বাঙালির মনের নায়ক নীললোহিতের কথা

নীললোহিত। পাজামা পাঞ্জাবি পরা এক ভবঘুরে বেকার যুবক, দুই প্রজন্ম ধরে বাঙালির আইকন। বোহেমিয়ানিজমের সঙ্গে রোমান্টিসিজমের এমন মিশেল বাংলা সাহিত্যে তুলনাহীন। নীললোহিত চরিত্রটির মতোই লেখক নীললোহিতও অতুলনীয়। আর এখানেই বাংলা গদ্যে সুনীল প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। 

Updated By: Oct 25, 2012, 09:51 PM IST

নীললোহিত। পাজামা পাঞ্জাবি পরা এক ভবঘুরে বেকার যুবক, দুই প্রজন্ম ধরে বাঙালির আইকন। বোহেমিয়ানিজমের সঙ্গে রোমান্টিসিজমের এমন মিশেল বাংলা সাহিত্যে তুলনাহীন। নীললোহিত চরিত্রটির মতোই লেখক নীললোহিতও অতুলনীয়। আর এখানেই বাংলা গদ্যে সুনীল প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
নিজের জীবনে ভবঘুরে হয়ে বহু জায়গা ঘুরেছেন সুনীল। শহর থেকে দূরে কাটিয়েছেন বহু সময়। আবার ফিরে এসেছেন নাগরিক জীবনে। নীললোহিত চরিত্রটিও তাই। বোহেমিয়ান কিন্তু ভীষণ রোমান্টিক। ভালবাসতে পারে পাগলের মতো। ভালবাসা চায় পাগলের মতো। কিন্তু তার এই ভালবাসা এতটাই নিভৃত ও নিজস্ব যে তার নাগাল  পায় না কেউ।  বন্দনাদির জন্য অস্থির হয় বছর সাতাশের নীললোহিত। বন্দনাদিও তাকে পরম মমতায় আগলে রাখার চেষ্টা করে। বন্দনাদিই তাকে হদিশ দেয় সেই ঠিকানার যার কোনও দিক নেই। দিকশূন্যপুর। সেইখানে পৌঁছেও যায় নীললোহিত। নির্জনে কথা বলে নিজের সঙ্গে। শুধু বন্দনাদিই বা কেন, ছোট্ট মুমুরও তো নীললোহিতের বড় প্রিয়। কিন্তু টাইম মেশিনে মুমুর জন্য তার প্রেম জাগে। অপ্রাপ্তির বেদনাবোধ জাগে। এই চরিত্রটির সঙ্গে বাঙালি পাঠকের আগে পরিচয় ছিল না। আলাপ করিয়ে দিয়েছেন সুনীল।
কিন্তু সুনীলের ভাষায় নয়। তাই এই লেখাগুলির ভাষা স্বতন্ত্র। যেভাবে অমৃতকুম্ভের সন্ধানে বা শাম্বতে সমরেশ বসু বিচ্ছিন্ন হয়ে যান কালকূটে, সেভাবেই সুনীল নিজেকে ছিন্ন করে দেন। আলাদা স্বর নিয়ে স্বতন্ত্র হয়ে জেগে থাকে নীললোহিত। সেই নীললোহিত চলে গেল তার প্রিয় গন্তব্যে। দিকশূন্যপুরে। বন্দনাদি, মুমুরকে ফেলে রেখেই।

.