কোন পথে এগোচ্ছে করোনার চিকিত্সা, ভাইরাস প্রতিরোধে কতটা তৈরি ভারত?
বিশ্বে কোন পদ্ধতিতে এগোচ্ছে করোনার চিকিত্সা, ভারতে এই পরিস্থিতিতে সামগ্রিক ছবিটা কেমন? Zee ২৪ ঘণ্টা ওয়েবকে জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ডঃ অভ্রজিৎ রায়।
সুদীপ দে: এ পর্যন্ত গোটা বিশ্বে মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৭৯ হাজার ৮০ জন। এ পর্যন্ত ১৬,৫২৪ জনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। এই ভাইরাসে ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৯ আর মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। সারা বিশ্বে কোন পদ্ধতিতে এগোচ্ছে করোনার চিকিত্সা, ভারতে এই পরিস্থিতিতে সামগ্রিক ছবিটা কেমন? Zee ২৪ ঘণ্টা ওয়েবকে জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ডঃ অভ্রজিৎ রায়।
বর্তমানে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস যে মহামারীর আকার ধারণ করেছে সেখানে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট। যেমন, বর্তমানে আমাদের দেশে গ্লাভস, মাস্ক বা এই জাতিয় ডিসপোজেবল সামগ্রির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেই জন্য এই পরিস্থিতিতে ডঃ রায়ের পরমর্শ, এই মুহূর্তে জীবানুমুক্তকারী সাবান দিয়েই ভাল ভাবে হাত ধোয়া জরুরি।
তিনি জানান, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেকেই যেন একে অপরের থেকে কিছুটা হলেও দূরত্ব বজায় রাখেন। তবে হাসপাতালের ক্ষেত্রে বা বাড়িতে সেটি কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। বিশেষ করে শহরে গজিয়ে ওঠা বাস্তুহারা মানুষদের বসতিগুলিতে এই দূরত্ব বজায় রাখা একেবারেই অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে তাঁকে প্রথমত চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে খতিয়ে দেখতে হবে আদৌ কোনও ব্যক্তি এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন কিনা।
এই প্রসঙ্গে ডঃ রায় জানান, অধ্যাপক ডিডিয়ার রুলট ২৫ জন রোগী দেখেছিলেন, যাঁদের মধ্যে পাঁচজন ছিল ১২ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। ১০ জন ছিল ১৮ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে এবং আরও ১০ জন ছিল যারা ৬৫ বছরের উপরে। এই ২৫ জন রোগী প্রত্যেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক রোগীকেই হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন দেওয়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে যে ৬ দিন পর রোগীর সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। এর ৬ দিন পর রোগীর শরীরে এজিথ্রমাইসিন আর হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনের মিশ্রণ প্রয়োগ করা হয়। সে ক্ষেত্রে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস আগেভাগেই শনাক্ত করতে বিশেষ কিট আবিষ্কার করলেন ভারতীয় গবেষকরা
ডঃ রায় জানান, চিনে ১০০ জন রোগীর শরীরে এই ওষুধ ব্যবহার করার পর দেখা গিয়েছে, এইচসিকিউএস-এর প্রভাব বা লক্ষণগুলির তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান পর্সন জানিয়েছেন, মারাত্মক যে কোনও রোগের ক্ষেত্রেই এই ওষুধ ব্যবহৃত হতে পারে। অর্থাৎ, হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং যাঁরা তাঁদের সেবা করছেন, তাঁদের প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যেতে পারে এই মিশ্রণ। ইবোলা সংক্রমণ ঠেকাতেও বিশেষজ্ঞদের একটি দল এই ওষুধ ব্যবহার করেছিল যদিও এটি ভারতে পাওয়া যায় না। এমন কি এইচআইভি এর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল এই ওষুধ।