ভেন্টিলেশনে থাকা করোনা রোগীদেরও দ্রুত সুস্থ করতে সক্ষম এই প্রোটিন ডোজ! সাফল্য ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের

এই প্রোটিন ডোজের প্রয়োগে ভেন্টিলেশনে থাকা আশঙ্কাজনক করোনা রোগীদেরও দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব। ফলে দ্রুত বাড়বে সুস্থতার হার, কমবে মৃত্যুর ঝুঁকি!

Edited By: সুদীপ দে | Updated By: Jul 21, 2020, 02:15 PM IST
ভেন্টিলেশনে থাকা করোনা রোগীদেরও দ্রুত সুস্থ করতে সক্ষম এই প্রোটিন ডোজ! সাফল্য ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের
—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে অন্তত ১৫৫টি করোনার প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চলছে। এর মধ্যে ২৩টি কার্যকর প্রতিষেধকের হিউম্যান ট্রায়াল চলছে। এই ২৩টি কার্যকর প্রতিষেধকের মধ্যে তিনটির চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল চলছে। এর মধ্যেই একদল বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, এক বিশেষ ধরনের প্রোটিনের প্রয়োগে করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য মিলেছে।

ব্রিটিশ বায়োটেক সংস্থা সিনেইর্গেন (Synairgen)-এর বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাঁরা এমন এক ধরনের প্রোটিন মিশ্রণ তৈরি করেছেন যা ভাইরাসের সংক্রমণ রোখার পাশাপাশি আশঙ্কাজনক করোনা রোগীদের শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দ্রুত কমিয়ে তাঁদের সুস্থ করে তুলতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা বিশেষ এই প্রোটিন ডোজের নাম দিয়েছেন SNG001।

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই প্রোটিন ডোজের (SNG001) প্রাথমিক পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালে অভূতপূর্ব সাফল্য মিলেছে। সিনেইর্গেন (Synairgen)-এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশেষ ইন্টারফেরন বেটা প্রোটিনের প্রয়োগে ৯-১০ দিনে পরিবর্তে মাত্র ৬ দিনের মধ্যেই করোনা রোগীদের সম্পূর্ণ সুস্থ করে বাড়ি পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। এই প্রোটিন ডোজের প্রয়োগে ভেন্টিলেশনে থাকা আশঙ্কাজনক করোনা রোগীদেরও দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে।

Synairgen

মে মাসে ব্রিটেনের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই প্রোটিন ডোজের প্রাথমিক পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করে ব্রিটিশ বায়োটেক সংস্থা সিনেইর্গেন (Synairgen)। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নেবুলাইজারের মাধ্যমে দিনে দু’বার করে এই প্রোটিন ডোজ প্রয়োগের ফলে করোনা রোগীর ফুসফুসের দ্রুত সংক্রমণ-মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। জানা গিয়েছে, মোট ১০১ জন করোনা রোগীর উপর এই প্রোটিন ডোজের (SNG001) ‘ডবল-ব্লাইন্ড’, প্লাসেবো (placebo) ভিত্তিক ট্রায়াল চালানো হয়।

কী এই ‘ডবল-ব্লাইন্ড’ প্লাসেবো (placebo) ভিত্তিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল?

এ ক্ষেত্রে প্রথমেই প্লাসেবো (placebo) কী তা জানা জরুরি। প্লাসেবো হল যে কোনও ওষুধ বা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কার্যকারিতাহীন প্রতিলিপি বিশেষ। অর্থাৎ, ট্রায়ালে একদল রোগীকে আসল প্রোটিন ডোজ দেওয়া হয়েছে, অন্যদের দেওয়া হয় এর কার্যকারিতাহীন প্রতিলিপি বা প্লাসেবো (placebo)। ‘ডবল-ব্লাইন্ড’ ট্রায়ালের ক্ষেত্রে একই সঙ্গে রাখা ছিল আসল প্রোটিন ডোজ এবং তার প্লাসেবো (placebo)। গবেষক বা রোগীদের কেউই জানেন না যে, কাকে আসল প্রোটিন ডোজ (SNG001) দেওয়া হয়েছে আর কাকে প্লাসেবো (placebo)!

আরও পড়ুন: ইনজেকশনে ভয়! ‘নাজাল ভ্যাকসিন’ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা! নাকে স্প্রে করেও নেওয়া যাবে করোনার টিকা!

সিনেইর্গেন (Synairgen)-এর বিজ্ঞানীদের দাবি, কোনও ব্যক্তি যদি দিনে দু’বার করে এই প্রোটিন ডোজ (SNG001) নেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে সক্ষম। পাশাপাশি, এই প্রোটিন ডোজের (SNG001) প্রয়োগে করোনা আক্রান্তদের শ্বাসকষ্ট-সহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা বা জটিলতা ৭৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই কমানো গিয়েছে। সিনেইর্গেন (Synairgen)-এর সিইও রিচার্ড মার্সডেন বলেন, “সোমবারই এই প্রোটিন ডোজের (SNG001) প্রথম ট্রায়ালের ফলাফল হাতে এসেছে। ট্রায়ালের ফলাফল দেখার পর এটা বলা যেতেই পারে, এই প্রোটিন ডোজের প্রয়োগে ভেন্টিলেশনে থাকা আশঙ্কাজনক করোনা রোগীদেরও দ্রুত সারিয়ে তোলা সম্ভব। ফলে দ্রুত বাড়বে সুস্থতার হার, কমবে মৃত্যুর ঝুঁকি।”

.