বিশেষ প্রজাতির মাছই দেবে পুষ্টি, বলছেন ডাক্তাররা
নিউরোলজিস্টদের মতে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডর মাত্রা বাড়তে থাকলে ব্রেনের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ডিমেনশিয়া বা আলজাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: শরীরে প্রয়োজন বিশেষ কিছু পুষ্টি। যা রোজকার খাওয়ার থেকে কখনই পায় না শরীরের প্রতিটি অঙ্গ। যার ঘাটতি ক্রমশ শরীরের অন্দরমহলে বাসা বাধতে থাকে একাধিক অসুখ। যাকে হত্যা করা তো দূর, ক্রমশ তাঁকে বড় আকারে ধারণ করার জন্য আসকারা দিচ্ছেন আপনি। তাই ডাক্তারদের পরামর্শ অন্যান্য ভিটামিন ও পুষ্টির পাশাপাশি বাড়িয়ে ফেলুন সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন। অবশ্যই তা যেন সামুদ্রিক মাছ থেকে তৈরি হয়।
অপুষ্টি হ্রাস করার জন্য প্রয়োজন পরিপূরক পুষ্টি। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ এলাকায় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন বিভাগ এবং ওয়ার্ল্ড ফিশ মঙ্গলবার এসএনপিতে শিশুদের (৩ থেকে ৬ বছর), গর্ভবতী ও নার্সিং মহিলা এবং কিশোরী মেয়েদের ৫০ টি অঙ্গনওয়াদিতে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মাছের পুষ্টি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন। পাশাপাশি অপুষ্টি দূর করতে পাঁচ বছরের জন্য ওয়ার্ল্ড ফিস, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। জানা গিয়েছে, এটি তাদের পাইলট প্রোজেক্ট। মাছ থেকে পাওয়া সাপ্লিমেন্টারি খাবার, আপনার শরীরে পুষ্টি দেবে। উপকূলবর্তী এলাকায় যাঁরা মাছের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাঁদের হাতে ওর্গানিক ভাবে সাপ্লিমেন্টারি খাবার তৈরি ও ব্যবসা করার দায়িত্ব দেওয়ার ভাবনাচিন্তা রয়েছে এই চুক্তিতে। যা FSSAI অনুমোদিত হবে।
আরও পড়ুন: COVID-19: ভারতে ভ্যাকসিন নিয়ে বড় ঘোষণা AIIMS ডিরেক্টরের
মনে রাখবেন, সামুদ্রিক মাছের পুষ্টিগুণ মিষ্টি জলের মাছের তুলনায় অনেক গুণ বেশি। আমাদের দেশে সারা বছরই বাজারে বিভিন্ন জাতের সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। সামুদ্রিক মাছ উচ্চ-প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং এতে ক্ষতিকারক ফ্যাট নেই বললেই চলে। প্রজাতি ভেদে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ভিন্ন হয় কিন্তু পুষ্টিগুণ বিচারে সব সামুদ্রিক মাছই অনন্য। সামুদ্রিক মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ডি থাকে, যা একাধিক জটিল রোগ থেকে আমাদের দূরে রাখে। শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক গঠনে সামুদ্রিক মাছ দারুণ ভূমিকা পালন করে। কাজেই, এই মাছ যদি সহজলভ্য না হয়, তা দিয়ে তৈরি সাপ্লিমেন্টারি ফুড খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
কেন খাবেন সামুদ্রিক মাছ বা তা থেকে তৈরি সাপ্লিমেন্টারি?
সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা-৩ নামক ফ্যাটি অ্যাসিড যা হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারি। এই ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। কাজেই, শ্বাসকষ্ট দূর করতে ও হৃদযন্ত্রকে তরতাজা করতে প্রয়োজন এই সাপ্লিমেন্টারি ফুড। বেশির ভাগ সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন এ ও ডি থাকে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তাই হৃদরোগে আক্রান্ত ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সামুদ্রিক মাছ খুবই উপকারি।
আরও পড়ুন: মাত্র ৯০ মিনিটেই মিলবে কোভিড টেস্টের ফল, নতুন কিট আনল TATA
আপনার মস্তিষ্কের ব্যধি দূর করে তাকে তরতাজা রাখবে সামুদ্রিক মাছ থেকে পাওয়া পরিপূরক পুষ্টিকর খাদ্য। নিউরোলজিস্টদের মতে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডর মাত্রা বাড়তে থাকলে ব্রেনের বিশেষ কিছু অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে ডিমেনশিয়া বা আলজাইমারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। সামুদ্রিক মাছ মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে নানা রোগ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। এতে জিংক ও আয়োডিন আছে। জিংক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
শরীরে ব্যথা বেদনা থেকে মুক্তি দেবে সাপ্লিমেন্টারি নিউট্রিশন। রোজ সামুদ্রিক মাছ খেলে রিউমাটয়েড আর্থাইটিসের উপসর্গ কমে আসে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও প্রয়োজন সামুদ্রিক মাছের পুষ্টি। এতে তাদেরও রোগ নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ও জার্মানির সংস্থার দাবি, ''আমাদের করোনা ভ্যাকসিন ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকরী''
তা ছাড়া সামুদ্রিক মাছে থাকে আয়োডিন, সেলেনিয়াম, জিংক এবং পটাশিয়ামসহ অনেক অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। থাইরয়েড রোগীদের জন্য আয়োডিন অত্যাবশ্যকীয় এবং সেলেনিয়াম এক ধরনের এনজাইম তৈরি করে যা আমাদের ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়াও সিলোনিয়াম শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ করে।
কাজেই, ডাক্তারদের পরামর্শ শরীরকে তরতাজা ও সুস্থ রাখতে সামুদ্রিক মাছকে রাখুন আপনার খাদ্য তালিকায়।