'হস্তক্ষেপ নয়', পুজো অনুদান মামলায় হাইকোর্টে জয় রাজ্যের
আর্থিক বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত। আইনসভা যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে, সেই সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদন : হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের স্বস্তি। পুজো অনুদান মামলায় জয় হল রাজ্যের। রাজ্যের সিদ্ধান্তে নাক গলাবে না আদালত। সাফ জানিয়ে দিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে খারিজ করে দেওয়া হল পুজোয় ক্লাবগুলিকে অনুদান প্রসঙ্গে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলাটি। এদিন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চে অনুদান মামলার রায় ঘোষণা হয়।
আদালত জানিয়েছে, আর্থিক বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত। আইনসভা যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে, সেই সিদ্ধান্ত-ই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। আইনসভার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। পাশাপাশি হাইকোর্ট আরও বলে, আইনসভার সিদ্ধান্তে নাক গলানোর অধিকার জনগণের নেই। প্রসঙ্গত, জনগণের টাকা নিয়ে নয়ছয় করা হচ্ছে মামলাকারীর এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ খুব সুনির্দিষ্ট।
আরও পড়ুন, 'ধর্ষণ'-এ বাধা! নাবালকের যৌনাঙ্গ পুড়িয়ে দিল যুবতী
হাইকোর্টের মতে, টাকা জনগণের হলেও রাষ্ট্র কোনও সিদ্ধান্ত নিলে, সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যেককে মানতে হবে। রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রতি ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলা হলে, রাষ্ট্রের সঙ্গে জনসাধারণের বিশ্বাসের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। তা হতে দেওয়া যায় না। তাই রাজ্যের সিদ্ধান্তে আদালত নাক গলাবে না। টাকা ঠিকমতো খরচ হচ্ছে কি না, সেটা পরে বিবেচনা করে দেখা হবে। আপাতত মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ নয়।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ অনুদান বিলিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেয়। স্থির হয়, ৯ অক্টোবর মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগে কোনও ক্লাবকে অনুদান দেওয়া যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিষ করগুপ্ত। মঙ্গলবার শুনানির পর সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন, ধেয়ে আসছে 'তিতলি', পশ্চিমবঙ্গে প্রবল দুর্যোগের সম্ভাবনা
কিন্তু, গতকালই শুনানির সময় প্রশ্ন ওঠে, এই মামলা আদৌ আদালতে গ্রহণযোগ্য কি না? ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানান, বুধবার এই বিষয়ে রায় ঘোষণা করবে আদালত। এরপরই এদিন জনস্বার্থ মামলাটি খারিজের সিদ্ধান্ত নেয় ডিভিশন বেঞ্চ। সাফ জানিয়ে দেয়, রাজ্যের সিদ্ধান্তে নাক গলাবে না হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, শুনানির সময় বার বারই মামলাকারীর তরফে অভিযোগ করা হয়, জনগণের টাকা নিয়ে 'নয়ছয়' করা হচ্ছে। আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য যুক্তি দেন, "পুজোর জন্য এই বরাদ্দ অসাংবিধানিক। কারণ, আদালত ইমাম ভাতাও অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছে।" যার পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণের টাকা ঠিক কী খাতে ব্যবহার করা হচ্ছে? গাইডলাইন ছাড়াই কি প্রত্যেক পূজো কমিটি টাকা পাচ্ছে? চেক ভালভ কি কিছু আছে? কোন মাপকাঠিতে ২৮ হাজার পুজো কমিটিকে আর্থিক অনুদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়? রাজ্যের কাছে এইসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চান বিচারপতিরা। উল্লেখ্যে, বিচারপতিদের প্রশ্নের উত্তরে শুনানির প্রথম দিন-ই সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছিলেন, ক্লাবকে দেওয়া এই টাকা সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।