রিকভাবে সরকারের আনা জমি বিলের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিআইআই-এর প্রেসিডেন্ট আদি গোদরেজ।
বণিকসভাটির বক্তব্য, শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে সরকারের ভূমিকা থাকা উচিত। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ এমনভাবে ঠিক করতে হবে যাতে শিল্প সংস্থাগুলির পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব হয়। অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হলে শিল্পায়ন, আর্থিক বিকাশ, কর্মসংস্থান, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে বলে মনে করছে সিআইআই। তাদের আশঙ্কা, শহরাঞ্চলে জমির বাজারদরের দ্বিগুণ ও গ্রামাঞ্চলে চারগুণ দাম দেওয়ার পরও ১০০ শতাংশ সোলাসিয়াম দিতে হলে শিল্প স্থাপনের খরচ বাড়বে। সেচযোগ্য বহু ফসলি জমি অধিগ্রহণ না করা এবং গ্রামে একশো ও শহরে পঞ্চাশ একরের বেশি জমি নিলেই তা অধিগ্রহণ আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে সিআইআই। তাদের দাবি, আশি শতাংশ মালিক ক্ষতিপূরণ পেলেই প্রকল্পের জমি শিল্প সংস্থার হাতে তুলে দিতে হবে।
বাদ দিতে হবে কোনও প্রকল্পের জন্য অন্তত আশি শতাংশ জমি মালিকের সম্মতি আদায়ের ধারাটি। অধিগ্রহণের ১০ বছরের মধ্যে শিল্প না-হলে জমি ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবেও আপত্তি রয়েছে সিআইআই-এর। তাদের দাবি, এক্ষেত্রে প্রতিটি প্রকল্পকে আলাদা আলাদাভাবে বিচার করতে হবে।
জমিদাতা পরিবারগুলির আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনুযায়ী তাদের আলাদা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা ও পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের জটিলতায় শিল্প স্থাপনে যাতে দেরি না-হয়, তা নিশ্চিত করায় জোর দিয়েছে সিআইআই।
সব মিলিয়ে কেন্দ্রের আনা জমি বিলটিকে সামগ্রিকভাবে খারিজ করে দিয়েছে সিআইআই। স্থায়ী কমিটির সুপারিশের সঙ্গে একমত নন খোদ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশও। এখন সংসদে কী চেহারায় সরকার ফের জমি বিল পেশ করে, বিলের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হয় কিনা সেদিকেই তাকিয়ে তামাম দেশবাসী।