কলকাতায় নামছে ঝাঁ চকচকে নতুন বাস
ফের বাস ভাড়ার দাবিতে বাস মালিকরা একজোট। বুধবার মহাকরণে পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বসলেন বাস মালিকদের সবকটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিগত ৯ মাসে ৮ বার জ্বালানির দাম বেড়েছে, তাই আর চলতি ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয় বলে দাবি বাসি মালিকদের। শেষ বার বাস ভাড়া বেড়েছিল গত বছর অক্টোবর মাসে।
কলকাতার রাস্তায় পুরনো রংচটা বাসের বদলে নামবে ঝাঁ চকচকে নতুন বাস। মূলত এই ভাবনা থেকে ২০০৯ সালের অক্টোবরে জহরলাল নেহেরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের বিশেষ প্রকল্পের জন্ম। প্রকল্পের রূপকার কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক। বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল রাজ্যের পরিবহণ দফতর। বেঙ্গালুরুর ২টি সংস্থা এজিসিএল এবং এএলএমআই কে নতুন বাস তৈরির বরাত দেওয়া হয়।
একেকটি বাসের দাম ধার্য হয় ১৯ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা। ঠিক হয় এরমধ্যে কেন্দ্র দেবে ৩৫ শতাংশ। রাজ্য সরকার দেবে ১৫ শতাংশ। বাকি পঞ্চাশ শতাংশ মেটাবেন মালিকরা। বাসপিছু ২ লক্ষ টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট রেখে রাস্তায় নামে বাস।
বেসরকারি মালিকরা কেনেন ৬৮৫ টি। তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পরিবহণ নিগম কেনে আরও ৬০২ টি বাস। এরমধ্যে সিএসটিসি ৪০২, সিটিসি ৮০টি এবং হিডকো ১২০টি বাস কেনে।
এই সংস্থাগুলি এখনও পর্যন্ত মাসিক কিস্তির বেশিরভাগ টাকা মেটায়নি বলেই পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। অন্যদিকে বাস চালাতে গিয়ে মাথায় বাজ পড়ে বেসরকারি মালিকদের। ব্যয়বহুল রক্ষণাবেক্ষণের বোঝা বইতে না পেরে রাস্তা থেকে একের পর এক উধাও হতে শুরু করে জেএনএনইউআরএম (JNNURM)- এর বাসগুলি। আজকের তারিখে রাস্তায় চলা বাসের সংখ্যা মাত্র ৯৮টি। বাকি ৫৮৭ টি বাস বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন মালিকরা।
নেহেরু মিশনের বাসগুলিতে টিকিট বেচে মালিকের দৈনিক আয় ৬০০০ টাকা। কিছু রুটে শুধু এই নতুন বাসগুলিই চলছে। সেখানে ভাড়া সাধারণ রুটের থেকে একটাকা বেশি। যেমন-জিএম থ্রি(JM 3), ২৪ এ/১ (24 A/1), জিএম ফোর (JM 4), ডিএন১৭ (DN 17)।
এই রুটগুলিতে সবমিলিয়ে বাসের সংখ্যা ৭৮। কিন্তু বাকি রুটে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে মিশ্র বাস রয়েছে। সেখানে সাধারণ বাসের ভাড়াই প্রযোজ্য। সেখানে কয়েকশো বাসের মধ্যে আপাতত চালানো হচ্ছে মাত্র ২০টি। কারণ নতুন বাসগুলিতে সুপার ডিজেল প্রয়োজন। যার দাম ৭৫ টাকা ১৬ পয়সা।
প্রতিদিন তেলবাবদ বাসপিছু ব্যায় ৪০৯০ টাকা। পুলিস কেস বাবদ ২০০ টাকা। খুচরো পয়সার বাট্টা ৩০০ টাকা। সিন্ডিকেটের চাঁদা ১৫০ টাকা। ৫০ টাকা করে ৬টি চাকার দৈনিক ভাড়া ৩০০ টাকা। চালকের কমিশন ৭২০ টাকা। ২ কন্ডাক্টরের কমিশন ৭২০ টাকা। মোট ৬৪৮০ টাকা। সিন্ডিকেট যদি চাঁদা মকুব করে তাহলেও প্রতিদিন নেট লোকসান ১৮০ টাকা। এই অবস্থায় প্রতিমাসে বাসের ঝণ ইএমআই বাবদ ২২ হাজার টাকা শোধ করা সম্ভব নয় বলে বাসমালিকদের দাবি।
এদিকে, ফের বাস ভাড়ার দাবিতে বাস মালিকরা একজোট। বুধবার মহাকরণে পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বসলেন বাস মালিকদের সবকটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিগত ৯ মাসে ৮ বার জ্বালানির দাম বেড়েছে, তাই আর চলতি ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয় বলে দাবি বাসি মালিকদের। শেষ বার বাস ভাড়া বেড়েছিল গত বছর অক্টোবর মাসে।