Shankha Ghosh: তাঁর কবিতার আলো সরিয়ে দিক সব অলীক অন্ধকার

অনেকটা অন্ধকার যেন ঘিরে ধরেছে আমাদের এ সময়ের সমাজকে, মন ও মানসিকতাকে। তাঁর কবিতার আলো সরিয়ে দিক এই সব অন্ধকার; তাঁর কবিতার আলো ব্যবহার করে আমরা যেন বুঝতে পারি, এই সব অন্ধকার আসলে অলীক অন্ধকার।

Updated By: Apr 21, 2022, 07:04 PM IST
 Shankha Ghosh: তাঁর কবিতার আলো সরিয়ে দিক সব অলীক অন্ধকার

সৌমিত্র সেন

তিনি মুখ্যত কবি। কিন্তু ভুল হয় না যদি বলা হয়, কাব্য ও গদ্যের সব্যসাচী তিনি। দু'হাতে গদ্য ও কবিতা রচনা করেছেন সমানতালে। তিনি শঙ্খ ঘোষ। তাঁর প্রয়াণের ১ বছর পূর্ণ হল। বাঙালি, বাঙালিপাঠক, বড় বেদনার সঙ্গে শঙ্খ ঘোষের স্মৃতি-তর্পণে মগ্ন আজ।

শঙ্খ ঘোষের প্রভূত বিপুল কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে হয়তো কয়েকটির নাম স্মরণ করা যেতে পারে--
'দিনগুলি রাতগুলি' (১৯৫৬), 'এখন সময় নয়' (১৯৬৭), 'নিহিত পাতালছায়া' (১৯৬৭), 'মূর্খ বড় সামাজিক নয়' (১৯৭৪), 'বাবরের প্রার্থনা' (১৯৭৬),'মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে' (১৯৮৪), 'বন্ধুরা মাতি তরজায়' (১৯৮৪), 'গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ' (১৯৯৪)। 

আর তাঁর গদ্যগ্রন্থ? সে-ও তো মনে ও মননে বিন্যাসে ও বৈচিত্র্যে বিপুল ও গভীর। 'কালের মাত্রা ও রবীন্দ্রনাটক' (১৯৬৯), 'নিঃশব্দের তর্জনী' (১৯৭১), 'ছন্দের বারান্দা' (১৯৭২), 'এ আমির আবরণ' (১৯৮০), 'উর্বশীর হাসি' (১৯৮১) 'শব্দ আর সত্য' (১৯৮২), 'নির্মাণ আর সৃষ্টি' (১৯৮২)।

সাহিত্যরসিক খুঁজে ফেরেন তাঁর 'সুপুরিবনের সারি' (১৯৯০), 'বট পাকুড়ের ফেনা' (২০১১)-র মতো রচনা।

১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম শঙ্খ ঘোষের, মৃত্যু আজকের দিনে, ২১ এপ্রিল, গতবছর, ২০২১ সাল। তিনি কবি, গদ্যকার, নাট্যবিশেষজ্ঞ, সাহিত্য-সমালোচক, একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞও। এবং একজন প্রথিতযশা শিক্ষক। শঙ্খ ঘোষের রবীন্দ্রনাথ এক অন্য-রবীন্দ্রনাথ যেন; ঠিক একাডেমিক চোখ দিয়ে বিশ্লেষণ নয়, বরং কবির মরমি বোধ ও অনুভব দিয়ে শঙ্খ যেন রবীন্দ্রনাথকে দেখেছেন, বুঝেছেন; আমাদেরও দেখিয়েছেন, বুঝিয়েছেন। আমরা নতুন করে সমৃদ্ধ হয়েছি।

তাঁর দীর্ঘ তদ্গত সাধনা তাঁকে সহজ এক স্বাভাবিকতার সুরে বাঙালিচিত্তের সঙ্গে শাশ্বত ভাবে জুড়ে দিয়েছে। এমন ভাবে জুড়ে দিয়েছে যে, জ্ঞাতে-অজ্ঞাতে শঙ্খের কত কাব্যিক উচ্চারণ, কত তির্যকতা, কত রূপক, কত অনুভব অবলীলায় বাঙালির যাপনভাবনার সঙ্গে মিলেমিশে গেছে।

'বাবরের প্রার্থনা'র সেই 'এই তো জানু পেতে বসেছি, পশ্চিম/আজ বসন্তের শূন্য হাত--/ধ্বংস করে দাও আমাকে যদি চাও/আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক। আমারই হাতে এত দিয়েছ সম্ভার /জীর্ণ করে ওকে কোথায় নেবে?/ ধ্বংস করে দাও আমাকে ঈশ্বর/আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক'! যে-পঙক্তি 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে'র মতো কালজয়ী একটি পঙক্তির একটা পোয়েটিক এক্সটেনশন হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে! 

আজ অনেকটা অন্ধকার যেন ঘিরে ধরেছে আমাদের সমাজকে, আমাদের মন ও মানসিকতাকে। তাঁর কবিতার আলো সরিয়ে দিক এই সব অন্ধকার; তাঁর কবিতার আলো ব্যবহার করে আমরা যেন বুঝতে পারি এই সব অন্ধকার আসলে অলীক অন্ধকার।   

আরও পড়ুন: Damayanti Sen: গাংনাপুরে 'ধর্ষণ ও খুন'-র তদন্তেও দময়ন্তী? হাইকোর্টে নির্যাতিতার বাবা

(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

.