এবার কার্টুন কাণ্ডে মানবাধিকার কমিশনের নিশানায় রাজ্য
সাম্প্রতিক অতীতে সিঙ্গুর জমি মামলা, হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় হাইকোর্টের নিশানা হয়েছে রাজ্য। এবার ধাক্কা এল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে। যাদবপুর কার্টুন কাণ্ডের জেরে রাজ্য সরকারকে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
সাম্প্রতিক অতীতে সিঙ্গুর জমি মামলা, হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায় হাইকোর্টের নিশানা হয়েছে রাজ্য। এবার ধাক্কা এল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে। যাদবপুর কার্টুন কাণ্ডের জেরে রাজ্য সরকারকে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
মুখ্যমন্ত্রীর কার্টুন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আপলোড করার অভিযোগে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র ও সুব্রত সেনগুপ্তকে গ্রেফতার করেছিল পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিস। সেই ঘটনা সুয়ো মোটো তদন্ত করে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। ওই ঘটনায় অম্বিকেশ মহাপাত্র ও সুব্রত সেনগুপ্তের সম্মানহানি হয়েছিল বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। তাই, দু'জনকে ৫০,০০০ টাকা করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক ও তাঁর সঙ্গীকে হেনস্তার অভিযোগে পূর্ব যাদবপুর থানার দুই পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন। অতি সক্রিয়তার জন্য পূর্ব যাদবপুর থানার অ্যাডিশনাল ওসি মিলনকুমার দাস ও সাব ইনন্সপেক্টর সঞ্জয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মুখ্যমন্ত্রীর অপছন্দের কার্টুন ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়াসনের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। অম্বিকেশ মহাপাত্র যে অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন, তার কো-অপারেটিভের সেক্রেটারি সুব্রত সেনগুপ্তকেও গ্রেফতার করা হয়।
১২ এপ্রিল রাতে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর ওপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। নিজেদের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচয় দেয় তারা। হামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, অম্বিকেশ মহাপাত্র সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত। অধ্যাপককে মারধর করার পাশাপাশি, তাঁকে দিয়ে "আমি সিপিআইএমের সক্রিয় সদস্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ইমেল পাঠিয়েছি" বলে মুচলেকা লিখতে বাধ্য করা হয়।"
এর পর পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিসের হাতেও অম্বিকেশ বাবুকে তুলে দেয় হামলাকারীরা। হাউসিং সোসাইটির মেল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যঙ্গচিত্র শেয়ার করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সোসাইটির সেক্রেটারি সুব্রত সেনগুপ্তকেও। অম্বিকেশ ও সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৯ ও ৫১৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়। পাশাপাশি, সাইবার আইনের ৬৬-এ ধারাতেও অভিযোগ আনা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে।
তবে ১৩ এপ্রিল আদালতে পেশ করার পরই জামিনে মুক্তি পান তাঁরা। কিন্তু মামুলি ব্যঙ্গচিত্র কাণ্ডের জন্য নাগরিক সমাজের দুই প্রতিনিধিকে পুলিসি হেনস্তার ঘটনা নিয়ে এদিন কড়া প্রতিক্রিয়া জানাল মানবাধিকার কমিশন। আর সেই সঙ্গে নতুন করে সামনে এনে দিল, পরিবর্তন-পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গে গণতান্ত্রিক আবহ আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিবেশ সম্পর্কিত বিতর্কিত প্রশ্নগুলোও।