বিধানসভার অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় রাজনীতি, মুখে গণতন্ত্র-সৌজন্যের কথা

বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে বারবার এল গণতন্ত্রের কথা। শোনালেন বিধানসভায় গণতন্ত্র রক্ষায় সদস্যদের দায়িত্বের কথা। গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব যে বিরোধীদেরও সে কথাও মনে করিয়ে দিতে ভুললেন না।

Updated By: Dec 4, 2013, 07:18 PM IST

বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে বারবার এল গণতন্ত্রের কথা। শোনালেন বিধানসভায় গণতন্ত্র রক্ষায় সদস্যদের দায়িত্বের কথা। গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব যে বিরোধীদেরও সে কথাও মনে করিয়ে দিতে ভুললেন না।

বিধানসভায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে রাজনীতি করার জায়গা নয়। বিধানসভায় বিরোধীদের অনুপস্থিতির জবাবে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ নন।

সেটা ২০০৬ সালের তিরিশে নভেম্বর। তখন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রধান বিরোধী দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিঙ্গুরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এই অজুহাতে সোজা বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তারপর বিধানসভায় নির্বিচার ভাঙচুর। সক্রিয় তত্কালীন বিরোধী দলনেতা, এখনকার পরিষদীয় মন্ত্রী, বিধানসভার এখনকার ডেপুটি স্পিকার, সক্রিয় এখনকার মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য।

সেদিন বিধানসভায় নির্বিচার ভাঙচুর হয়েছিল আজকের মুখ্যমন্ত্রীর চোখের সামনেই। সময় বদলে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, গণতন্ত্র শুভ হোক। বিকশিত হোক। আজকের মুখ্যমন্ত্রী শোনালেন সৌজন্যের কথাও।

বিধানসভার পঁচাত্তর বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। এটা কেমন সৌজন্য? উত্তর দেননি মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে, বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানবয়কটের সিদ্ধান্তে অনড় কংগ্রেস পরিষদীয় দল। কী কারণে বয়কট, তা নিয়ে তাঁরা ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে। লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারের সঙ্গেও দেখা করেন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সদস্যরা। তাঁকে তাঁরা জানিয়েছেন অনুষ্ঠান বয়কটের কারণ।

আজ থেকে শুরু হয় বিধানসভার প্ল্যাটিনাম জুবিলির সমাপ্তি অনুষ্ঠান। ডাকা হয় বিশেষ অধিবেশন। বক্তাদের তালিকায় ছিলেন রাষ্ট্রপতি থেকে লোকসভার স্পিকার। অতিথিদের তালিকায় মান্যগণ্যরা। কিন্তু, তারপরেও সর্বাঙ্গসুন্দর হচ্ছে না এই রাজসূয় যজ্ঞ। কারণ, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও বিশেষ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছে না বিরোধী শিবির। অধিবেশন কক্ষে রয়েছেন শুধু তৃণমূল বিধায়করা।

এ দিন অনুষ্ঠান শুরুর আগে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "সূচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল বামেরা। সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও সহযোগিতা করেছে। কিন্তু বিধানসভায় যেসব ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।" এর প্রতিবাদেই ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অধিবেশনে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা।

.