এই ব্যাকটেরিয়ার হামলায় মৃত্যুর মুখে ২৪ লক্ষ মানুষ!

সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধই বিশেষ এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

Updated By: Nov 9, 2018, 01:07 PM IST
এই ব্যাকটেরিয়ার হামলায় মৃত্যুর মুখে ২৪ লক্ষ মানুষ!
--প্রতিকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে বড়সড় মহামারীর সামনে দাঁড়িয়ে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ। দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো অপারেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (The Organisation for Economic Co-operation and Development) বা (ওইসিডি) এ সম্পর্কে ইতিমধ্যেই সতর্ক বার্তা জারি করেছে। ওইসিডি পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধই বিশেষ এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ওইসিডি জানায়, ২০১৫ সালে ইউরোপের ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী এই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে। এই প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মিলিয়ে প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে এই ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে। এর মধ্যে ১৩ লক্ষ ইউরোপে যার মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক। ওইসিডি-র এই প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, ইদানীং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলেই এই ব্যাকটেরিয়ার (সুপারবাগ) সংক্রমণ ঠেকাতে অধিকাংশ ওষুধই ব্যর্থ হচ্ছে। জানা গিয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল এবং রাশিয়ার ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের ৬০ শতাংশই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী।

ওইসিডি-র মুখোপাত্র মিশেল সেচিনি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ বা সংক্রমণ চার থেকে সাত গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু তাই নয়, ছোটখাটো কেটে-ছড়ে যাওয়া, ছোট অস্ত্রোপচার বা নিউমোনিয়ার মতো সাধারণ রোগও প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে! এই সুপারবাগের আক্রমণে শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যুর আশঙ্কা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।

ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, গুরুতর ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের জন্যই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, সর্দি-কাশি, সামান্য জ্বর এমনকি কানে ব্যাথা হলেও ইদানীং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ, এই সব সমস্যায় ওষুধ ছাড়াও সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ওইসিডি বা ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ হল, চিকিত্সকদের চটজলদি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। অসুস্থতার অন্তত তিন দিন অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। সুপারবাগ বা এই বিশেষ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো অপারেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট-এর পরামর্শ, অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। কারণ, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে সুপারবাগ বা এই বিশেষ ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

.