ভারতে মাদক নির্ভরশীলতা অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে! আশঙ্কা এইমস-এর রিপোর্টে
দেশের প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ নিয়মিত মদ্যপান করেন। দেশের মাদকাসক্তদের মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজার হল শিশু ও কিশোর!
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে গাঁজা নিয়ে এ পর্যন্ত কম গবেষণা হয়নি! তবুও গাঁজা উপকারী না ক্ষতিকর— তা নিয়ে এখনও বিতর্কের শেষ নেই। বছর খানেক আগে ফ্রান্সের ‘বায়োমেডিক্যাল ইনস্টিটিউট’র একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, গাঁজা থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ প্রস্তুত করা সম্ভব। তবে গাঁজা উপকারী না ক্ষতিকর— সে বিতর্কের বাইরে বেরিয়ে ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস’ (AIIMS)-এর একটি রিপোর্টে ভারতে গাঁজার প্রতি বাড়তে থাকা আসক্তি সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্ক করা হয়েছে।
এইমস-এর এই রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের প্রায় ৭২ লক্ষ মানুষ, গাঁজা, চরস, ভাঙ্গের নেশায় মত্ত। এর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মদ্যপায়ীদের সংখ্যা। রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের প্রায় ৫ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ নিয়মিত মদ্যপান করেন। এইমস-এর এই রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, নানা ধরনের মাদকের উপর নির্ভরশীল ১০ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ভারতীরা। চিন্তার বিষয় হল, ভারতে মাদকাসক্তদের মধ্যে প্রায় ৪ লক্ষ ৬০ হাজারই হল শিশু ও কিশোর!
আরও পড়ুন: হৃদরোগ থেকে ক্যান্সার, পিরিয়ডের পর বাড়ে একাধিক রোগের ঝুঁকি!
এইমস-এর এই রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, গোয়া, ত্রিপুরা, ছত্তিসগঢ় আর অরুণাচল প্রদেশে মদ্যপায়ীদের সংখ্যা বেশি আর এই সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশে মদ্যপায়ীদের সংখ্যা দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
এ দিকে দিল্লি, পাঞ্জাব, সিকিম, ছত্তিসগঢ় এবং উত্তরপ্রদেশে চরস, গাঁজা, ভাঙ্গের উপর মানুষের নির্ভরশীলতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইমস-এর চিকিত্সক ডঃ অতুল আম্বেদকর জানান, শুধু মদ, চরস, গাঁজা, ভাঙ্গের উপরেই নির্ভরশীলতা বাড়েনি, নিষিদ্ধ মাদক হেরোইনের উপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যাও ১.১৪ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সম্প্রতি অসমে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় বিষ মদের কারণে। সপ্তাহ খানেক আগে গ্রেটার নয়ডার একটি গুদাম থেকে প্রায় ২৫,০০০ লিটার বিষমদ বাজেয়াপ্ত করা হয়। সব মিলিয়ে মাদক দ্রব্যের উপর ভারতীয়দের নির্ভরশীলতা যে হারে বাড়ছে তা চিন্তা বাড়াচ্ছে ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস’-এর গবেষকদের। আর এইমস-এর এই রিপোর্ট চিন্তা বাড়াচ্ছে বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসনের।