ইনজেকশন নাকি নাজাল ভ্যাকসিন, করোনা রুখতে কোনটা বেশি কার্যকর?
আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ঠিক কী বলছেন বিজ্ঞানীরা...
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে একের পর এক নামী প্রতিষেধক প্রস্তুতকারী সংস্থা এখন করোনার নাজাল ভ্যাকসিন তৈরি বা তার হিউম্যান ট্রায়ালে ব্যস্ত। ভারতেও পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (Serum Institute of India) এবং হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক (Bharat Biotech) করোনার নাজাল ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত পর্বের ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হল বিগত ছ’ মাসের গবেষণালব্ধ টিকায় কি তাহলে তেমন সুরক্ষা মিলবে না? নাকি করোনা রুখতে নাজাল ভ্যাকসিন প্রথাগত ইনজেকশনের তুলনায় বেশি কার্যকর? আসুন জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ঠিক কী বলছেন বিজ্ঞানীরা।
নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের দাবি, করোনার ক্ষেত্রে ‘নাজাল ভ্যাকসিন’ ইনজেকশনের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে। শুধু তাই নয়, শরীরে করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ‘নাজাল ভ্যাকসিন’ ইনজেকশনের তুলনায় দ্রুত কাজ করবে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ‘নাজাল ভ্যাকসিন’ দ্রুত ‘টি সেল’-এর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সহাযক হতে পারে। ফলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।
ইতিমধ্যেই করোনার নাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে চিন। জানা গিয়েছে, নভেম্বর থেকেই নাজাল ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে। এই ট্রায়ালের জন্য ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক বেছে নেওয়া হবে।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক ইউয়েন কোক-ইউং জানান, এই নাজাল ভ্যাকসিন H1N1, H3N2-এর মতো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। তাঁর মতে, এই টিকা ইনফ্লুয়েঞ্জা আর করোনাভাইরাস— উভয় ক্ষেত্রেই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক করোনভাইরাসের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ ধরনের ইনহেলার ওষুধ তৈরি করেছেন। তাঁদের দাবি, এই ইনহেলার ফুসফুসের ভাইরাস সংক্রমণ নিরাময়ের পাশাপাশি দ্রুত ভাইরাল লোড কমানোর ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
মার্কিন গবেষকরা জানান, বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে রোগীর শ্বাসযন্ত্র। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে শরীরে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের অভাবে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন করোনা রোগী।
বিজ্ঞানীদের দাবি, নাজাল ভ্যাকসিনের সাহায্যে করোনা আক্রান্ত শ্বাসযন্ত্রকে দ্রুত ভাইরাস মুক্ত করা সম্ভব। পাশাপাশি শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতাও দ্রুত গড়ে তোলা যাবে। ইনজেকশনের সাহায্যে টিকাকরণে যা তুলনায় বেশ কিছুটা সময়সাপেক্ষ।