Hemophilia : রক্তের বিরল রোগ হিমোফিলিয়া! সঠিক জানুন, প্রাণ বাঁচান...
দেহে আঘাত লাগার পর এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তক্ষরণ অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: হিমোফিলিয়া হল একপ্রকার জিনগত বংশানুক্রমিক রোগ। এই রোগে রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা হয়। দেহে আঘাত লাগার পর এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্তক্ষরণ অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি হতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। অনেক সময় এই রোগীর কোন আঘাত ছাড়াই ভিতরে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এটি একটি বিরল রোগ হওয়ায় জন সাধারণের অধিকাংশেরই এই রোগ সম্পর্কে ধারণা নেই। সারাবিশ্বে দশ হাজার লোকের মধ্যে একজনের হিমোফিলিয়া হয়ে থাকে। এই বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হিমোফিলিয়া সোসাইটি দীর্ঘ দিন ধরে এই অসুখ নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ‘মাস সেন্সিটাইজেশন অন হিমোফিলিয়া’ সংবাদ মাধ্যমের সাহায্যে হিমোফিলিয়া নিয়ে জন সচেতনতা বাড়ানোর এরকমই একটি উদ্যোগ। হিমোফিলিয়া ফেডারেশন ইন্ডিয়ার HF(I) পক্ষ থেকে শুভাশিস বেহারা জানান, দেশের চ্যপ্টারগুলির সমন্বয়কারী সংস্থা হিসাবে HF(I) ১৯৮৩ সাল থেকে নিরলস কাজ করে চলেছে।
হিমোফিলিয়া সোসাইটি কলকাতা চ্যাপটারের পক্ষ থেকে প্রশান্ত মাল জানিয়েছেন, হিমোফিলিয়া কলকাতা চ্যাপটার দেশের ৮৭ টি চ্যাপটারের মধ্যে সবথেকে বড় ও পুরনো চ্যাপটার। বর্তমানে এক হাজারের ওপরে রোগী এই সংস্থায় নথিভুক্ত আছেন। বিগত দুই বছর পর করোনা অতিমারি কাটিয়ে সোসাইটির কাজকর্ম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। গত ছয় মাসে সোসাইটি ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতাল ও বারাসতের জেলা হাসপাতালের মতো বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসকদের হিমোফিলিয়ার চিকিৎসা ও রোগীদের প্রতি করণীয় সম্পর্কে অবগত করতে অনবরত মেডিক্যাল এডুকেশন প্রোগ্রাম করছেন। উদ্দেশ্য একটাই, যদি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে হিমোফিলিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্স থাকে তাহলে যে কোনব অসুখ নিয়ে হিমোফিলিয়া রোগী ভর্তি হলে বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন।
আরও পড়ুন: Lumpy Skin Disease: কোভিড, মাঙ্কিপক্সের পর আতঙ্কের নাম লাম্পি ভাইরাস! জানুন
দেশের প্রখ্যাত রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তুফানকান্তি দলুইয়ের বক্তব্য, ‘রক্তে ক্লটিং ফ্যাক্টর নামে বিশেষ ধরনের কতগুলি প্রোটিন থাকে, এগুলিই দরকারের সময়ে তরল রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এর মধ্যে হিমোফিলিয়া রোগীদের রক্তে ফ্যাক্টর VIII ও ফ্যাক্টর IX কম থাকে। যে রোগীর শরীরে যত কম ফ্যাক্টর থাকে, সেই রোগীর হিমোফিলিয়া ততই মারাত্মক হয়। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে ফ্যাক্টর VIII কম থাকে। এই ধরণের হিমোফিলিয়াকে ক্লাসিক হিমোফিলিয়া বা হিমোফিলিয়া A বলা হয়। ফ্যাক্টর IX কম থাকলে সেই হিমোফিলিয়ার নাম হয় হিমোফিলিয়া B। এছাড়াও অন্যান্য ক্লটিং ফ্যাক্টরের অভাবে বিরল ধরনের আরও কয়েকটি হিমোফিলিয়া দেখা যায়।‘
আধুনিক চিকিৎসায় হিমোফিলিয়া রোগীকে কৃত্তিম ভাবে তৈরি ক্লটিং ফ্যাক্টর কন্সেন্ট্রেট ইনজেকশন দিয়ে স্বাভাবিক করে তোলা হয়। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোগীকে সারাজীবনই এই মূল্যবান ইনজেকশন নিয়মিত নিয়ে যেতে হয়।