শীর্ষ পুলিস কর্তাদের নির্দেশেই তোলা তোলেন CID -র ইনস্পেক্টররা, অভিযোগ ব্যবসায়ীর
দায়ের করা ওই অভিযোগে সত্যেন্দ্র চন্দ্রলাল নাভালানি নামে ব্যবসায়ীর আরও গুরুতর অভিযোগ এ রাজ্যের পুলিসের বিরুদ্ধে। শীর্ষ পুলিস কর্তাদের নির্দেশই সিআইডির দলটি এই ঘটনা ঘটায় এবং তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করেছেন বলে অভিযোগ।
পিয়ালি মিত্র: সম্প্রতি ডাকাতির অভিযোগ তালতলা, একবালপুর থানার হাতে গ্রেফতার হয় জনা সাতেক পুলিস কর্মীকে। হরিদেবপুরের এক মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ সাসপেন্ড হন এক এসআই। আবারও কাঠগড়ায় সেই পুলিস। এবার রাজ্য সিআইডির এক ইনস্পেক্টর-সহ চারজন বিরুদ্ধ ১০ কোটি টাকার তোলা দাবির অভিযোগ উঠল। মুম্বইয়ের বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী ওয়ারলি থানায় গত সোমবার ওই অফিসার-সহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই ব্যবসায়ীর দাবি, একটি মামলায় সূত্রে সেখানে গিয়ে তার থেকে ১০ কোটি টাকা তোলা চান ওই অফিসাররা। মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন, ১০ হাজার ফিট উঁচু থেকে ঝাঁপ! ভারতীয় সেনার প্রথম মহিলা স্কাইডাইভার ল্যান্সনায়েক মঞ্জু
দায়ের করা ওই অভিযোগে সত্যেন্দ্র চন্দ্রলাল নাভালানি নামে ব্যবসায়ীর আরও গুরুতর অভিযোগ এ রাজ্যের পুলিসের বিরুদ্ধে। শীর্ষ পুলিস কর্তাদের নির্দেশই সিআইডির দলটি এই ঘটনা ঘটায় এবং তাঁর বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করেছেন বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে তোলাবাজি, অপরাধমূলক যড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে মুম্বই পুলিস। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য একাধিক চেষ্টা করলেও সিআইডির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মুম্বইয়ের কোলাবাতে একটি পানশালা রয়েছে ব্যবসায়ীর। মুম্বইয়ের প্রাক্তন এক পুলিস কমিশনার তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে খবর।
ঠিক কী অভিযোগ ওই ব্যবসায়ীর?
তাঁর অভিযোগ, গত মে থেকে নভেম্বরের মধ্যে ১০ কোটি টাকা তোলা দাবি করেন ওই অফিসাররা। তাঁকে ভয় দেখিয়ে ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ। অফিসাররা ওয়ারলির একটি হোটেলে তাঁর সঙ্গে দেখাও করেন। আরও টাকা না দিলে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো এমনকী ওই ব্যবসায়ী ও স্ত্রী খুনেরও হুমকি দেন বলে। গত মে মাস থেকে নভেম্বরের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে বলে ব্যবসায়ীর দাবি।
কিন্তু কোন মামলার সূত্রে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি হল? সূত্রের খবর, চলতি বছরের রাণীগঞ্জের একটি গাড়ি থেকে কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার হয়। তদন্ত করে সেই টাকা নাভালনির বলে অভিযোগে মামলা রুজু করা হয় রাজ্য পুলিসের তরফে। এরপর তদন্ত নামে সিআইডি। বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলা রুজু করা হয়। এখানেই শেষ নয়, নরেন্দ্রপুর থানায় এক ব্যবসায়ী অন্য একটি মামলা রুজু করেন যে তাঁর অফিসের ঠিকানা ব্যবহার করে অনৈতিক কাজ করছেন নাভলানি। ওই মামলায় নাভলানি ও তাঁর স্ত্রীর নামে লুকাউট নোটিস জারি করে সিআইডি। সেই মামলায় মুম্বই বিমানবন্দরে আটক করা হয় ওই ব্যবসায়ী পত্নীকে। অভিযোগ, এই মামলার নামে করেই ১০ কোটি টাকা তোলা চাওয়া হয় এবং দু'দফায় সিআইডির অফিসাররা ২০ লক্ষ টাকা নেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন, Primary TET: সত্যিই টেট দিয়েছিলেন দিলীপ-সুজন-শুভেন্দুরা, হাইকোর্টে জানাল পর্ষদ
সিআইডির এই মামলা খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা করেছেন ওই ব্যবসায়ী। যা বিচারধনী রয়েছে। পাশাপাশি তোলাবাজির অভিযোগে মুম্বই পুলিস ফৌজদারি মামলা রুজু করেছে। ব্যবসায়ীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ওই অফিসারের যে তাঁর কাছে টাকা চাইছেন তার অডিও রের্কডিংয়েও রয়েছে। প্রসঙ্গত, এই ব্যবসায়ীর সঙ্গে ইডি আধিকারির যোগসূত্র রয়েছে এবং তিনি ইডির অফিসারদের সঙ্গে তোলাচক্র চালান বলে এক সময় অভিযোগ করেছিলেন শিবসেনার এক শীর্ষনেতা।
অভিযোগ পত্রে ওই ব্যবসায়ীর আরও দাবি, রাজ্য পুলিসের দুই শীর্ষ কর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের কথা মতো তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এমনকী, তাদের বাড়ির সার্চ ওয়ারেন্টও ইস্যু হয়। তাঁর স্ত্রী দুবাই থেকে ফেরার সময় মুম্বই বিমানবন্দর তাকে আটক করে অভিবাসন দফতর। এরপরেই জানতে পারেন সিআইডির একটি মামলা করেছে। সেই মামলায় আইনি মারপ্যাঁচ থেকে বাঁচানোর কথা বলে দফায় দফায় টাকা নেন সিআইডির অফিসাররা। এমনকি, কলকাতাতেও একটি পাঁচতারা হোটেলে দেখা করে নগদে টাকা নিয়ে বলে অভিযোগ। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে তালিকায় সিআইডির ইনস্পেক্টর ছাড়াও আসানসোলের একটি থানার অফিসারের নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন, Suvendu Adhikari: অভিষেকের শিশুপুত্রকে নিয়ে আপত্তিকর টুইট, শুভেন্দুকে শোকজ শিশু সুরক্ষা কমিশনের