কী করবেন
এই গরমে অবস্থা কাহিল সবার। কোনও কাজে ঠিক মত লাগছে না, বাইরে বের হতে ভাল লাগছে না। ঘুমটাও আসতে চাইছে না ঠিকমত। এমন একটা সময় আমাদেরই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ভাবুন তো বাচ্চাদের কী হচ্ছে। আমরা তো তবু আমাদের কষ্টগুলো মুখে বলতে পারি, কিন্তু বাচ্চারা তো নিজেদের কষ্ট ঠিকমত বলতে পারে না। তাহলে! এখানেই আমার, আপনার মানে যারা বয়সে বড় তাদের অনেক দায় বর্তায় ওই ছোট বাচ্চাদের প্রতি।
এই গরমে অবস্থা কাহিল সবার। কোনও কাজে ঠিক মত লাগছে না, বাইরে বের হতে ভাল লাগছে না। ঘুমটাও আসতে চাইছে না ঠিকমত। এমন একটা সময় আমাদেরই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে ভাবুন তো বাচ্চাদের কী হচ্ছে। আমরা তো তবু আমাদের কষ্টগুলো মুখে বলতে পারি, কিন্তু বাচ্চারা তো নিজেদের কষ্ট ঠিকমত বলতে পারে না। তাহলে! এখানেই আমার, আপনার মানে যারা বয়সে বড় তাদের অনেক দায় বর্তায় ওই ছোট বাচ্চাদের প্রতি।
কী করবেন
ঠিক সময় স্নান করান-- ঠিক সময় স্নান করানোর ব্যাপরটা সব সময়ই মেনে চলা উচিত। তবে গ্রীষ্মে এই কথাটা আরও বেশি করে সত্যি হয়। কারণ গরমকালে কতবার আপনার বাচ্চাকে স্নান করাবেন সেটা একটা বড় প্রশ্ন। অনেকে গরম লাগছে বলে তাঁদের বাচ্চাকে ৫-৬ বার স্নান করিয়ে ফেলেন, এতে হিতে বিপরীত হয়। ঠান্ডা লেগে শরীর খারাপ হয়, তখন আবার তাকে সেভাবে স্নান করানো হয় না। এতে সমস্যা বেড়ে দ্বিগুন হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, গরমে বাচ্চাদের কতবার দিনে স্নান করাবেন সেটা সেই বাচ্চাটার শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে। ঠিক সময় স্নান করালে বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চাকে ঠিক কতবার স্নান করানো উচিত। বারাবার স্নান না করালেও গা মুখ মুছে দেওয়াটা অনেকবার করতেই পারেন।
বিশ্রামের জন্য একটু বেশি সময় দিন- স্কুল থেকে ফিরে আপনার বাচ্চাকে বিশ্রামের সময় দিন। গরম কালে বিশ্রামের সময়টা অনেকটা বাড়ানো উচিত। আসলে গরমে এনার্জিটা অনেক তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় তো... জানি এখনকার এই ইদুঁর দৌড়ে ওসব বিশ্রাম শব্দটা অভিধানের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু তবু এটা তো মানবেন মেশিনেরও বিশ্রামের জন্য কারখানায় ফ্রি টাইম বলে একটা সময় থাকে। তাই আপনার বাচ্চাকে এই গরমে একটু বেশি করে ওর মত করে বিশ্রাম নিতে দিন। বিশ্রাম মানেই কিন্তু ঘুম বা চুপচাপ বসে থাকা নয়। ওদের কাছে বিশ্রাম কথাটার আলাদা একটা মানে আছে।
আরও একটু ধৈর্যশীল হোন- গরমে ধৈর্য ধরে রাখাটা খুব শক্ত। পাওয়ার অফ হয়ে গিয়ে গায়ে প্যাচপ্যাচে ঘাম, বাড়ির কাজের লোক না আসা, পাশের বাড়ির সঙ্গে মনোমালিন্য, নিজেদের মধ্যে ঝগড়া এইসবগুলো গরমে খুব বেশি হয়। তাই মেজাজটাও তাড়াতাড়ি বিগড়ে যায়। মেজাজটা হারানোর সব কার্যকলাপ গিয়ে পড়ে বাড়ির বাচ্চাটার ওপর। নিষ্পাপ বাচ্চাটা হয়তো তখন জলের বালতিটা নিয়ে খেলছিল, আর আপনার ধৈর্যর থার্মোমিটাররের পারদটা এতটাই চড়া যে সেটা সহ্য করতে না পেরে দিলেন এক ঘা। ভেবে দেখেলেনই না, যাকে মারলেন সে একটা বাচ্চা। তারও গরম লাগে, ধৈর্যটা তারও হারায়।
নরম সুতির কাপড় পরান--যতটা সম্ভব হালকা পোশাক পরান। নরম সুতির পোশাক পরানোটাও ভাল। কারণ গরমে বাচ্চার ত্বকের সমস্যাটা সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়। রোদে বেরনোর সময় রঙচঙে পোশাকও এড়িয়ে চলুন।
জল বেশি করে খাওয়ান--জলের অপর নাম জীবন। সে তো কোন ছোটবেলা থেকে জেনে আসছেন। কিন্তু গরমে জল হল রোগ আর ক্লান্তির যম। সেটা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরও সত্যি। বেশি করে জল খাওয়ান, তবে দেখবেন একই কথা বারবার ওকে বলে বিরক্ত করবেন না। অভ্যাস করাতে হলে তাকে বিরক্ত করে না বুঝিয়ে করান। এটা অবশ্য গরমের টিপস নয়, সব সময়ের। তবে গরমেই টিপসের হাতুড়িটা মেরে দিলাম। কথায় বলে না, গরম থাকতে থাকতে সব কাজ করে ফেলা ভাল।
জল থেকে সতর্ক থাকুন-- জল থেকে গরমে বেশিরভাগ রোগ হয়। বাইরে বেরিয়ে পিপাসার তাড়নায় আমরা যেখান সেখান থেকে জল খেয়ে ফেলি, বাচ্চাদেরও খাইয়ে ফেলি। বাচ্চাকে স্কুল থেকে নিয়ে আসার সময় অনেকেই মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টির পর বাচ্চাদের জল খাইয়ে দেন। সেই জলটা যেখানে রাখা হয় সেটা এতটাই `অপাত্র`যে পেটের রোগের জীবানুরা হনিমুন করার সেরা জায়গাটা খুঁজে পায়। তাই বলি, কিছু পয়সা বাঁচাতে যেখান সেখানকার জল না কিনে, পয়সা দিয়ে মিনারেল ওয়াটার কিনে নিন।
গরমকাল মানেই এসি আর ফ্রিজ নয় সেটা বোঝান- গরমকাল মানেই বাচ্চাকে সব সময় এসি`তে রাখবেন, ফ্রিজের জল খাওয়াবেন সেটা নয়। ডাক্তাররা বলেন, এসিতে বেশিক্ষণ থাকার অভ্যাসটা ছোটদের না করানোই ভাল। গরমে বাচ্চাদের দু তিন ঘণ্টা এসিতে রাখুন। যদি খুব গরম লাগে তাহলে এসি ঘরে রাখার চেয়ে গা মুখ ধুয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার ঘরে রাখুন। মনে রাখবেন আপনার বাচ্চা একদিন বড় হবে। জীবনযুদ্ধের কুরুক্ষেত্রে কিন্তু ঠান্ডা ঘর সবসময় থাকবে না।