Anubrata on Cattle Smuggling: ইলামবাজারের হাট থেকে সীমান্ত, কীভাবে চলত গোরুপাচার, কারা পেতেন বিপুল সেই টাকা!
অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল এনামূল হককে। এই এনামূলকেই গোরু পাচারের মূল চক্রী বলে মনে করা হচ্ছে। পাচারের টাকা এই এনামূলের কাছ থেকেই প্রভাবশালীদের কাছে যেত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
পিয়ালি মিত্র: গোরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে নিজাম প্যালেসে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এই মামলায় বেশ কয়েকজন অভিযুক্তের বয়ান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে সিবিআই। সেইসব তথ্যপ্রমাণকে সামনে রেখে অনুব্রতর কাছে থেকে বেশকিছু তথ্য জানতে চাইছে সিবিআই। কিন্তু কীভাবে পরিচালিত হতো বিপুল টাকার ওই গোরুপাচার চক্র? জানা যাচ্ছে, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মালদহ-মুর্শিদাবাদ সীমান্তের দায়িত্বে ছিলেন বিএসএফ আধিকারীক সতীশ কুমার। সেই সময় মোট ২০ হাজার গোরু ধরা পড়ে। কিন্তু পাচারের জন্য কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং আটক করা গোরুগুলিকে বাছুর হিসেবে দেখানো হয়। এবার ওইসব গোরুগুলিকে কম দামে নিলাম করা হতো এবাং তা বিক্রি করা হতো গোরুপাচারে মূল অভিযুক্ত এনামূল হককে। এর জন্য প্রতি গোরুতে সতীশ কুমার পেতেন ২০০০ টাকা। শুল্ক দফতরের আধিকারিক পেতেন ৫০০ টাকা।
আরও পড়ুন-তেরঙায় মুড়লেন নিজের ইনস্টাগ্রাম! স্বাধীনতা দিবসের আগে বিরাট বার্তা ধোনির
নিলামে যেসব গোরু বিক্রি হতো তা চলে যেতে ইলামবাজারের হাটে। অভিযোগ, এখান থেকে দুভাবে লাভবান হতেন অনুব্রতর মতো প্রভাবশালীরা।
গোরুর লরি জেলাতে প্রবেশ করতে দেওয়া বাবদ টাকা। তারপর ইলামবাজার হাট থেকে সীমান্ত পার করতে সেফ প্যাসেজ করে দেওয়া বাবদ টাকা।
অভিযোগ, হাট থেকে শুরু করে বাংলাদেশে গরু পাচারের ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা না হয় যে কাজ দেখভাল করতো সায়গল হোসেন।
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল এনামূল হককে। এই এনামূলকেই গোরু পাচারের মূল চক্রী বলে মনে করা হচ্ছে। পাচারের টাকা এই এনামূলের কাছ থেকেই প্রভাবশালীদের কাছে যেত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বিএসএফের সাহায্য নিয়েই চলত পাচার। ফলে ওই মামলায় ইতমধ্যেই বিএসএফ আধিকারিক সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোরু পাচারের ক্ষেত্রে এনামূল হক, সতীশ কুমার ছাড়াও বয়ান নেওয়া হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। এদের মদতেই অবাধে জেলা পার বা ইলামবাজের হাটে আসতে গোরু। এমনটাই তদন্তে উঠে আসছে। এদের সবার বয়ানকে সামনে রেখে অনুব্রতর কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানাতে চাইছেন তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই অনুব্রতর বিরুদ্ধে বেশকিছু কড়া তথ্যপ্রমাণ হাতেও পেয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, অনুব্রতর কাছ থেকে তদন্তকারীরা যেটা জানতে চান তা হল, মালদহ, মুর্শিদাবাদ সীমান্তে ২০১৫-২০১৭ সালে যেসব গোরু ধরা পড়ে সেগুলোকে বাছুর দেখিয়ে এনামূল হক সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। ওইসব গোরু বিক্রি বা সীমান্ত পার করে দিয়ে বিপুল টাকা পেয়েছেন অনুব্রত। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা তিনি কী করেছেন বা কার নির্দেশে তা তিনি করতেন তা জানাতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি পাচার থেকে পাওয়া বিপুল টাকা কোথায় গচ্ছিত রাখা হয়েছে তাও জানাতে চাইছেন তাঁরা।