অসুস্থতা উপেক্ষা করেই ব্রিগেডে এলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গাড়িতে বসেই শুনলেন বক্তৃতা
শারীরিক অসুস্থতার কারণে মঞ্চে উঠতে পারেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
নিজস্ব প্রতিবেদন : অসুস্থ শরীর। দীর্ঘদিন বাড়ির বাইরে বেরননি। কিন্তু ব্রিগেডে না এসে আর থাকতে পারলেন না। অসুস্থতাকে উপেক্ষা করে অশক্ত শরীরেই ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে এলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
২০১৫-র সালের শেষ ব্রিগেড সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু তারপর ৩ বছর সময় পেরিয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে অসুখ থাবা বসিয়েছে শরীরে। দীর্ঘদিন আর বাড়ির বাইরে বেরননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। শারীরিক অসুস্থতা উপেক্ষা করে এবারের ব্রিগেডে বুদ্ধবাবু উপস্থিত থাকতে পারবেন কি না? সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাম মহলেও চলছিল জল্পনা।
প্রসঙ্গত, ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এদিনের সমাবেশে শেষপর্যন্ত আর উপস্থিত থাকতে পারেননি তরুণ বাম নেতা, এবারের ব্রিগেডের অন্যতম আকর্ষণ কানহাইয়া কুমার। কানহাইয়ার আসা বাতিল হতেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সমাবেশে নিয়ে আসার জন্য বাম শিবিরে শুরু হয়ে যায় জোর তত্পরতা। শেষে রবিবার সকালে সিপিআইএম-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দেন, ব্রিগেডে আসবেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চিকিতসকের পরামর্শ মেনেই ব্রিগেডে আসবেন তিনি। চিকিতসকের পরামর্শ মতো সব ব্যবস্থাই থাকবে বলে জানান ইয়েচুরি। আর এখানেই প্রশ্নটা উঠছে, বাম ব্রিগেডে অক্সিজেন জোগাতেই অসুস্থ শরীরে কি 'টেনে আনা হল' বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে?
বেলা দেড়টা নাগাদ দেখা যায়, সস্ত্রীক পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সস্ত্রীক গাড়িতে ওঠেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। গাড়িতে ওঠার সময় হাত নাড়তেও দেখা যায় তাঁকে। তারপর সেই গাড়িতেই সোজা ব্রিগেড সমাবেশে উপস্থিত হন বুদ্ধবাবু। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাদা গাড়িটা যখন ব্রিগেডে ঢোকে, তখন খুব স্বাভাবিকভাবেই সমাবেশে যোগ হয় অন্য মাত্রা। ব্রিগেডে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ি পৌঁছনো মাত্রই উল্লাসে ফেটে পড়েন বাম কর্মী, সমর্থকরা। সমাবেশে পৌঁছে গাড়ি থেকে মুখ বের করে কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে একবার হাত নাড়ার চেষ্টা করেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গেই প্রিয় নেতাকে একপলক চোখে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন সমবেত বাম কর্মী, সমর্থকরা। কিন্তু গাড়ি থেকে আর বেরতে পারেননি বুদ্ধবাবু।
(মঞ্চের নীচে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ি)
আরও পড়ুন, "মমতাজি স্বীকার করুন আপনি প্রশাসনের অপব্যবহার করবেন না", ফোনে হুঁশিয়ারি যোগীর
শারীরিক অসুস্থতার কারণে মঞ্চে উঠতে পারেননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মঞ্চের নীচে একদম সামনে রাখা হয় তাঁর গাড়ি। সেই গাড়িতে বসেই ব্রিগেডের বক্তৃতা শোনেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আধঘণ্টা মতো সময় সভাস্থলে ছিলেন তিনি। তারপর বাড়ি ফিরে যান। প্রসঙ্গত, সমাবেশের আগের দিনই দলীয় মুখপত্রে একটি বার্তা দেন বুদ্ধবাবু। সেই বার্তায় লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। ঘুরে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় পাঠ করা হয় তাঁর সেই বার্তা।