সিবিআইয়ে বিরূপ কেন মমতা- চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ প্রতিবেদন

একসময়ে প্রায় সব ইস্যুতেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখন সিবিআই নিয়ে তাঁর গলাতেই উল্টো সুর। হঠাত্‍ কেন সিবিআইতে বিরূপ মুখ্যমন্ত্রী? চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ প্রতিবেদন।

Updated By: May 9, 2013, 05:29 PM IST

একসময়ে প্রায় সব ইস্যুতেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এখন সিবিআই নিয়ে তাঁর গলাতেই উল্টো সুর। হঠাত্‍ কেন সিবিআইতে বিরূপ মুখ্যমন্ত্রী? চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ প্রতিবেদন।
সারদা কাণ্ডে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি। সিবিআই তদন্তের দাবিতে সোচ্চার বিরোধীরা। বামফ্রন্ট থেকে কংগ্রেস সব দলই সিবিআই তদন্তের দাবি সোচ্চার হয়েছে। একমাত্র আপত্তি মুখ্যমন্ত্রীর।
 
ক দিন ধরেই মমতা তীব্র কটাক্ষ করছেন সিবিআইকে। ফেসবুকে তাঁর পোস্ট। কদিন আগেই এক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, `দেখুন সুপ্রিম কোর্ট কী বলছে? সিবিআই খাঁচা বন্দি তোতা পাখি। প্রভুর শেখানো বুলি আওড়ায়। আপনারা মতামত দিন`।..
 
হঠাত্‍ করে সিবিআইয়ের প্রতি এতটা অনাস্থা কেন মুখ্যমন্ত্রীর? বিরোধী নেত্রী থাকার সময় কিন্তু যে কোনও ঘটাতেই সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হতে দেখা যেত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে যে কটি সিবিআই তদন্ত চলছে তার অধিকাংশই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবিতে শুরু হয়েছে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যে সিবিআই তদন্ত---
ছোট আঙারিয়া গণহত্যা-
২০০১ সালের ৪ জানুয়ারি। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর নতুন করে ফের তদন্ত শুরু।
 
নোবেল চুরি-
২০০৪ শান্তি নিকেতন থেকে নোবেল চুরি হয়। সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
 
তাপসী মালিক হত্যা-
২০০৬ সিঙ্গুরের জমিতে পাওয়া যায় তাপসী মালিকের দেহ। তদন্ত শুরু করে সিবিআই।
এক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্তের দাবিতে পথে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
 
নন্দীগ্রামে পুলিসের গুলি-
২০০৭ সালে পুলিসের গুলিতে নন্দীগ্রামে চোদ্দজন মারা যান। পনেরো তারিখ থেকেই শুরু হয় সিবিআই তদন্ত। তদন্ত এখনও চলছে।
 
রিজওয়ানুর রহমানের অস্বাভাবিক মৃত্যু-
২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে রেল লাইন থেকে উদ্ধার রিজওয়ানুর রহমানের দেহ। এক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্তের দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
 
জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতা-
২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতায় প্রাণ হারান ১৪৮ জন যাত্রী। এখনও সিবিআই তদন্ত চলছে।
 
নেতাই হত্যাকাণ্ড-
২০১১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতাইয়ে সংঘর্ষে মারা যান সাতজন গ্রামবাসী।
 
গুড়িয়া কাণ্ড-
২০১২ সালের জুনে হুগলির গুড়াপে গুড়িয়ার দেহ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। 
 
সিবিআই তদন্তের দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হওয়ার এই তালিকা আরও দীর্ঘ। কিন্তু সারদা কাণ্ডে লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বান্ত হওয়ার পরও সিবিআই মানতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। কেন?
 
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সিবিআই তদন্ত হাতে নিলে এমন অনেক গোপন তথ্য উঠে আসতে পারে অথবা তৃণমূল কংগ্রেসের এমন অনেক প্রথম সারির নেত-নেত্রীর নাম জড়িয়ে পড়তে পারে যা অস্বস্তি বাড়াবে তৃণমূল শিবিরের। আর সম্ভবত সেই কারণেই সিবিআইয়ে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী।   

.