বোন ম্যারো ক্যান্সার প্রতিরোধে আবিষ্কৃত হল ওষুধ!
প্রাথমিক পর্যায়ে অস্থি মজ্জার ক্যান্সারের উপসর্গ চিনতে পারা বেশ কঠিন। আর যত দিনে ধরা পড়ে তত দিনে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্যান্সারে প্রতি বছর সারা বিশ্ব লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলেও চিকিত্সার বিপুল খরচের কারণে অনেকেই যাথাযথ চিকিত্সার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেন না। ব্যয়বহুল ওষুধ এবং ক্যান্সারের সামগ্রিক খরচ অনেকেরই নাগালের বাইরে। ফলে মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে ক্যান্সার এখনও পর্যন্ত একটি আতঙ্কের নাম। নানা রকমের ক্যান্সারের মধ্যে বোন ম্যারো ক্যান্সার বা অস্থি মজ্জার ক্যান্সার উল্লেখযোগ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে অস্থি মজ্জার ক্যান্সারের উপসর্গ চিনতে পারা বেশ কঠিন। আর যত দিনে ধরা পড়ে তত দিনে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে বোন ম্যারো ক্যান্সার বা অস্থি মজ্জার ক্যান্সারে আক্রান্তদের এ বার আশার আলো দেখালেন ব্রিটিশ গবেষকরা। তাঁদের দাবি, তাঁদের আবিষ্কৃত একটি থেরাপিউটিক ড্রাগ (এই জাতীয় ক্যান্সারের চিকিত্সার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক ওষুধ) অস্থি মজ্জার ক্যান্সারে আক্রান্তদের বেঁচে থাকার হার বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।
ব্রিটেনের নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির গবেষকরা পরীক্ষামূলক ভাবে তাঁদের (ক্লিনিকাল ট্রায়াল) নতুন আবিষ্কৃত ওষুধ ‘লেনালিডোমাইড’-এর সাহায্যেই চিকিত্সা করেছেন। সম্প্রতি ‘দ্য ল্যান্সেট অঙ্কোলজি’ পত্রিকার প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট ১১৩৭ জন রোগীর উপর ‘লেনালিডোমাইড’ নামের ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৩৪ জন রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। ফলাফলে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রোগের প্রসারের গতি বা মৃত্যুর ঝুঁকি ৫০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এই ৭ ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে চিনতে পারা প্রায় অসম্ভব!
নিউক্যাসেলের ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গ্রাহাম জ্যাকসন জানান, মায়লোমা প্লাজমা কোষের ক্যান্সার শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, পাঁজরকে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে। বর্তমান অস্থি মজ্জার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সায় সাধারণত কেমোথেরাপি এবং স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্ট পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। অধ্যাপক জ্যাকসন জানান, অস্থি মজ্জার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অল্প বয়সীদের উপর এই ওষুধের কার্যকারীতা অনেক বেশি। তাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। বয়ষ্কদের ক্ষেত্রে এই ‘লেনালিডোমাইড’-এর প্রভাব কিছুটা মন্থর গতিতে প্রকাশ পায়। তবে বোন ম্যারো ক্যান্সার বা অস্থি মজ্জার ক্যান্সারের নতুন আবিষ্কৃত ওষুধ ‘লেনালিডোমাইড’-এর উপর এখনও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রিটিশ গবেষকরা।