আবিষ্কারের পথে পুরুষদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন জন্ম নিয়ন্ত্রক জেল

এই গবেষণায় সাফল্য মিললে আরও একটি নিরাপদ ও কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে এই জেল জন্ম নিয়ন্ত্রণে পুরুষদের সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

Updated By: Dec 7, 2018, 02:21 PM IST
আবিষ্কারের পথে পুরুষদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন জন্ম নিয়ন্ত্রক জেল
--প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: মহিলাদের জন্য গর্ভনিরোধক ওষুধ নতুন কিছু নয়। জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধ আসছে পুরুষদের জন্যেও। এ বিষয়ে এখনও গবেষণা চলছে। অর্থাৎ, এই ওষুধ বাজারে এসে গেলেই জন্ম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এ বার মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষরাও দায়িত্ব নিতে পারবেন সহজেই। উত্তর ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাইকেল ও’রান্ড জানাচ্ছেন, এই ওষুধ পুরুষদের বীর্যে থাকা প্রোটিনকে বেঁধে রেখে তার চলাচলের গতিকে স্লথ করে দেবে। কোনও পার্শপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই জন্ম নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এই ওষুধ।

পুরুষদের জন্যে জন্ম নিয়ন্ত্রক ওষুধের পর এ বার বাজারে আসতে চলেছে জন্ম নিয়ন্ত্রক জেল। কিছুদিনের মধ্যেই এটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত মার্কিন গবেষকরা জানাচ্ছেন, মোট ৪২০ দম্পতির ওপর এই জেল ব্যবহার করে দেখা হবে তা গর্ভধারণ রোধ করতে ঠিক কতটা কার্যকরী। এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য, ডঃ ডায়ানা ব্লাইদি জানান, অনেক মহিলাই হরমোনভিত্তিক গর্ভনিরোধক ওষুধ বা জেল ব্যবহার করতে পারেন না। আর বর্তমানে পুরুষের জন্মনিরোধক পদ্ধতি হিসেবে শুধু ভ্যাসেকটমি (স্থায়ী) আর কনডমের ব্যবহার (অস্থায়ী) প্রচলিত রয়েছে। তাঁর বিশ্বাস, এই গবেষণায় সাফল্য মিললে আরও একটি নিরাপদ ও কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে এই জেল জন্ম নিয়ন্ত্রণে পুরুষদের সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

ডঃ ডায়ানা জানান, এই জেল মাখতে হবে পুরুষের পিঠে ও কাঁধে। এই জেলে মূলত দুইটি উপাদান রয়েছে। এক, টেস্টোস্টেরন ও দুই, সেজেস্টেরন অ্যাসিটেট নামের একটি প্রজেস্টিন। এই প্রজেস্টিন পুরুষের শুক্রাশয়ে টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন বন্ধ করে দিতে সক্ষম। প্রজেস্টিনের প্রভাবে শুক্রাণুর উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এই জেলে থাকা টেস্টোস্টেরন পুরুষের রক্তে হরমোনটির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করবে। ফলে শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে চলতে থাকবে। এই জেলটির নাম এনইএস/টি (NES/T)।

জানা গিয়েছে, ২৩ মাস ধরে মোট ৪২০ দম্পতির ওপর এই জেল পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করে দেখা হবে। পুরুষদের এই জেল প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।  ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত এই জেল পুরুষদের উপর প্রয়োগ করা হবে। এই জেল ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার পর শুক্রাণুর সংখ্যা কোনও পার্থক্য হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য পরবর্তী ২৪ সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হবে। জেলটি ব্যবহারে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। বর্তমানে বাজারে উপলব্ধ সব গর্ভনিরোধক ওষুধ বা জেলেই কম-বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। মার্কিন গবেষণায় এই এনইএস/টি পাশ করলে জন্ম নিয়ন্ত্রণে পুরুষরাও দায়িত্ব নিতে পারবেন সহজেই।

.