শুধু ASI-এর রিপোর্টে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি কী করে রামলালার হল? প্রশ্ন তুললেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়

"শুধু রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্বাস করে এই জমি কার নির্ধারণ, খুবই শক্ত ব্যাপার। কারণ আমার মনে হয়, যে মসজিদগুলি দেশে রয়েছে, তার নীচে ২০০ থেকে ৪০০ বছর আগে কী কাঠামো ছিল,  তা বের করা তো ভীষণ শক্ত।"

Updated By: Nov 9, 2019, 02:04 PM IST
শুধু ASI-এর রিপোর্টে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি কী করে রামলালার হল? প্রশ্ন তুললেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদন : অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতেই হবে রামমন্দির। অযোধ্যা মামলায় আজ ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শর্তসাপেক্ষে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে হিন্দুদের অধিকার দেওয়ার কথা রায়ে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশনাল বেঞ্চ। রায় পড়ে শোনান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রামমন্দির গঠনের জন্য ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩ মাসের মধ্যে এই ট্রাস্ট তৈরি করতে হবে। ট্রাস্ট তৈরির জন্য কেন্দ্রকে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রায়ে। একইসঙ্গে রায়ে বলা হয়েছে, মসজিদ বানানোর জন্য মুসলিম পক্ষকে অযোধ্যাতেই ৫ একর বিকল্প জমি দিতে হবে।

রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, সেখানে মসজিদ ছিল। নামাজ পড়া হত। তবে বাবরি মসজিদ খালি জায়গায় ওপর তৈরি হয়নি। এএসআই-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে মসজিদের নীচে কাঠামোর প্রমাণ মিলেছে। তবে যে কাঠামো ভেঙে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল তাতে ইসলামিক স্থাপত্যের কোনও প্রমাণ মেলেনি। আবার তা যে মন্দির ছিল তাও নির্দিষ্ট ভাবে বলা যায় না। কিন্তু, জমির মালিকানার পক্ষে কোনও আইনি প্রামাণ্য নথি দেখাতে পারেনি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।

অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে শীর্ষ আদালতের এই রায়ের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "রায়ে বেশকিছু কথা বলা হল। কীসের ভিত্তিতে আদালত এই রায় দিল, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আমি এখনও পুরো রায় পড়িনি, তাই জানি না। তবে সংবিধান আসার পর থেকে ওখানে একটা মসজিদ ছিল। সেখানে নামাজ পড়া হত, সেকথা উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আজ হঠাৎ বলা হল ওই জমি রামলালার জমি। এটা কী করে বললেন, তা নিয়েই একটু খটকা লাগছে। শুধু এএসআই-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কী করে এই জমিকে রামলালার বলে স্বীকৃতি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।"

অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "রায়ে বলা হয়েছে যে যেখানে মসজিদ হয়েছে, সেখানে কাঠামো ছিল। তাতে ইসলামিক স্থাপত্যের নিদর্শন নেই। আবার এটাও বলা যায় না যে, সেখানে মন্দির ছিল।  হিন্দুরা যে দাবি করছে, তা শুধুই বিশ্বাসের ভিত্তিতে।  আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই বিশ্বাস। কিন্তু শুধু রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্বাস করে এই জমি কার নির্ধারণ, খুবই শক্ত ব্যাপার। কারণ আমার মনে হয়, যে মসজিদগুলি দেশে রয়েছে, তার নীচে ২০০ থেকে ৪০০ বছর আগে কী কাঠামো ছিল,  তা বের করা তো ভীষণ শক্ত।"

আরও পড়ুন, অযোধ্যায় তৈরি হবে রাম মন্দির, মুসলিমদের বিকল্প জমি, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

অন্যদিকে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতের আরেক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, " অবশেষে বিতর্কের অবসান। আদালতের আঙিনা থেকে অনেক বৃহত্তর ক্ষেত্রে এবার এই বিষয় এল। মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় থাকুক এটাই চাই। বহুদিনের বিতর্কের অবসান ঘটল।"

.