১৯ জন মহিলাকে প্রতারণার পর অবশেষে পুলিসের জালে প্রতারক

অভিনব প্রতারণা। বিবাহযোগ্য মহিলাদের সঙ্গে আলাপ জমানো। আলাপ গভীর হলে বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করা। আশীর্বাদের আংটি এবং অন্যান্য মূল্যবান উপহার নিয়ে গা ঢাকা দেওয়া। ১৯ জন মহিলাকে প্রতারণার পর অবশেষে পুলিসের জালে ধরা পড়ল প্রতারক।

Updated By: Dec 30, 2014, 10:04 PM IST
১৯ জন মহিলাকে প্রতারণার পর অবশেষে পুলিসের জালে প্রতারক

ওয়েব ডেস্ক: অভিনব প্রতারণা। বিবাহযোগ্য মহিলাদের সঙ্গে আলাপ জমানো। আলাপ গভীর হলে বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করা। আশীর্বাদের আংটি এবং অন্যান্য মূল্যবান উপহার নিয়ে গা ঢাকা দেওয়া। ১৯ জন মহিলাকে প্রতারণার পর অবশেষে পুলিসের জালে ধরা পড়ল প্রতারক।

হাসি হাসি মুখ করে এই যে লোকটি বিয়ের আশীর্বাদের আংটি পরছে, আসলে সে কলকাতার নামকরা চিটিংবাজ। তবে ছুঁচো মেরে হাতগন্ধ করে না। এই চিটিংবাজ বেছে বেছে টার্গেট করে বিবাহযোগ্যা মহিলাদের। বিশেষত যদি সেই মহিলা বিধবা বা ডিভোর্সি হন। প্রতারণার ছকটাও খুব পরিকল্পিত। নামকরা ম্যারেজ ওয়েব পোর্টালে নিজের ভুয়ো প্রোফাইল। সেই প্রোফাইলে সাড়া দিলেই বিপদ। কখনও নিজেকে আইপিএস অফিসার, কখনও বা এনআইএ-র আধিকারিক পরিচয় দিয়ে পাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমানো। আলাপ গভীর হলে বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করা।

আশীর্বাদের আংটি এবং অন্যান্য মূল্যবান উপহার নেওয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার সঙ্গে বিভিন্ন অছিলায় মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া। তারপর বিয়ের দিন এগিয়ে আসতেই গা ঢাকা দেওয়া। এই একই কায়দায় এক নয়, দুই নয়, ১৯জন মহিলাকে প্রতারণা করেছে এই যুবক। নাম অনির্বাণ কাঞ্জিলাল ওরফে কুণাল। কুণালের সর্বশেষ শিকার চব্বিশ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনে।

পেশায় স্কুলশিক্ষিকা, বিবাহবিচ্ছিন্না এই মহিলা একটি ম্যারেজ পোর্টালে কুণালের প্রোফাইল দেখে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আসলে যে কুণাল বিবাহিত এবং একটি সাত বছরের পুত্রের পিতা, সেই কুণাল ম্যারেজ পোর্টালে নিজেকে দক্ষিণ কলকাতার একটি এলাকার বাসিন্দা বলে দাবি করে। বাস্তবে কুণালের বাবা মৃত কিন্তু মা জীবিত। এঁরা প্রত্যেকেই কামালগাজির কাছে একটি দুকামরার ফ্ল্যাটে থাকেন। কিন্তু পোর্টালে কুণাল পিতৃমাতৃহীন। পাছে বাবা-মায়ের সঙ্গে পাত্রীপক্ষ দেখা করতে চায়, সেই জন্যই এই গল্প ফাঁদা।

এখনও পর্যন্ত একই ধরনের সুপরিকল্পিত প্রতারণা করে ১৯জন মহিলার কাছে সবমিলিয়ে ২১ লক্ষ টাকা নিয়েছে কুণাল। দাবি বারাকপুর কমিশনারেটের। নগদ টাকা ছাড়াও কুণালের ঝুলিতে এসেছে আশীর্বাদের আংটি, দামি জামাকাপড়, জুতো এবং অন্যান্য সামগ্রী মিলিয়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার জিনিস। সুকৌশলে নিজের মোবাইল নম্বর বদলে ফেলত কুণাল। বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের নাম করে পাত্রীর কাছ থেকে নিত ভোটার আইকার্ডের জেরক্স এবং দু কপি ছবি। সেগুলি দেখিয়ে নেওয়া হত নতুন সিম। একটি সিম নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে আগের সিম ফেলে দিত কুণাল।

প্রায় নিখুঁত এবং ফুলপ্রুফ এই প্রতারণা দেখে বিস্মিত বারাকপুর কমিশনারেটও। পুলিসের দাবি, প্রতারিত মহিলারা যদি আগেই থানায় অভিযোগ জানাতেন, তাহলে কুণালকে অনেক আগেই ধরা যেত। তবে সব ভাল যার শেষ ভাল। কুণাল আপাতত পুলিস হেফাজতে।

.