পুরভোটে ব্যর্থতার পর শাসকদলের বিরুদ্ধে রাজ্য বিজেপির কাঁটা হয়ে ফিরে এল সারদা ইস্যুই
লোকসভা ভোটের সময় সারদা ইস্যুকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল গেরুয়া শিবির। যার ফলে সেসময় বিজেপির জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু পুরভোটে দলের হতাশাজনক পারফর্মেন্সের জন্য সেই সারদা ইস্যুকেই দায়ি করেছেন বিজেপির সাধারণ কর্মী ও সমর্থকরা।
লোকসভা ভোটের সময় থেকেই সারদা কেলেঙ্কারিকে ইস্যু করেই এ রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বিজেপি নেতৃত্ব। সারদা ইস্যুতে শাসকদলকে কোণঠাসা করায় ক্রমশ উর্ধমুখী হয় বিজেপির জনপ্রিয়তার গ্রাফ। ধর্মতলায় দলের সমাবেশে সারদা তদন্তকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করেছিলেন সিদ্ধার্থনাথ সিং। কিন্তু, পুরভোটে দলের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর সেই সারদা ইস্যুই ফিরে আসছে রাজ্য বিজেপির কাঁটা হয়ে। বিজেপির সাধারণ কর্মীসমর্থকেরা প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন,
কেন মাঝপথে থমকে গেল সারদা তদন্তের গতি?
কেন মুকুল রায়কে সিবিআই একবার জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে আর কোনও অগ্রগতি হল না?
কেন নতুন করে আর কাউকে জেরা করল না সিবিআই?
বিজেপি কর্মীদের দাবি, পুরভোটের প্রচারে গিয়ে সাধারণ মানুষের সারদা তদন্ত সংক্রান্ত এধরনের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারেননি তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত দলের রাজ্য নেতৃত্বও। পুরভোট নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দেওয়া রিপোর্টেও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তাঁরা। এপ্রসঙ্গে উঠে আসছে অন্য একটি বিষয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় এই মুহুর্তে তৃণমূলের সমর্থন পেলে রাজ্যসভায় সুবিধা হবে বিজেপির। ইতিমধ্যেই খনি বিলে কেন্দ্রকে সমর্থন দিয়েছে তৃণমূল। অধিবেশন বয়কট করে কার্যত সমর্থন করেছে বিমা বিল।
স্থল সীমান্ত হস্তান্তর চুক্তি বিল এবং পণ্য পরিষেবা কর বিল পাস করানোর বিষয়েও বিজেপিকে আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি সরকারকে ইস্যুভিত্তিক সমর্থনের কথা বলেছেন ডেরেক ও ব্রায়েন। তাহলে কি তৈরি হচ্ছে নতুন কোনও সমীকরণ? এই কারণেই কি থমকে গেল সারদা তদন্ত? এমন সব প্রশ্ন ঘিরেও চলছে জল্পনা। সারদাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তরা সবাই তৃণমূলের, এমনই অভিযোগ ছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের। ফলে, সারদা তদন্ত ইস্যুতে দলীয় কর্মীদের দ্বিধা-ক্ষোভ ও সংশয়ের মধ্যে কীভাবে দুহাজার ষোলের ফাইনালের জন্য তৈরি হবে দল? এনিয়ে রীতিমতো ভাবিত বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব।